মারে আহত বিজেপি কর্মী, ধৃত দু’দলের তিন

প্রহৃত প্রসেনজিৎও ওই এলাকায় নানা সমাজবিরোধী কাজকর্মের সঙ্গে যুক্ত বলে অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি সে বিজেপি নেতা অরূপ দাসের ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ১৫ জুন ২০১৯ ০২:৫৮
Share:

মার খেয়ে জখম এক বিজেপি কর্মী। কৃষ্ণনগরের নাজিরাপাড়ায়। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য

আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলা করতে আসার অভিযোগে মারধর করা হল বিজেপি কর্মীদের। বৃহস্পতিবার রাতে কৃষ্ণনগরের নাজিরাপাড়ায় ঘটনাটি ঘটে। প্রসেনজিৎ দাস নামে বিজেপির ওই কর্মী শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে ভর্তি। বিশ্বনাথ বিশ্বাস নামে আর এক বিজেপি সমর্থককেও পেটানো হয়েছে। বাড়িতে ভাঙচুর চালিয়ে স্ত্রী-ছেলেমেয়েকেও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। পুলিশ তাঁদেরও হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছে। পুলিশ তৃণমূলের এক এবং বিজেপির দুই কর্মীকে গ্রেফতার করেছে।

Advertisement

কৃষ্ণনগরের নাজিরাপাড়া ও কালীনগর এলাকায় অনেক দিন ধরেই উত্তেজনা রয়েছে। তৃণমূলের মদতে পুষ্ট কিছু সমাজবিরোধী এলাকার দখল নিয়ে নিজেদের মধ্যে গন্ডগোল করার পাশাপাশি সাধারণ মানুষের উপরেও নানা অত্যাচার চালিয়ে আসছে বলে অভিযোগ। ধৃতদের অন্যতম ভোলা জোয়ারদার এদেরই এক জন। দীর্ঘ দিন ধরে সে প্রাক্তন জেলা সভাপতির অনুগত বলে পরিচিত।

প্রহৃত প্রসেনজিৎও ওই এলাকায় নানা সমাজবিরোধী কাজকর্মের সঙ্গে যুক্ত বলে অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি সে বিজেপি নেতা অরূপ দাসের ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠে। স্থানীয় তৃণমূল কর্মীদের একাংশের অভিযোগ, প্রসেনজিৎ আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ভোলাকে খুন করতে আসছিল। এলাকার মহিলারা তাকে ধরে ফেলে। তার পরেই শুরু হয় গণপিটুনি। খবর পেয়ে ছুটে আসেন প্রসেনজিতের মা লক্ষ্মী দাস। তাঁকেও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। পরে পুলিশ এসে দু’জনকেই উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।

Advertisement

স্থানীয় আর একটি সূত্রের পাল্টা অভিযোগ, বিজেপির দিকে ঘেঁষায় ভোলা লোকজন নিয়ে প্রসেনজিৎকে ধরে লাঠি-রড দিয়ে মারধর করে। রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় পরে থাকার সময়ে ভোলার লোকজন তার কোমরে আগ্নেয়াস্ত্র গুঁজে দেয়। হাসপাতালে শুয়ে শুক্রবার প্রসোনজিৎও দাবি করে, “আমি বিজেপি করায় ভোলাই ওর বাড়ির সামনে আমায় মারধর করে কোমরে আগ্নেয়াস্ত্র গুঁজে দেয়।” তবে ভোলার দাবি, “বিজেপিতে যোগ দিয়ে প্রসেনজিৎ এলাকায় নানা ভাবে অত্যাচার শুরু করায় মানুষ খেপেই ছিল। রাতে ও যখন আমায় মারতে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে আসছিল মহিলারা তাকে ধরে পেটায়। আমরা কোনও ভাবেই এই ঘটনায় জড়িত নই।”

তবে শুধু প্রসেনজিৎ নয়, বিশ্বনাথ বিশ্বাসেরও অভিযোগ, “ভোলা লোকজন নিয়ে রাস্তায় আমাকে ধরে লাঠি-রড দিয়ে বেধড়ক মারধর করে।” প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, ভোলাদের হাত থেকে কোনও রকমে নিজেকে ছাড়িয়ে ছুটতে-ছুটতে তিনি বাড়ি যান। ভোলার লোকজন পিছু ধাওয়া করে ঘরে ঢুকে ভাঙচুর চালায়। পরিবারের অন্যদের লাঠি ও রড দিয়ে মারধর করে। মাথা ফাটে যায় বিশ্বনাথের স্ত্রীর। বিজেপির নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলা কমিটির সম্পাদক অরূপ দাসের অভিযোগ, “বিজেপি করার অপরাধে আমাদের লোকেদের আক্রমণ করেছে তৃণমূলের গুন্ডা-বাহিনী।” তৃণমূলের প্রাক্তন জেলা সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্ত পাল্টা বলেন, “ভোলা তৃণমূল করে বলে বিজেপির সমাজবিরোধীরা তাকে খুন করতে এসেছিল। আক্রমণ হলে প্রতিরোধও হবে। আত্মরক্ষার অধিকার সকলেরই আছে।”

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন