নবদ্বীপে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বিজেপির বাবুল সুপ্রিয়। নিজস্ব চিত্র।
বাবলারিতে এত দিন ছিল ‘ভয়’, জনতার অনুরোধে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সে মাঠে ‘কহোনা প্যার হ্যায়’ ধরতেই বিজেপির এক জেলা নেতা উদ্বিগ্ন ভাবে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে বললেন ‘সাধনপাড়াটা আর হবে না রে!’
নবদ্বীপের একেবারে শেষ প্রান্তে বাবলারির পঞ্চায়েত অফিসের সামনে ছোট্ট মাঠে বেলা একটা থেকে তেত্রিশ ডিগ্রির কড়া রোদে অপেক্ষায় থাকা মানুষ তখন উল্লাসে ফেটে পড়ছেন। হাততালিতে চাপা পড়ে গেল উদ্বেগে। চটকদার ভাষণের পর জনতার অনুরোধের গান গেয়ে শেষ বেলার ভোট প্রচার জমিয়ে দিয়ে বাবুল সুপ্রিয় যখন বাবলারি ছাড়লেন ঘড়ির কাঁটায় তখন বিকেল চারটে পাঁচ।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী যখন নদিয়ার একপ্রান্তে গান গেয়ে ভোটারদের মন জয় করার চেষ্টা করছেন, শনিবারহ, শেষ প্রচারে তখন, জেলার অন্য প্রান্তে তাঁর দলের বিরুদ্ধেই সীমান্ত অঞ্চলে টাকা ছড়িয়ে ভোট করার অভিযোগ তুলে বাজার গরম করছেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। শেষ বিকেলে চাকদহের নির্বাচনী সভা থেকে বিজেপির বিরুদ্ধে টাকা দিয়ে ভোট কেনার অভিযোগ তোলেন তৃণমূল মহাসচিব। বৈদ্যুতিন মাধ্যমে বিজেপির প্রচারে একশিশুকে ব্যবহার করার বিরুদ্ধে কমিশনে যাবেন বলেও তোপ দাগলেন।
পঞ্চায়েত ভোটের শেষ লগ্নে নদিয়ার প্রচার যদি বিজেপি’র গায়ক-মন্ত্রীর সুরে ভাসে তো পড়শি জেলা মুর্শিদাবাদে ভোট প্রচারের শেষবেলা গমগম করে উঠল গুরুগম্ভীর ধামসা-মাদলের তালে। কোথাও আসর জমালেন আলকাপের দল তো কোথাও বাউল।
শনিবার শেষ বেলার প্রচারে ফরাক্কার কলাইডাঙায় আদিবাসী সমর্থকদের ধামসা-মাদল নিয়ে প্রচার সারেন সিপিএমের বাহাদুরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের জেলাপরিষদ প্রার্থী বেনজির পারভিন, পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থী হিমাংশুশেখর সাহা আর গ্রাম পঞ্চায়েত প্রার্থী তারামুনি মুর্মু। উৎসাহী সমর্থকদের ধামসা মাদলের সঙ্গে তারাকোলা, কলাইডাঙা, সামলাপুর সিয়া একাধিক গ্রামে বাড়ি বাড়ি প্রচারও করলেন তাঁরা। যা দেকে তৃণমূল বলছে, ‘মিছেই আপনারা সন্ত্রাসের কথা বলেন।
তুলনায় অনেক মৃদু শোনাল, সুতির সাদিকপুর, নুরপুর, রমাকান্তপুর এলাকায় স্থানীয় আলকাপ শিল্পীদের নিয়ে তৃণমূলের প্রচার। আবার আহিরণে তৃণমূলের প্রচারে অংশ নেয় বীরভুম থেকে আসা সাতজন বাউল শিল্পীর
একটি দল। গত দুসপ্তাহ ধরে তাঁরা গান গেয়ে ভোট প্রচার করছেন। উল্লেখ্য জঙ্গিপুর মহকুমার সাগরদিঘি, ফরাক্কা ও সুতির একটি ব্লকে নিরানব্বই শতাংশ আসনে নির্বাচন হচ্ছে।
আলো পড়ে আসছে, মাণিক্যহারে শেষ সভা করছেন অধীর চৌধুরী। সঙ্গে ঘরে ফেরা কংগ্রেস নেতা হুমায়ুন কবীর। অধীরের তোপের পাশাপাশি হুমায়ুন বলছেন, ‘‘মিলিয়ে নেবেন, এই সন্ত্রাসের জবাব মানুষই ফিরিয়ে দেবেন এ বার।’’
বাকিটা অপেক্ষা।