পরিচর্যা: ডোমকলে। নিজস্ব চিত্র
বাড়তি দু’পয়সা ঘরে তুলতে গিয়ে লোকসানের মুখ দেখতে হচ্ছে বারবার। কখনও ঝড়ে-বৃষ্টিতে, কখনও অজানা রোগে খেতেই নষ্ট হচ্ছে গম। গম খেত থেকে আর উঠোনে উঠছে না।
চাষিরা যাতে লোকসানের মুখে না পড়েন তার জন্য বিকল্প চাষের পরামর্শ দিচ্ছে কৃষি দফতর।
চাষিদের একাংশও বিকল্প চাষে ঝুঁকছেন। ডোমকল রানিনগর এলাকায় চাহিদা রয়েছে অশ্বগন্ধার। তাকেই আঁকড়ে বিকল্প চাষের দিকে পা পাড়াচ্ছেন তাঁরা।
নিজেদের উদ্যোগেই ডোমকল এলাকায় চাষ হচ্ছে অশ্বগন্ধা। এই গাছের ফল এবং শেকড় ওষুধ হিসেবে কাজে লাগে। স্থানীয় বাজারে ভাল চাহিদাও আছে সে সবের।
কৃষি দফতরের কর্তারাও খুশি চাষিদের বিকল্প চাষে আগ্রহ দেখে। তাঁরা জানান, চাষিরা সাধারণত বিকল্প চাষ করতে রাজি হন না। কিন্তু এ বছর তাঁরা উদ্যোগী হয়ে অশ্বগন্ধা চাষ করেছেন। ডোমকল মহকুমা এলাকায় এই বছরে প্রায় ৫০ বিঘা জমিতে ওই চাষ হয়েছে বলে দাবি কৃষি দফতরের।
রানিনগর ব্লকের উপ-কৃষি অধিকর্তা মিঠুন সাহা জানান, গম যে ভাবে বছর বছর মার খাচ্ছে তাতে তাঁরা চিন্তায় পড়েছেন। তাই তাঁরা বারবার চাষিদের বিকল্প চাষের পরামর্শ দেন। এ বছর ব্লকে প্রায় ২০ বিঘা জমিতে অশ্বগন্ধা চাষ হয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘চাষিদের এই উদ্যোগে আশার আলো দেখছি।’’
মেরেকেটে মাস পাঁচেক জমিতে থাকে অশ্বগন্ধা। পোকার আক্রমণও খুব কম। ফলে এই চাষে খুব বেশি ঝুঁকি নেই। প্রথমে বীজ কিনতে টাকা প্রয়োজন হয় বটে তবে পরে সেই গাছের বীজ থেকেও চাষ করা যায় ওই ফসলের। রানিনগরের জামালপুর গ্রামের চাষি সাধিন শেখ অশ্বগন্ধা চাষ করেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘এক বিঘা জমিতে অশ্বগন্ধা চাষ করে কম করেও লাখ টাকা ঘরে আসবে পাঁচ মাসে।’’ একই বক্তব্য এলাকার চাষি কিবরিয়া শেখের। তাঁর কথায়, ‘‘ অশ্বগন্ধার শেকড় এবং ফল দুটোই চড়া দামে বিক্রি হয়। আগে যাঁরা চাষ করছেন সকলেই লাভবান হবেন।’’
কৃষি দফতরের কর্তারা জানাচ্ছেন, গমের বিকল্প হিসেবে এটিকে তুলে ধরতে পারলে বড় লোকসানের হাত থেকে রক্ষে পাবে চাষিরা।