হাঁসখালিতে অভিযুক্ত বিরোধীরাই

হাঁসখালির রামনগর-বড়চুপরিয়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় কোনও দিনই তৃণমূল সে ভাবে শক্তিশালী ছিল না।  ২০১৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে এই গ্রাম পঞ্চায়েত দখল করেছিল সিপিএম। কিন্তু তাদের বেশির ভাগ সদস্য তৃণমূলে চলে যায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০১৮ ১৮:৫০
Share:

প্রতীকী ছবি।

এত দিন শুধু বিরোধীরাই সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলছিল শাসক দলের বিরুদ্ধে। এ বার হাঁসখালিতে তৃণমূলই সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলল। তৃণমূলের অভিযোগ, হাঁসখালিতে সিপিএম, বিজেপি ও কংগ্রেস মিলে একযোগে তাদের কর্মীদের উপরে অত্যাচার চালাচ্ছে। পুড়িয়ে দিচ্ছে খড়ের গাদা, কেটে দিচ্ছে কলাবাগান। অভিযোগ পেয়ে তদন্ত করছে পুলিশ।

Advertisement

হাঁসখালির রামনগর-বড়চুপরিয়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় কোনও দিনই তৃণমূল সে ভাবে শক্তিশালী ছিল না। ২০১৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে এই গ্রাম পঞ্চায়েত দখল করেছিল সিপিএম। কিন্তু তাদের বেশির ভাগ সদস্য তৃণমূলে চলে যায়। তার ধাক্কায় এ বার তারা পঞ্চায়েতের ১৫টির মধ্যে ৭টির বেশি আসনে প্রার্থী দিতে পারেনি। বিজেপি দিয়েছে ৫টিতে।

তৃণমূলের অভিযোগ, মঙ্গলবার রাতে ছোটচুপড়িয়া গ্রামে জামাল মণ্ডলের, পরের রাতে হাকিম মণ্ডলের খড়ের গাদায় আগুন ধরে দুই তৃণমূল কর্মীর খড়ের গাদায় আগুন দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার সকালে দেখা যায়, রামনগর পূর্বপাড়ায় বাবুর আলি মণ্ডলের ১২ কাঠা বাগানের কলা গাছ কাটা পড়েছে রাতারাতি। তৃণমূলের হাঁসখালি ব্লক সভাপতি তথা জেলা পরিষদ প্রার্থী কল্যাণ ঢালির অভিযোগ, “হার নিশ্চিত বুঝে বিজেপিকে সঙ্গে নিয়ে আমাদের কর্মীদের উপরে অত্যাচার শুরু করেছে সিপিএম।” সিপিএমের বগুলা এরিয়া কমিটির সম্পাদক মৃণাল বিশ্বাস দাবি করেন, “হাস্যকর অভিযোগ। ওদের সন্ত্রাসের কারণেই আমাদের প্রার্থীরা মনোনয়ন জমা দিতে পারেননি। যাঁরা পেরেছেন, তাঁরা বাড়িতে থাকতে পারছেন না। তার পরেও ওরা বলছে, আমরা সন্ত্রাস করছি!” তাঁর ব্যাখ্যা, “এটা ওদেরই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফল।” বিজেপির নদিয়া (দক্ষিণ) সাংগঠনিক জেলার সভাপতি জগন্নাথ সরকারও অভিযোগ উড়িয়ে তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দলকেই দায়ী করেছেন।

Advertisement

নাকাশিপাড়ার তৈবিচারায় দুই তৃণমূল কর্মীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে বিজেপির বিরুদ্ধে। অরুণ বিশ্বাস ও কিরণ বিশ্বাস রাতে প্রচার করে বাড়ি ফিরছিলেন। তাঁদের ধরে বাঁশ-পেটা করা হয়। মাথায় ও হাতে গুরুতর চোট পেয়েছেন তাঁরা। নাকাশিপাড়ার বিধায়ক, তৃণমূলের কল্লোল খাঁয়ের দাবি, “মানুষ সঙ্গে নেই বুঝতে পেরেই বিজেপি সন্ত্রাস শুরু করেছে।” বিজেপির নদিয়া (উত্তর) সাংগঠনিক জেলা সভাপতি মহাদেব সরকার অবশ্য বলেন, “এটা তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফল।”

এরই মধ্যে তৃণমূলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে অনশন শুরু করেছে সিপিএম। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা নাগাদ হাঁসখালির বগুলা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় মৃণাল বিশ্বাস-সহ এগারো জন অনির্দিষ্ট কালের জন্য অনশনে বসেন। জেলায় যে ক’টি এলাকায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে মনোনয়ন জমা দিতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে, হাঁসখালি তার অন্যতম। এখন মনোনয়ন প্রত্যাহারে তারা হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ। মৃণাল বলেন, “যত দিন না গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরছে, অনশন চলবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন