ফের অবস্থানে জুনিয়র ডাক্তারেরা

বৃহস্পতিবারের সন্ধ্যার ঘটনার পর রাতেই মেডিক্যাল কলেজের সিনিয়র চিকিৎসকেরা জুনিয়র ডাক্তারদের নিয়ে বৈঠক করেন।

Advertisement

সামসুদ্দিন বিশ্বাস

বহরমপুর শেষ আপডেট: ১৫ জুন ২০১৯ ০২:৩৪
Share:

চিকিৎসা না পেয়ে সদ্যোজাতকে নিয়ে ফিরতে হল। শুক্রবার বহরমপুরে। ছবি: গৌতম প্রামাণিক

অভিযোগটা উঠেছিল বৃহস্পতিবার রাতেই। শুক্রবার দুপুরে এমএসভিপির অফিসের সামনে ফের অবস্থান বিক্ষোভে বসে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জুনিয়র ডাক্তারেরা জানালেন, বৃহস্পতিবার রাতে তাঁরা তৃণমূলের সাংসদ আবু তাহের খান ও তাঁর সঙ্গীদের হুমকি ও ভয়েই অবস্থান তুলে নিয়েছিলেন।

Advertisement

এ দিন জুনিয়র ডাক্তারদের পক্ষে তুহিন খান বলেন, ‘‘বৃহস্পতিবার রাতে সাংসদ দলবল নিয়ে এসেছিলেন। আমাদের নানা ভাবে হুমকি দেওয়া হয়। আমরা ভয়ে অবস্থান তুলে নিতে বাধ্য হই। আমরা যেখানে অবস্থান করছিলাম সেখানে বাইরের লোকজন ঢুকিয়ে দেওয়া থেকে প্রাণনাশ, এমনকি ধর্ষণের হুমকিও দেওয়া হয়। গোটা বিষয়টি আমরা এমএসভিপিকেও জানিয়েছি।’’

জুনিয়র ডাক্তার নিবেদিতা ভক্ত বলেন, ‘‘আমরা বেশিরভাগ ছেলেমেয়ে বাইরে থেকে এখানে পড়াশোনা করতে এসেছি। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ওরা অস্ত্র নিয়ে আমাদের হুমকি দেয়। ফলে সেখান থেকে আমরা ভয়ে হস্টেলে চলে আসি। কিন্তু সেখানেও আতঙ্ক কাটছিল না।’’

Advertisement

বৃহস্পতিবারের সন্ধ্যার ঘটনার পর রাতেই মেডিক্যাল কলেজের সিনিয়র চিকিৎসকেরা জুনিয়র ডাক্তারদের নিয়ে বৈঠক করেন। সেই বৈঠকে তাঁদের পাশে থাকার বার্তা দেন সিনিয়র চিকিৎসকেরা।

যদিও হাসপাতালের এমএসভিপি দেবদাস সাহা বলেন, ‘‘জুনিয়র ডাক্তাররা এই ধরনের অভিযোগ আমাকে জানাননি। নিরাপত্তার অভাব বোধ করেই সেখান থেকে তাঁরা অবস্থান তুলেছে বলে জানতে পেরেছি।’’

এ দিন দুপুরে দলের জেলা অফিসে সাংবাদিক বৈঠকে জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা সাংসদ আবু তাহের খান বলেন, ‘‘কর্মবিরতির জেরে রোগীরা হাসপাতালে চিকিৎসা পরিষেবা ঠিক মতো পাচ্ছেন না। ইতিমধ্যে বিনা চিকিৎসায় তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। তাই বিবেকের তাড়নায় জুনিয়র ডাক্তারদের কাছে গিয়ে হাতজোড় করে কর্মবিরতি তুলে নেওয়ার আর্জি জানিয়েছিলাম। তাঁরা আমাদের অনুরোধ মেনে আন্দোলন প্রত্যাহারও করে নেন।’’

আবু তাহেরের দাবি, ‘‘কোনও অশুভ শক্তির প্ররোচনায় আন্দোলনকারীরা আমাদের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন কথা বলছেন। ওঁরা আমার মেয়ের মতো, বোনের মতো, ভাইয়ের মতো। ওঁদের হুমকি দেব কেন? আমরা এখনও অনুরোধ করছি, আপনারা কাজে যোগ দিন।’’

বহরমপুরের সাংসদ অধীর চৌধুরী বলেন, ‘‘বৃহস্পতিবার শাসক দলের নেতারা গিয়ে জুনিয়র ডাক্তারদের যে ভাবে হুমকি দিয়েছেন তা বরদাস্ত করা যায় না।’’ শুক্রবার বিকেলে জেলা পরিষদের সভাধিপতি মোশারফ হোসেন মণ্ডল আন্দোলনকারীদের বলেন, ‘‘বৃহস্পতিবার হয়তো কোনও ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। আমরা আপনাদের সম্পূর্ণ নিরাপত্তা দেব। আপনারা ধ্বংসাত্মক আন্দোলন করবেন না।’’ সভাধিপতি সেখান থেকে বেরিয়ে যেতেই উল্লাসে ফেটে পড়েন জুনিয়র ডাক্তারেরা। তাঁরা ‘মুখ্যমন্ত্রী হায় হায়’ বলে স্লোগান দিতে থাকেন।

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন