মনোনয়ন দিতে যাব কার ভরসায়

গত ৯ এপ্রিল রঘুনাথগঞ্জ ২ ব্লক অফিসে ঢুকতে না পেরে সিপিএমের এক প্রার্থী স্বামীকে নিয়ে এসেছিলেন জঙ্গিপুরে মহকুমাশাসকের দফতরে। তাঁর স্বামীর ডান হাতের কব্জিতে উইকেটের বাড়ি পড়েছে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০১৮ ০১:২৪
Share:

প্রতীকী ছবি।

পঞ্চায়েত নির্বাচনে মনোনয়ন জমা দেওয়ার সুযোগ ফের আসছে। কিন্তু তাতেও কতটা লাভ হবে, তা নিয়েই বিরোধীরা সন্দিহান।

Advertisement

কেউ এমন মার খেয়েছেন যে ফের ব্লক অফিসমুখো হওয়ার সাহস নেই। কেউ আবার বলছেন, পুলিশ যদি আগের মতোই চোখ বুজে থাকে তো এ বারও প্রহসন ছাড়া কিছু হবে না। তবে নিরাপত্তা পেলে মনোনয়ন জমা দিতেও অনেকে বদ্ধপরিকর।

গত ৯ এপ্রিল রঘুনাথগঞ্জ ২ ব্লক অফিসে ঢুকতে না পেরে সিপিএমের এক প্রার্থী স্বামীকে নিয়ে এসেছিলেন জঙ্গিপুরে মহকুমাশাসকের দফতরে। তাঁর স্বামীর ডান হাতের কব্জিতে উইকেটের বাড়ি পড়েছে। চড় মারা হয়েছে প্রার্থীকে। সেই সঙ্গে হুমকি, ‘‘খুব ভোটে দাঁড়ানোর শখ হয়েছে না? শখ মিটিয়ে দেব চিরদিনের মতো! এর পর আবার কোন ভরসায় যাব?”

Advertisement

সিপিএমের মুর্শিদাবাদ জেলা সম্পাদক মৃগাঙ্ক ভট্টাচার্যের এক সময়ের খাসতালুক জঙ্গিপুরে দু’টি ব্লকে ত্রিস্তরে ৩১৫টি আসনের মধ্যে একটিতেও মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারেনি তাঁর দল। মৃগাঙ্কের আক্ষেপ, “রাস্তায় লাঠি নিয়ে উন্নয়ন দাঁড়িয়ে আছে পুলিশি পাহারায়। নির্বাচন কমিশন যৌথ সন্ত্রাস বন্ধ করতে না পারলে মনোনয়নের দিন বাড়ালেও কিছু হবে না।” বিজেপির জেলা সভাপতি সুজিত দাসের দাবি, “এই জেলায় পুলিশ ও শাসকের লাগামহীন সন্ত্রাসের ছবি দিয়ে আমরা রিপোর্ট করেছি নির্বাচন কমিশন ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের কাছে। পুলিশের পাশে খুনের আসামি, জঙ্গি ও এক সন্ত্রাসবাদীর আশ্রয়দাতা তথা গরু পাচারকারীর ছবিও রয়েছে। এরাই অস্ত্র নিয়ে মনোনয়নে বাধা দিয়েছে। তবু ফের মনোনয়ন জমা দিতে যাব।”

হরিহরপাড়ায় বামপ্রার্থীরা আগেই নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর কথা ঘোষণা করেছে। কংগ্রেসও এখন সেই লাইনেই এগোচ্ছে। হরিহরপাড়া ব্লকে গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৮১টি আসনের মধ্যে ৫৩টি, ৩০টি পঞ্চায়েত সমিতির মধ্যে ১১টি ও তিনটি জেলা পরিষদ আসনের মধ্যে দুটিতে মনোনয়ন জমা দিতে পেরেছে কংগ্রেস। কোনওটির ক্ষেত্রেই প্রার্থীদের হাত চিহ্ন দেওয়া হয়নি। চাপড়া থেকে রাতে কৃষ্ণনগরে মহকুমাশাসকের অফিসে আসার পথে তৃণমূলের লোকজনের হাতে ধরা পড়েন সিপিএমের তিন প্রার্থী। আরজাদ খাঁ ও মিঠুন দাসকে গাড়ি থেকে নামিয়ে পেটানো হয়। গাড়িতে বসে থাকা জয়ন্তী দাসের হাঁটুতে মারা হয় বাঁশের বাড়ি। আরজাদ অবশ্য বলেন, “সুযোগ যদি পাই, যেমন করেই হোক মনোনয়ন জমা দেব।”

কিছু দিন আগেই হরিহরপাড়ায় কংগ্রেস অফিস থেকে আগ্নেয়াস্ত্র ‘উদ্ধার’ করেছে পুলিশ। কিন্তু স্থানীয় কংগ্রেস নেতা-কর্মীদের দাবি, তাঁদের ময়দান থেকে সরাতে পুলিশ ‘চক্রান্ত’ করেছে। মনোনয়নের দিন বাড়ানো হলেও পরিস্থিতি পাল্টাবে বলে তাঁরা আশা করছেন না। জেলা পরিষদ সদস্য আব্দুল নৌমান বলেন, ‘‘জানি না, অবাধে ভোট কী করে হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন