স্ট্যান্ডে গোটা পাঁচেক টোটো দাঁড়িয়েছিল। কিন্তু বর্ষার সন্ধ্যায় ১২ কিলোমিটার দূরে জিগরি যেতে রাজি হচ্ছিলেন না চালকেরা।
শেষতক ২০০ টাকা ভাড়ার শর্তে টোটো নিয়ে রওনা দেন নাকির শেখ (৪২)। মঙ্গলবার রাতে ফরাক্কার লালমাটি চাকপাড়া থেকে পুলিশ তাঁর ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার করে। সেখান থেকে আরও এক কিলোমিটার দূরে জিগরির মোড়ে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে বুধবার সকালে মিলেছে তার টোটোটিও।
প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানিয়েছে, ভাড়া নিয়ে বচসার জেরে এই খুন। আই সি উদয়শঙ্কর ঘোষ জানান, ওই ঘটনায় তিন জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। খুন ও প্রমাণ লোপাটের চেষ্টার মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করা হয়েছে।
দীর্ঘ দিন ধরেই ফরাক্কা এলাকায় ভ্যানরিকশা চালাতেন ফরাক্কার বিন্দুগ্রামের বাসিন্দা নাকির। মাস ছয়েক আগে ভ্যান ছেড়ে টোটো কেনেন তিনি। তাঁর স্ত্রী চেনতারা বিবি বলেন, “প্রায়ই রাত করে বাড়ি ফিরত বলে এ দিন কিছু মনে হয়নি। কিন্তু ভাড়ার জন্য লোকটাকে ওরা মেরেই ফেলল!’’
পুলিশ জানিয়েছে, নাকির ফরাক্কা স্টেশনের স্ট্যান্ডে আরও কয়েক জনের সঙ্গে টোটো নিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। আর এক টোটো চালক বিশ্বজিৎ মণ্ডল জানান, সন্ধ্যে সাড়ে ৭টা নাগাদ বছর পঁচিশের এক যুবক টোটো ভাড়া করতে আসেন জিগরি যাবেন বলে। কিন্তু বর্ষার রাতে কেউই অত দূরে ভাড়ায় যেতে রাজি হচ্ছিলেন না। হঠাৎ নাকির জানান, ২০০ টাকা ভাড়া দিলে তিনি যেতে পারবেন। তার পরেই নাকির বেরিয়ে পড়েন।
পুলিশ জানতে পেরেছে, ওই যুবক কিছু দূর যাওয়ার পরে ফোন করে সে আরও কয়েক জনকে ডাকে। টোটোর যাত্রীরা সকলেই মদ্যপ অবস্থায় ছিল। ভাড়া নিয়ে বচসা শুরু হয়। তখনই তারা ছুরি দিয়ে নাকিরকে এলোপাথাড়ি কোপায়। পরে লালমাটি চাকপাড়ায় দেহ ফেলে আসে দুষ্কৃতীরা। টোটো নিয়েও পালানোর চেষ্টা করে। কিন্তু রাতেই এলাকার কেউ ফোন করে পুলিশকে ঘটনার কথা জানিয়ে দেয়। রাতেই পুলিশ ঘটনাস্থলে যেতেই টোটো জাতীয় সড়কের পাশে ফেলে রেখে পালায় দুষ্কৃতীরা।