নেত্রীর গাড়ি তাক করে গুলি-বোমা

এই ঘটনায় করিমপুরের উপ-নির্বাচনের আগে জেলায় বিজেপি-র গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব সামনে আসায় অস্বস্তিতে পড়েছে দল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

রানাঘাট শেষ আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০১৯ ০১:১০
Share:

—প্রতীকী ছবি

সভা করতে যাওয়ার সময় আক্রান্ত হলেন স্থানীয় বিজেপি নেত্রী বৈশালী দাস দত্ত। তাঁর বাড়ি ধানতলা থানার হিজুলিতে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রানাঘাট থানার আনুলিয়া ঘোষ কলোনিতে তাঁর গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি এবং বোমা ছোড়া হয়েছে বলে অভিযোগ। বোমার অভিঘাতে তাঁর গাড়ির কাচ ভেঙে যায়। সেই কাচ এসে লাগে বৈশালীর গায়ে। তিনি আপাতত রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি।

Advertisement

এই ঘটনায় করিমপুরের উপ-নির্বাচনের আগে জেলায় বিজেপি-র গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব সামনে আসায় অস্বস্তিতে পড়েছে দল। কারণ, বৈশালী নিজে এই ঘটনার জন্য সরাসরি স্থানীয় বিজেপি নেতা প্রদীপ মণ্ডলকে দায়ী করেছেন।

বৈশালী দাস দত্ত জেলায় জগন্নাথ সরকারের লোক এবং প্রদীপ মণ্ডল মানবেন্দ্র নাথ রায়ের লোক হিসেবে পরিচিত। রানাঘাট দক্ষিণ জেলায় কে দলের শ্রমিক সংগঠনের সভাপতি তা নিয়ে বেশ কিছু দিন ধরেই তাঁদের মধ্যে গোলমাল চরমে। দু’জনেই নিজেকে সভাপতি বলে দাবি করেন।

Advertisement

এ দিন হাসপাতালের শয্যা থেকেই বৈশালী অভিযোগ করেন, “আমাদের দলেরই প্রদীপ মণ্ডল ওই কাণ্ড ঘটিয়েছেন। আমি আমাদের দলের শ্রমিক সংগঠনের রানাঘাট দক্ষিণ জেলার সভাপতি। আমার কাছে সেই কাগজ রয়েছে। কিন্তু তিনি এখন আমার জায়গায় নেতা হতে চাইছেন। শিমুরালির সভা পণ্ড করতে প্রদীপ মণ্ডলের লোকজন চেষ্টা চালাচ্ছিল বলে জানতে পেরেছি। তার পরেও আমি সেই সভায় যেতে চেয়েছিলাম, এটাই আমার অপরাধ। আমাকে কোনও ভাবে থামাতে না-পেরে পৃথিবী থেকেই সরিয়ে দিতে চেয়েছিলেন। একটু সুস্থ হয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাব।”

অভিযোগ অস্বীকার করে প্রদীপ মণ্ডলের বক্তব্য, “কয়েক দিন আগে আমাকে রানাঘাট দক্ষিণ জেলার দলের শ্রমিক সংগঠনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এখনও নতুন কমিটি গঠন করে উঠতে পারিনি। আমার বিরুদ্ধে উনি ঠিক বলছেন জানি না তবে আমার কোথাও সেই অর্থে কোনও লোকজন নেই। কারা আক্রমণ করেছে জানি না। তাদের সঙ্গে আমার কোনও সম্পর্ক নেই। উনি কী করবেন, সেটা তাঁর বিষয়।”

বৈশালী নাকি প্রদীপ, কে দলের শ্রমিক সংগঠনের রানাঘাট দক্ষিণের সভাপতি তা স্পষ্ট করে বলতে পারছেন না দলের জেলা নেতারাও। তাতে দলের অন্দরে ফাটলের জল্পনা আরও তীব্র হয়েছে।

নদিয়া দক্ষিণ জেলা বিজেপি সভাপতি মানবেন্দ্র রায় বলেন, “বৈশালীদেবীর আক্রান্ত হওয়ার ঘটনার কথা আমি কিছু জানি না। অভিযোগ পেলে দেখব। ওঁরা দু’জনে আলাদা ভাবে এসে আমাকে জানিয়েছিলেন যে, ওঁরা শ্রমিক সংগঠনের রানাঘাট দক্ষিণ জেলা সভাপতি। কে আসল সভাপতি তা শ্রমিক সংগঠনের রাজ্য সভাপতির কাছে জানতে পারা যাবে। এখানে দলের অন্দরে কোন্দলের কোনও বিষয় নেই।” রানাঘাটের সাংসদ জগন্নাথ সরকারের বক্তব্য, ‘‘এটা মানবেন্দ্রই ভাল বলতে পারবেন।’’

কৃষ্ণনগরে এ দিন এক সাংবাদিক সম্মেলনে এসে বিজেপি নেতা মুকুল রায় এই ঘটনার ব্যাপারে মন্তব্য করেন, ‘‘আমি মনে করি না যে, রানাঘাটে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারণে এমন হয়েছে। আপনাদের কাছে যদি তেমন অভিযোগ এসে থাকে আপনারা তদন্ত করুন।’’

বৈশালী অভিযোগ করেছেন, তিনি শিমুরালিতে সভা করতে যাচ্ছিলেন। পথে গাড়ি থামিয়ে যখন চা খাচ্ছেন তখন তাঁর গাড়ি লক্ষ্য করে প্রথমে গুলি ও তার পর বোমা

ছোড়া হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন