সাজিবুল শেখ। নিজস্ব চিত্র
বন্ধুর জন্মদিনের অনুষ্ঠানে গিয়ে নিখোঁজ হয়ে যায় হরিহরপাড়ার সাজিবুল শেখ (১৮)। তিন দিন পরে পরিত্যক্ত কুয়ো থেকে তার ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার হয়। সাজিবুলের মায়ের অভিযোগ, তাঁর ছেলে পড়াশোনায় ভাল ছিল বলে তার বন্ধুরা পরিকল্পনা করে তাকে খুন করেছে। গোটা বিষয়টি জানিয়ে থানায় লিখিত অভিযোগও দায়ের করেন তিনি।
হরিহরপাড়ার ভবানিপুর গ্রামের সাজিবুল ঝাড়খণ্ডের দেওঘরের একটি বেসরকারি ইংরেজি স্কুলে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়া ছিল। গত শনিবার এক সহপাঠীর জন্মদিনের অনুষ্ঠানে গিয়েছিল সে। তার পরে তার খোঁজ মেলেনি। বিষয়টি জানতে পেরে ওই পরিবারের লোকজন ঝাড়খণ্ডে গিয়ে সোমবার দেওঘর টাউন থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন।
মঙ্গলবার সকালে দেওঘরের হিরনি এলাকার একটি পরিত্যক্ত কুয়ো থেকে তার দেহ উদ্ধার হয়। সাজিবুলের মা ইসমেতারা বিবি বলছেন, ‘‘ছেলে পড়াশোনায় ভাল ছিল। দেওঘরে থেকে পড়াশোনা করত। কিন্তু চক্রান্ত করে বন্ধুরা তাকে খুন করেছে। দেওঘরের পুলিশকে সব জানিয়েছি। পুলিশ তদন্ত করলেই খুনের প্রকৃত কারণ জানা যাবে।’’
ঘটনার রাতে ঠিক কী ঘটেছিল?
তার মা ইসমেতারা বিবি জানান, সাজিবুল গত ১১ বছর ধরে দেওঘরে পড়াশোনা করছে। সেখানে বেসরকারি একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়ত। পড়াশোনায় সে খুব ভাল ছিল। গত শনিবার সাজিবুলের এক বন্ধু তার জন্মদিনের অনুষ্ঠানে নিমন্ত্রণ করে। ওই সন্ধ্যায় সাজিবুলের এক বন্ধু সাজিদকে সঙ্গে নিয়ে শিবমের কাছে যাচ্ছিল। রাস্তায় ফোনে কথা হয় শিবমের সঙ্গে। সে বলে সাজিবুল একা আসবে। তোর একা নিমন্ত্রণ। সেই মতো সে একা যায়। তারপর রাত থেকে তার খোঁজ নেই। তাকে সাজিদ ফোন করলে বলে সে ১০ মিনিটের মধ্যে আসবে। কিন্তু আসেনি। পরের দিন সকালে সাজিবুলের রুমমেট সনু নামে একটি ছেলে তার মাকে ফোন করে। বলে ‘‘আন্টি গত রাতে সাজিবুল আমাদের ঘরে আসেনি।’’
তার পরে তিনি দেওঘর গিয়ে খোঁজাখুঁজি করেন। কিন্তু কোথাও না পেয়ে সোমবার দেওঘর পুলিশকে লিখিত ভাবে সব জানান। মঙ্গলবার পুলিশ খবর পাঠায়, দেওঘরের হিরনি এলাকায় একটা পরিত্যক্ত কুয়ো থেকে সাজিবুলের মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। তার মুখে প্রচুর জখমের দাগ। ছেলের পোশাক ছাড়া চেনাৱ উপায় নেই। সঙ্গে পায়ে রড, লাঠি দিয়ে পেটানোর দাগ। বন্ধুরা মিলে তাকে খুন করেছে। পুলিশ তদন্ত করছে।
ইসমেতারা বিবি বলেন, ‘‘ছেলের যখন তিন বছর তখন ওর বাবা আমাদের ছেড়ে চলে যায়। আমি একা ওকে মানুষ করেছি। এ সব কী হয়ে গেল, বলুন তো!’’