—ফাইল চিত্র।
মতুয়া ভোট বড় বালাই। বিশেষ করে রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রে মতুয়াদের সংখ্যাধিক্যই দুই দলের নেতাদের বাধ্য করছে বারবার মাঠে নামতে। তৃণমূল নেতা পার্থ চট্টোপাধ্যায় ঘুরে যাওয়ার পরেই রবিবার রানাঘাটের হবিবপুরে উদ্বাস্তু, শরণার্থী, তফসিলি জাতি-জনজাতির সম্মেলন ও ধর্মসভায় হাজির হলেন মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি, বিজেপি-ঘেঁষা শান্তনু ঠাকুর। সঙ্গে ছিলেন প্রাক্তন সাংসদ মুকুল রায়ও।
কিন্তু মতুয়াদের নিজেদের দিকে টানার এই লড়াইয়ে একজোট নয় বিজেপি। দক্ষিণ জেলা সাংগঠনিক সভাপতি জগন্নাথ সরকারের বিরোধী বলে পরিচিত কিছু নেতা এই ধরনের সভা-সমিতির মূল কাণ্ডারী। এঁদের অন্যতম দিব্যেন্দু ভৌমিক, অশোক বিশাস, অসিত প্রামাণিকেরা। আবার ধানতলার অশোক বিশ্বাস নিজের উদ্যোগে কয়েক গাড়ি লোক আনেন। এর আগে এঁদেরই তরফে দত্তপুলিয়া, চাকদহ, বাদকুল্লা-সহ কয়েক জায়গায় সভা হয়েছে। কিন্তু জগন্নাথ যাননি।
রানাঘাট লোকসভা এলাকায় প্রায় ৪৫ শতাংশের মতো মতুয়া ভোট আছে। এই ভোটই নির্ণায়ক শক্তি হয়ে উঠতে পারে বলে প্রায় নিশ্চিত দুই দলের নেতারা। গত কয়েক দিনের মধ্যে রানাঘাট লোকসভা এলাকায় বেশ কিছু মতুয়া সম্মেলন হয়েছে। আরও হবে। কিন্তু জগন্নাথকে ওই সব সভায় দেখা যাচ্ছে না কেন? তাঁকে কি তবে ডাকাই হচ্ছে না?
জগন্নাথের বক্তব্য, “দলের যে কেউ সামাজিক সংগঠনের সদস্য হতে পারেন। সেখানে তাদের অনুষ্ঠানে আমাকে না-ই ডাকতে পারে। দলের অনুষ্ঠান হলে বলা যেত। কিন্তু এটা তো দলের অনুষ্ঠান নয়।”
কিন্তু তবুও এই সমস্ত সম্মেলনে একটি নির্দিষ্ট শিবিরের অনুপস্থিতি যে চোখে লাগছে, তা মানছেন বিজেপির অনেকেই। বিজেপির ঘরোয়া বিবাদ এর আগেও সামনে এসেছে। দলের বৈঠকে হাতাহাতির ঘটনাও ঘটেছে। জগন্নাথ অবশ্য বলছেন, “যে বা যারাই সভার ব্যবস্থা করুন, এতে আমাদেরই মতুয়া ভোটব্যাঙ্ক তৈরি হচ্ছে। তাঁরা তো আসলে দলের কাজই করছেন।”
জগন্নাথ-বিরোধী বলে পরিচিত যে সমস্ত নেতারা এই সমস্ত মতুয়া-সম্মেলনে অগ্রণী ভূমিকা নিচ্ছেন, তাঁরাও একই সুর গাইছেন। রানাঘাট ২ ব্লক বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি অশোক বিশ্বাস বলেন, “এটা মতুয়া সঙ্ঘের অনুষ্ঠান। যাঁরা এই সংগঠনে আছেন, তাঁরাই থাকছেন।” বেছে বেছে এক শিবিরের লোকেদের দেখা যাচ্ছে কেন? অশোক বলেন, ‘‘আমরা সবাইকেই আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।”
অশোক যেটুকু উহ্য রাখলেন, তা কিন্তু শোনা যাচ্ছে দলের নিচুতলার কানাঘুষোয় কান পাতলেই।
সহ প্রতিবেদন: সৌমিত্র সিকদার