প্রতীকী ছবি।
একের পর এক তৃণমূল কর্মী খুন হওয়া নিয়ে রাজ্য পুলিশের ডিজি-কে মুখ্যমন্ত্রীর ধমকের কয়েক ঘন্টার মধ্যে ফের রক্তাক্ত হল নদিয়া।
আবারও আক্রান্ত হয়েছেন এক তৃণমূল কর্মীই। শান্তিপুরে জোলপাড়া এলাকায় রাতের অন্ধকারে অভিজিৎ বিশ্বাস নামে ওই যুবককে বাড়ি থেকে ডেকে এনে এলোপাথাড়ি কোপানো হয়। শনিবার রাত পর্যন্ত অভিযোগ না হলেও পুলিশ এক জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এলাকার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে হামলা চালিয়েছে দুষ্কৃতীরা। ঠেকাতে গিয়ে গুরুতর জখম হয়েছেন অভিজিতের দাদা অমিত বিশ্বাস ও খুড়তুতো ভাই, শান্তিপুর কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র সুকান্ত বিশ্বাস। তিন জনকে শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। রাতে আশঙ্কাজনক অবস্থায় অভিজিৎকে কলকাতায় এনআরএস-এ নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান, রাজনৈতিক কারণে নয়, বরং মদের ঠেকের গণ্ডগোলের জেরেই হামলা হয়ে থাকতে পারে। ওই সন্ধ্যায় অভিজিতের সঙ্গে স্থানীয় এক যুবকের বচসা হয়েছিল। পরে সে-ই লোকজন নিয়ে এসে চড়াও হয়। পুলিশের মতো বেলঘরিয়া-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান তরুণ বিশ্বাসও বলেন, “দু’পক্ষ তৃণমূল করে, কিন্তু এই গণ্ডগোলের সঙ্গে রাজনীতির সম্পর্ক নেই।”
শুক্রবারই জেলায় এসে পুলিশকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, “কয়েক দিনের মধ্যে জেলায় পাঁচ-ছ’টা খুন হয়েছে। বগুলায় খুন হল আমাদের এক জন। সেই দিনই ছুটিতে গেলেন পুলিশ সুপার। সিকিউরিটি গার্ডও ছুটিতে ছিল। রানাঘাটে একটা ভাল ছেলে খুন হল। তেহট্ট থেকে হরিণঘাটা, একের পর এক খুন হচ্ছে। কোনও জেলায় এমন নেই। কেন এমন হচ্ছে?”
বগুলার যাঁর খুন হওয়ার কথা তুলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী, সেই হাঁসখালি ব্লক সভাপতি দুলাল বিশ্বাসের খুনের কিনারা এখনও হয়নি। ঘটনার পরেই পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তবে সিআইডি তদন্তভার হাতে নিয়ে বিশেষ এগোতে পারেনি। সে জন্য মমতার ধমকও খান রাজ্য পুলিশের ডিজি সুরজিৎ করপুরকায়স্থ। মুখ্যমন্ত্রী আক্ষেপ করেন, “দু’শো টাকায় খুন করে চলে যাচ্ছে। একতরফা তৃণমূলের লোক খুন হচ্ছে। পুলিশ জানে না, এটা হয় না।” সিআইডি কী করছে, তাদের তদন্ত করতে কত সময় লাগবে তা-ও তিনি জানতে চেয়েছিলেন।
ঘটনা হল, কাউকে ধরতে না পেরে সিআইডি এখন নানা সম্ভাবনার সুতো খুঁজে বেড়াচ্ছে। এক বার তারা বলছে, খুনিরা বাংলাদেশে। আবার এক্সপ্রেসে চেপে শিয়ালদহে চলে যাওয়ার কথাও অনুমানের তালিকায় রয়েছে। সবটাই ভাসা-ভাসা।
অর্থাৎ, মুখ্যমন্ত্রী যা-ই বলুন, সকলেই চলছে যে যার মতো!