রথ নিয়ে তৎপর বিজেপি

প্রতিটি বুথ থেকে চাই অন্তত পাঁচ 

আপাতত মুষড়ে পড়া কর্মীদের চাঙ্গা করার জন্য এইটুকুই যথেষ্ট। আজ, শুক্রবার থেকে তাঁরা ফের সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপাবেন বলেও জেলা নেতারা জানিয়ে দিয়েছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০১৮ ০০:৩৯
Share:

কয়েক দিন ঝিমিয়ে থাকার পরে ফের বিজেপির পালে হাওয়া লেগেছে। জেলার বড়-ছোট নেতারা আড়মোড়া ভেঙে ছুটোছুটি শুরু করেছেন। ভোটের ছেঁকাতেও মলম লেগেছে।

Advertisement

সৌজন্যে, বিজেপির গণতন্ত্র বাঁচাও রথযাত্রায় আদালতের ছাড়পত্র। রাজ্য এই রায়ের বিরোধিতা করে ডিভিশন বেঞ্চে যাবে কি না, তারা এই রায়ই বহাল রাখবে নাকি নাকচ করে দেবে, সে সব তো পরের কথা। আপাতত মুষড়ে পড়া কর্মীদের চাঙ্গা করার জন্য এইটুকুই যথেষ্ট। আজ, শুক্রবার থেকে তাঁরা ফের সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপাবেন বলেও জেলা নেতারা জানিয়ে দিয়েছেন।

বিজেপির রাজ্য তথা জেলা নেতারা যদিও কোনও দিনই স্বীকার করেননি যে প্রশাসনের বাধায় কোচবিহার থেকে রথযাত্রা থমকে যাওয়ায় তাঁদের ক্ষতি হয়েছে। বরং ঘনিষ্ঠ আলাপে তাঁদের অনেকেই দাবি করেছেন, এই বিতর্ক চলতে থাকায় আখেরে দলের লাভই হবে। নিচুতলা যাতে ভেঙে না পড়ে তার জন্য রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ থেকে শুরু করে অন্য নেতারা বরাবরই বলেছেন, রথযাত্রা হচ্ছে ধরে নিয়েই যেন প্রস্তুতি চালু রাখা হয়।

Advertisement

কিন্তু একে রথযাত্রা থমকে যাওয়া, তার উপরে তিন রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির হোঁচটে যে কর্মীরা অনেকেই হতাশ হয়ে পড়েছিলেন, তা মানছেন অনেক নেতাই। সেখানে আদালতের এই রায় কিছুটা হলেও অক্সিজেন দেবে বলেই তাঁরা মনে করছেন। বিজেপি সূত্রের খবর, মণ্ডলে-মণ্ডলে কর্মিসভা ও পথসভা করা হবে। সেই সঙ্গে রাজ্য সভাপতির নির্দেশ মোতাবেক জেলার বাকি সব বুথ কমিটি তৈরি করে ফেলা হবে। দলের জেলাস্তরের এক নেতার কথায়, “আমাদের পরিষ্কার নির্দেশ দেওয়া হয়েছ, যাত্রায় যেন প্রতিটি বুথ থেকে অন্তত পাঁচ জন করে কার্যকর্তা উপস্থিত থাকেন। সেই মতো বুথ স্তরে আমরা সাংগঠনিক সক্রিয়তা নামিয়ে আনতে চাইছি। বুথে-বুথে বৈঠক করা হবে।” কিন্তু সমস্ত বুথে তো এখনও কমিটিই তৈরি হয়নি? জেলা নেতাদের আশ্বাস, “এই ক’দিনে সেটাই করে ফেলা হবে।”

ঘটনাচক্রে, সমস্ত জেলা সভাপতি, পর্যবেক্ষক ও লোকসভা কেন্দ্রভিত্তিক নেতাদের নিয়ে বৈঠকে করেছিলেন কেন্দ্রীয় নেতা তথা রাজ্যের পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়। সেখানে এই রথযাত্রা সফল করার জন্য সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ার নির্দেশ দেন তিনি। দ্রুত সাংগঠনিক প্রস্তুতি সেরে ফেলার কথাও বলেন।

বিজেপির নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি মহাদেব সরকার বলছেন, “যাতে প্রতিটি বুথ থেকে প্রচুর সংখ্যক কর্মী ও কার্যকর্তাদের যাত্রায় হাজির করতে পারি, আমরা সেই প্রস্তুতি নিচ্ছি।” বিজেপির জেলা নেতৃত্বের দাবি, আগামী জানুয়ারির ২৮-২৯ তারিখ নাগাদ গণতন্ত্র বাঁচাও রথ করিমপুর দিয়ে নদিয়ায় ঢুকতে পারে। সে ক্ষেত্রে কি অবস্থান নেবেন করিমপুরের তৃণমূল নেতৃত্ব? রথকে কি বাধা দেওয়া হবে?

করিমপুরের তৃণমূল বিধায়ক মহুয়া মৈত্র বলছেন, “ওদের অত গুরুত্ব দিতে রাজি নই। যখন হবে, তখন দেখা যাবে। অনেক পরের কথা। আগে দেখুন না কী হয়!” আদালতের নির্দেশের পরেও কি আইনশৃঙ্খলার প্রশ্নে রথযাত্রার অনুমোদন আটকে দিতে পারে জেলা প্রশাসন? জেলাশাসক সুমিত গুপ্ত শুধু বলেন, “বিষয়টি আদালতের। এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করব না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন