পিটিয়ে খুনের অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে

দীপালি এদিন অভিযোগ করেন, ‘‘ডোমকল থানার পুলিশ সোমবার সন্ধ্যায় আমার স্বামীকে মারতে মারতে বাড়ি থেকে টেনে-হিঁচড়ে থানায় নিয়ে গিয়েছিল। সেদিন থানার লক-আপে তারা সারারাত আমার স্বামীর ওপর অত্যাচার চালিয়েছে। যার ফলে তাঁর কোমরে-বুকে যন্ত্রণা শুরু হয়েছিল। মঙ্গলবার বিকেলে খবর পাই, পুলিশি হেফাজতে স্বামীর মৃত্যু হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বহরমপুর শেষ আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০১:৩৪
Share:

—প্রতীকী ছবি।

পুলিশের হেফাজতে থাকাকালীন মঙ্গলবার মৃত্যু হয়েছিল এক অভিযুক্তের। সেই ঘটনায় এবার ডোমকল থানার পুলিশের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ তুললেন মৃতের স্ত্রী। মৃত গৌতম মণ্ডলের (৪৮) স্ত্রী দীপালি জেলার পুলিশ সুপারের (এসপি) কাছে এ নিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

Advertisement

দীপালি এদিন অভিযোগ করেন, ‘‘ডোমকল থানার পুলিশ সোমবার সন্ধ্যায় আমার স্বামীকে মারতে মারতে বাড়ি থেকে টেনে-হিঁচড়ে থানায় নিয়ে গিয়েছিল। সেদিন থানার লক-আপে তারা সারারাত আমার স্বামীর ওপর অত্যাচার চালিয়েছে। যার ফলে তাঁর কোমরে-বুকে যন্ত্রণা শুরু হয়েছিল। মঙ্গলবার বিকেলে খবর পাই, পুলিশি হেফাজতে স্বামীর মৃত্যু হয়েছে। আমার স্থির বিশ্বাস, পুলিশ ওকে খুন করেছে।’’ এসপি’র কাছে ঘটনার সঠিক তদন্তের পাশাপাশি অভিযুক্তদের শাস্তির দাবি করেছেন তিনি। এসপি মুকেশ কুমার পরে বলেন, ‘‘অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে ঘটনা তদন্ত শুরু হয়েছে। এ ছাড়া, মৃতের স্ত্রীরও অভিযোগ পেয়েছি। অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে দিয়ে ঘটনার তদন্ত করানো হচ্ছে।’’ এসপি জানান, তদন্তে যা উঠে আসবে, সেই অনুযায়ীই পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।

যদিও ডোমকল থানার পুলিশ দীপালির আনা যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তাদের দাবি, মারধরের অভিযোগ ঠিক নয়। ডোমকল মহকুমা হাসপাতাল থেকে গৌতমের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেই আদালতে পাঠানো হয়েছিল। আদালতেই হঠাৎ তাঁর মৃত্যু হয়। ফলে সে সময় তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ারও সুযোগ মেলেনি বলে দাবি পুলিশের।

Advertisement

প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার দুপুরে গৌতমকে বহরমপুরের সিজেএম আদালতে হাজির করাতে এনেছিল পুলিশ। ডোমকলের মাহিষ্যপাড়ার বাসিন্দা ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে বেআইনিভাবে মদের কারবার চালানোর অভিযোগ রয়েছে। সোমবার সন্ধ্যায় সেই অভিযোগে পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করেছিল। মঙ্গলবার তাঁকে সিজেএম আদালতে পাঠানো হয়েছিল বটে। তবে গুরুতর অসুস্থ দেখে সিজেএম আদালত ডোমকল থানার পুলিশের কাছ থেকে তাঁকে গ্রহণ করেনি। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই মৃত্যু হয় গৌতমের।

পুলিশের বক্তব্য, বেআইনিভাবে মদের কারবার চালাতেন গৌতম। তাঁর কাছ থেকে ৪৩ বোতল দেশি মদ উদ্ধার হয়েছিল। যদিও মৃতের স্ত্রী বুধবার দুপুরে বহরমপুরে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজের মর্গের সামনে বলেন, ‘‘আমার স্বামী বাড়িতে খাওয়ার জন্য দু’এক বোতল মদ এনে রেখেছিলেন। তবে উনি কখনও মদ বিক্রি করতেন না। সোমবার সন্ধ্যায় খেতে বসেছিলেন তিনি। সেই সময় পুলিশ বাড়িতে এসে ওঁকে নিয়ে যায়। আমার স্বামীর মৃত্যুর জন্য পুলিশই দায়ী। এসপি’র কাছে অভিযোগ জানিয়েছি। বিচার না পেলে মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হব।’’ এদিকে, বুধবার বহরমপুরে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে সুরতহাল হওয়ার পর তাঁর দেহের ময়নাতদন্ত করা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন