পদ ছিনিয়ে রোষে নেতা

তাঁর প্রতি ক্ষোভে ফুটছেন দলের নেতাকর্মীদের একাংশ। সম্প্রতি নবদ্বীপে রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের কাছে অভিযোগ জানানো হয়েছে। শুক্রবার মুকুল রায়ের কাছেও ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন তাঁরা

Advertisement

সুস্মিত হালদার

কৃষ্ণনগর  শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০১৮ ০৭:০০
Share:

প্রতীকী ছবি।

তাঁর প্রতি ক্ষোভে ফুটছেন দলের নেতাকর্মীদের একাংশ। সম্প্রতি নবদ্বীপে রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের কাছে অভিযোগ জানানো হয়েছে। শুক্রবার মুকুল রায়ের কাছেও ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন তাঁরা। দু’দিন আগে তেহট্টের সভাতেও গোলমাল হয়েছে। কিন্তু কেন বিজেপির উত্তর জেলা সাংগঠনিক সভাপতি মহাদেব সরকারের বিরুদ্ধে এই ক্ষোভ?

Advertisement

এবং তার চেয়েও বড় প্রশ্ন, যে কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রকে বিজেপি তাদের অন্যতম লক্ষ্য হিসাবে ধরে রেখেছে, সেখানে প্রধান সেনাপতির বিরুদ্ধে কর্মীদের একাংশের অনাস্থা সম্ভাবনায় জল ঢেলে দেবে না তো? তাই ক্ষোভ সামাল দিতে আসরে নামতে হয়েছে রাজ্য নেতাদের।

গত ১ জানুয়ারি প্রাক্তন সভাপতি আশু পালকে সরিয়ে তাঁর জায়গায় বসানো হয়েছিল মহাদেব সরকারকে। দক্ষ সংগঠক বলে পরিচিত মহাদেব প্রথমে জেলা ও মণ্ডল কমিটিতে বড় কোনও রদবদল করেননি। পঞ্চায়েত নির্বাচনে তাঁর এলাকায় অপেক্ষাকৃত ভাল ফল করে বিজেপি। কিন্তু এর পরেই জেলা কমিটি থেকে শুরু করে মণ্ডল কমিটিতে নিজের অনুগামীদের বসিয়ে সংগঠনের সর্বস্তরে নিজের নিয়ন্ত্রণ আনার চেষ্টা করতে থাকেন মহাদেব। জেলা কমিটিতে একাধিক পরিবর্তনের সঙ্গেই ৩১টি মণ্ডলের মধ্যে ১১টিতে তিনি সভাপতি বদল করে দেন। তাঁর বিরুদ্ধ গোষ্ঠী এই সব রদবদল মানতে পারছে না। নানা জায়গায় ক্ষোভ দেখাচ্ছে।

Advertisement

দলীয় সূত্রের খবর, নবদ্বীপে যে নবীন চক্রবর্তী রাজ্য সভাপতির কাছে মহাদেবের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন তিনি ছিলেন আশু পালের সময়ে যুব মোর্চার সাধারণ সম্পাদক। তাঁকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। আবার তেহট্টে যাঁর নেতত্বে বিক্ষোভ হয়েছে, সেই অর্জুন ঘোষকে বিজেপির জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক থেকে সরিয়ে সহ-সভাপতি করা হয়েছে। তাঁর ঘনিষ্ঠ দুই মণ্ডল সভাপতিকে সরিয়ে মহাদেব নিজের অনুগামীদের বসিয়েছেন। সেটাও এক পক্ষের রোষের কারণ হয়েছে।

সেই সঙ্গে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে ২১ নম্বর জেলা পরিষদ আসনে মণ্ডল কমিটির সভাপতিকেও। তাঁর জায়গায় এসেছেন মহাদেবের নিজের লোক। অথচ ওই মণ্ডলের অধীন চারটি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে তিনটিই দখল করেছে বিজেপি। এ দিন ওই এলাকার কর্মীরা কৃষ্ণনগরে মুকুল রায়ের কাছে এসে নিজেদের ক্ষোভ উগরে দিয়ে নতুন মণ্ডল সভাপতিকে সরানোর দাবি জানান।

মহাদেবের দাবি, “রাজ্য নেতৃত্বের অনুমোদন নিয়েই কয়েক জনকে নানা কারণে পদ থেকে সরানো হয়েছে। তাঁরা হতাশ হয়ে দলের ক্ষতি করতে চাইছেন।” বিক্ষুব্ধদের বেশির ভাগই প্রাক্তন উত্তর জেলা সভাপতির ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত বা তাঁর সময়ে পদে ছিলেন। আশু পাল অবশ্য বলছেন, “আমার নাম ভাঙিয়ে কে কী করছে, জানি না। দলের ক্ষতি হতে পারে, এমন কিছুকে আমি প্রশ্রয় দেব না। আপাতত লোকসভা নির্বাচনই আমাদের পাখির চোখ।”

বিজেপি সূত্রের খবর, যত ক্ষোভই থাক না কেন, আপাতত মহাদেবকে তাঁর পদ থেকে সরানোর সম্ভবনা নেই। অন্তত লোকসভা ভোট পর্যন্ত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন