BJP MLA's Suspended

‘সুবক্তা’ বলেই নিশানায় তিনি, দাবি বঙ্কিমের

বিজেপি বিধায়কদের দাবি, সরস্বতী পুজোর সময়ে কিছু ঘটনা নিয়ে আলোচনার জন্য এ দিন স্পিকারের কাছে আবেদন জানানো হয়েছিল।

Advertisement

সুদেব দাস

শেষ আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৯:৩৯
Share:

বিজেপি বিধায়ক বঙ্কিম ঘোষ। —ফাইল চিত্র।

বাজেট অধিবেশন চলাকালীন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির দায়ে যে চার বিজেপি বিধায়ককে এক মাসের জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছে, তাঁদের অন্যতম চাকদহের বিধায়ক বঙ্কিম ঘোষ। যদিও তাঁর নিজের দাবি, বিধানসভায় বিরোধীদের কণ্ঠরোধ করতে-করতে বেছে-বেছে ‘সুবক্তা’দের সাসপেন্ড করা হয়েছে। তাই তিনিও নিশানা হয়েছেন।

Advertisement

বিজেপি বিধায়কদের দাবি, সরস্বতী পুজোর সময়ে কিছু ঘটনা নিয়ে আলোচনার জন্য এ দিন স্পিকারের কাছে আবেদন জানানো হয়েছিল। তা গ্রাহ্য না হওয়ায় ‘ওয়েল’-এ নেমে কাগজ ছিঁড়ে বিক্ষোভ দেখান কয়েক জন। এর পরেই রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, বিশ্বনাথ কারক, বঙ্কিম ঘোষ ও অগ্নিমিত্রা পালকে এক মাসের জন্য সাসপেন্ড করেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়।

সেই প্রসঙ্গে পরে বঙ্কিম বলেন, "পুলিশমন্ত্রী হিসেবে সোমবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিধানসভায় সময় দেওয়ার কথা। কিন্তু তিনি তা দেন না। যাঁরা বিরোধী দলের সুবক্তা রয়েছেন এবং প্রশ্ন তুলতে পারেন যা চলছে তা নিয়ে, তাঁদের প্রত্যেককেই সাসপেন্ড করা হয়েছে। যেমন শুভেন্দু অধিকারীর মঙ্গলবার বক্তব্য রাখার কথা ছিল। অর্থাৎ ফাঁকা মাঠে গোল দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। একই ভাবে আমাকেও করা হয়েছে। গোঘাটের বিধায়ক বিশ্বনাথ কারক বিধানসভায় ছিলেন না, তাঁকেও সাসপেন্ড করা হয়েছে। কারণ তিনিও সুবক্তা।"

Advertisement

এ দিন বিধানসভার অধিবেশনে দক্ষিণ নদিয়ার ছয় বিজেপি বিধায়ক অর্থাৎ রানাঘাট উত্তর-পশ্চিম, রানাঘাট উত্তর-পূর্ব, চাকদহ, কৃষ্ণগঞ্জ, কল্যাণী ও হরিণঘাটার বিধায়কেরা হাজির ছিলেন। যদিও হট্টগোলের সময় বিধানসভায় ছিলেন না রানাঘাট উত্তর-পূর্বের বিধায়ক অসীম বিশ্বাস। সন্ধ্যায় কল্যাণীর বিধায়ক অম্বিকা রায় বলেন, "আলোচনার জন্যই বিধানসভা। সরকারের ভুল ধরিয়ে দেওয়াই বিরোধীদের কাজ। আমরা সকলে ‘ওয়েল’-এ নামিনি ঠিকই, প্রতিবাদ সবাই করেছি।” তাঁর মতে, “কণ্ঠরোধ করার জন্যই বিরোধী দলনেতা-সহ চার জনকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এটা খুবই খারাপ ইঙ্গিত।"

রানাঘাট উত্তর-পশ্চিমের বিধায়ক তথা নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সভাপতি পার্থসারথী চট্টোপাধ্যায় দাবি করেন, "বঙ্কিমদা ওয়েলে নামেননি। কাগজও ছেঁড়েননি। আমরা সবাই আসনে উঠে দাঁড়িয়েছিলাম। শুধু ত্র শুভেন্দু অধিকারী ওয়েলে নামেন। মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রীর বক্তৃতা রয়েছে বলেই এমনটা করা হয়েছে।” তাঁর মতে, “সম্পূর্ণ অনৈতিক, অগণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে এই সাসপেন্ড করা হয়েছে। এটা স্পিকারের নিজস্ব মতামত নয়। তাঁকে যা বলে দেওয়া হয়েছে, তিনি তা-ই করেছেন। "

কৃষ্ণগঞ্জের বিধায়ক বিজেপির আশীষকুমার বিশ্বাসের মতে, "দ্বিচারিতা চলছে। উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে আমাদের সঙ্গে প্রতিহিংসাপরায়ণ আচরণ করা হচ্ছে।” তাঁর দাবি, “বিশ্বনাথ কারক ওই সময়ে বিধানসভায় ছিলেন না। আবার অগ্নিমিত্রা পাল আমার সামনের আসনেই দাঁড়িয়ে ছিলেন। অথচ তাঁদেরও বহিষ্কার করা হয়েছে। বলতে বাধ্য হচ্ছি, স্পিকারের মেরুদণ্ড নিয়ে সংশয় আছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিরোধী শিবিরে থাকাকালীন কী করেছিলেন, তা এখন তৃণমূল ভুলে গিয়েছে?" এ দিনের বিধানসভার অধিবেশনে হাজির ছিলেন শান্তিপুরের তৃণমূল বিধায়ক ব্রজকিশোর গোস্বামীও। তাঁর বক্তব্য, "বিধানসভার ভিতরে আচরণবিধি কেমন হবে, তার সুনির্দিষ্ট আইন রয়েছে। স্পিকার সেই আইন মেনেই চাকদহের বিধায়ক-সহ চার জনকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাই মন্তব্য করা ঠিক হবে না।" আর রানাঘাট সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভাপতি দেবাশীষ গঙ্গোপাধ্যায়ের কটাক্ষ, "সাংবিধানিক নিয়ম অনুযায়ী শপথবাক্য পাঠ করে যাঁরা বিধানসভায় যান, তাঁরা যদি সাংবিধানিক ও গণতান্ত্রিক নিয়মকানুন না মানেন, সে ক্ষেত্রে যা ব্যবস্থা হওয়া উচিত তা-ই হয়েছে।"

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement