হাঁসখালি

শিবিরে বসে মাংস চাখলেন দুর্গতেরা

চিড়ে-গুড়, খিচুড়ি তো আছেই। ত্রাণ শিবিরে বসে মুরগির মাংসেরও স্বাদ নিলেন হাঁসখালির বগুলা এলাকার বাসিন্দারা। গোটা ডিমের ঝোল খেয়ে খুশি ওই ব্লকেরই ভাইনা এলাকার বাসিন্দারাও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বগুলা শেষ আপডেট: ১০ অগস্ট ২০১৫ ০০:৪৩
Share:

চিড়ে-গুড়, খিচুড়ি তো আছেই। ত্রাণ শিবিরে বসে মুরগির মাংসেরও স্বাদ নিলেন হাঁসখালির বগুলা এলাকার বাসিন্দারা। গোটা ডিমের ঝোল খেয়ে খুশি ওই ব্লকেরই ভাইনা এলাকার বাসিন্দারাও।

Advertisement

গত সোমবার থেকে বগুলা ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের হরিতলা হাইস্কুল ও নিউ হরিণডাঙা প্রাথমিক স্কুলে আশ্রয় নিয়েছেন প্রায় সাড়ে তিনশো মানুষ। প্রতিদিন দু’বেলা সেখানে তৃণমূল পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েতের তরফে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে ত্রাণের চাল-সহ প্রয়োজনীয় নানা জিনিস। শিবিরের মানুষেরা পালা করে নিজেরাই রাঁধছেন তা। কোনও দিন ভাতের সঙ্গে ডাল-সোয়াবিনের তরকারি তো কোনও দিন ডাল সঙ্গে ডিমের ঝোল। বুধবার তাঁদের জন্য আয়োজন করা হয়েছিল মুরগির মাংস আর ভাত। সঙ্গে যাঁরা মাংস খান না তাঁদের জন্য ছিল মাছের ব্যবস্থা।

সাম্প্রতিক টানা বৃষ্টি ও বাঁধের ছাড়া জলে নদিয়ার ১৭টি ব্লক কমবেশি জলমগ্ন হয়েছে। কোথাও বৃষ্টির জমা জল তো কোথাও বাঁধ উপচে পড়া নদীর জল। ঘরবাড়ি ছেড়ে হাজার হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন জেলার বিভিন্ন ত্রাণ শিবিরে। পর্যাপ্ত ত্রাণ না পাওয়ার অভিযোগ তুলে বানভাসী মানুষেরা বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভও দেখিয়েছেন। কোথাও সেই ক্ষোভের সামনে পড়েছেন প্রশাসনের আধিকারিকেরা, তো কোথাও স্থানীয় বিধায়ক। ত্রাণের জন্য শান্তিপুর, নবদ্বীপ বা কৃষ্ণনগর ২ ব্লকের বহু মানুষ যখন ক্ষোভে ফুঁসছেন সেই সময় পঞ্চায়েতের এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন অনেকেই।

Advertisement

কিন্তু, সরকারি ত্রাণ বলতে তো শুধু চাল। তা হলে এত মানুষের এলাহি খাওয়ার খরচ আসছে কোথা থেকে?

ওই পঞ্চায়েতের প্রধান তৃণমূলের দুলাল বিশ্বাস জানালেন, প্রত্যেকটি পঞ্চায়েতের নিজস্ব তহবিল থাকে। সেই তহবিল থেকে দুর্গত মানুষদের খাওয়ানো হচ্ছে। অন্য এলাকায় মানুষ যখন শুধু খিচুড়ি বা ডাল ভাত খেয়ে কিংবা অনাহারে আছে বলে অভিযোগ তুলছেন তখন মাছ-মাংস কেন? দুলালবাবু তৃণমূলের হাঁসখালি ব্লক সভাপতিও। তিনি বলেন, ‘‘আসলে শিবিরে আশ্রয় নেওয়া মানুষেরা গরীব। জমা জলে সেই দুর্ভোগ কয়েক গুণ বেড়েছে। একটা বা দু’টো দিন একটু ভাল খাবারের ব্যবস্থা করলে নিশ্চয়ই কারও কিছু বলার থাকবে না!’’

শুধু হরিতলা নয়, ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে ভাইনাতেও। শ’পাঁচেক আদিবাসী মানুষ এখানে আশ্রয় নিয়েছেন। এখানে এখনও পর্যন্ত মাংসের দেখা না মিললেও খাদ্য তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে ডাল, সোয়াবিন, ডিমের মতো পদ। অথচ জেলারই আর এক ব্লকে কৃষ্ণনগর ২ ব্লকের দলের সভাপতি শিবশঙ্কর দত্তের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে তিনি নাকি পঞ্চায়েতে মাধ্যমে নয়, দলের মাধ্যমে ত্রাণ বিলি করতে হবে বলে প্রশাসনের উপরে চাপ সৃষ্টি করেছিলেন। সেই দাবিতে ব্লক অফিসে ভাঙচুরের অভিযোগও রয়েছে।

সেটাই যে একমাত্র মুখ নয় সেটা বগুলার পাশাপাশি বুঝিয়ে দিয়েছে শান্তিপুর কলেজও। কলেজের ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নেওয়া প্রায় চারশো জনকে একটু হলেও অন্য রকমের খাবারে স্বাদ দিয়েছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সদস্যেরা। এ দিন সংগঠনের সদস্যেরা চাঁদা তুলে ভাতের সঙ্গে মুড়িঘণ্ট, ডাল, ভাজা, ডিমের তরকারি আর আনারসের চাটনি খাইয়েছে। টিএমসিপি-র শান্তিপুর শহর সভাপতি মনোজ সরকারের কথায়, ‘‘দিনের পর দিন খিচুরি খেতে কার ভাললাগে বলুন?’’ চাঁদা তুলে ফের এক দিন এমনই আয়োজন করা হবে বলে জানিয়েছেন মনোজ।

তবে এ সবের পিছনে অনেকেই শাসক দলের ভোট-রাজনীতির গন্ধ পাচ্ছেন। তাঁদের যুক্তি, পঞ্চায়েতের টাকা খরচ করে আসলে ভবিষ্যতের জন্য ভোট কিনে রাখছে শাসকদল। আপনারা কী মনে করেন? সদুত্তর এড়িয়ে বগুলা হরিতলার ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নেওয়া লিপিকা বিশ্বাস, হরিবালাদেবীর রসিকরা, ‘‘মাংসটা কিন্তু বেড়ে রান্না হয়েছিল। সকলে এমনটা করলে ক্ষতি কি!’’

জয়ী জাগরণী। নদিয়ার তেহট্টের ভাঁটুপাড়া ইয়ংস্টার ক্লাবের পরিচালনায় একদিনের ফুটবল প্রতিযোগিতা হয়ে গেল রবিবার। এ দিনের ওই প্রতিযোগিতায় মোট আটটি দল যোগ দিয়েছিল। খেলার ফাইনালে নফরচন্দ্রপুর জাগরণী সঙ্ঘ গুরুদাস সেবা সঙ্ঘকে ৩-১ গোলে হারিয়ে জয়ী হয়। জয়ী
দলকে নগদ দু’হাজার এক টাকা ও ট্রফি আর রানার্স দলকে দেড় হাজার এক টাকা নগদ ও রানার্স ট্রফি দেওয়া হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন