গয়েশপুর পুরসভায় কর্মী নিয়োগের উপর চার সপ্তাহের স্থগিতাদেশ জারি করল কলকাতা হাইকোর্ট।
পুরসভায় কর্মী নিয়োগে শাসক দলের অনুগামীদেরই ঠাঁই হয়েছে বলে স্বজনপোষণের অভিযোগ উঠছিল বেশ কিছু দিন ধরেই। হাইকোর্টে মামলা দায়ের হয়েছিল তার জেরেই। নিয়োগের প্যানেলে যাঁদের নাম রয়েছে, তাঁরা পুরকর্তৃপক্ষ বা শাসক দলের আত্মীয় বলে অভিযোগ। সোমবার সেই মামলার শুনানি ছিল বিচারপতি হরিশ টন্ডনের এজলাসে। নিয়োগের প্যানেলের উপর স্থগিতাদেশ জারি করে বিচারপতি টন্ডন পুরকর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন, নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে তিন সপ্তাহের মধ্যে আদালতে হলফনামা জমা দিতে হবে। হলফনামার জবাব দেওয়ার জন্য মামলাকারীদের এক সপ্তাহ সময় দেওয়া হয়েছে।
গয়েশপুর এলাকার বাসিন্দা শিবনাথ দাস, সঞ্জীব শিকদার, গোপাল পাল, দেবাশিস রায়-সহ কয়েক জন ওই মামলা দায়ের করেছেন। তাঁদের আইনজীবী এক্রামূল বারি আদালতে জানান, গত বছর ১৬ জুন পুরসভার নিজস্ব ওয়েবসাইটে কর্মী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছিল। স্থানীয় একটি সংবাদপত্রেও সে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। হেল্পার, মজদুর, হিসাবরক্ষক, সহকারী ক্যাশিয়ার, ক্লার্ক পদে কর্মী নিয়োগের পরীক্ষা হয় চলতি বছরের ৮ জানুয়ারি। গত মাসে নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হয়। মামলার আবেদনকারীরা জানতে পারেন, সব পদেই যাঁদের নাম প্যানেলে রয়েছে, তাঁরা পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান, কাউন্সিলরদের হয় ঘনিষ্ঠ, কিংবা আত্মীয়।
এক্রামূল জানান, নিয়োগে স্বজনপোষণকেই প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। আবেদনকারীরা জানিয়েছেন, তাঁরা শিক্ষিত বেকার। ওই পুরসভায় চাকরি পাওয়ার অধিকার তাঁদেরও রয়েছে। পুরকর্তৃপক্ষের আইনজীবী আদালতে দাবি করেন, কোনও প্রার্থী পুরকর্তৃপক্ষের আত্মীয় বা ঘনিষ্ঠ হলে তিনি চাকরি পাবেন না, এমন কোনও নিয়ম নেই। আবেদনকারীদের অভিযোগ সঠিক নয়।
দু’পক্ষের সওয়াল শোনার পরে বিচারপতি টন্ডন নিয়োগের প্যানেলের নথি দেখতে চান। তার পরে পুরকর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন, নিয়োগ নিয়ে হলফনামা পেশ করতে। মামলার পরবর্তী শুনানি হবে চার সপ্তাহ পরে।
পুরপ্রধান মরণ দে বলেন, ‘‘কোনও স্থানীয় সংবাদপত্র নয়, একটি ইংরেজি ও বাংলা দৈনিক এবং পুরসভার নিজস্ব ওয়েবসাইটে চাকরির বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছিল। যাদের চাকরি হয়েছে বলে অভিয়োগ হয়েছে, তাঁদের মধ্যে তিন জনের নাম প্যানেলেই নেই।’’ তাঁর দাবি, স্বচ্ছতা মেনেই নিয়োগ হয়েছে। আদালত যা নির্দেশ দেবে তাই মানা হবে।