দেহ নিয়ে অপেক্ষা: খাগড়া শ্মশানে। ছবি: সঞ্জীব প্রামাণিক
মরেও যেন শান্তি নেই! দাহ করতে আসা ক্ষুব্ধ লোকজন বলছেন, ‘‘বেঁচে থেকেও সুখ নেই। আবার মরণের পরেও শান্তি নেই। আর থাকবেই বা কী করে! খাগড়া শ্মশানের হালটা দেখেছেন?’’
জেলা সদর বহরমপুরে দু’টো শ্মশান। একটা গোরাবাজারে, অন্যটি খাগড়া ঘাটে। তার মধ্যে খাগড়া শ্মশান প্রায়ই বন্ধ থাকে নানা কারণে। কখনও বৈদ্যুতিক চুল্লির যন্ত্রাংশ খারাপ হয়ে যায়। কখনও বিদ্যুৎ পরিষেবা ব্যাহত হয়। আর এই পুরো ধকলটা সইতে হয় দাহ করতে আসা লোকজনকে। গত শুক্রবার রাত থেকে পরিষেবা বন্ধ খাগড়া শ্মশানে। রবিবার দুপুর পর্যন্ত আশ্বাসই সার, পরিষেবা ফেরেনি।
শ্মশানের এই হালের জন্য শুক্রবার রাত থেকে সমস্যায় পড়েছেন বহু মানুষ। বহরমপুর লাগোয়া কান্তনগর, সৈয়দাবাদ, কাশিমবাজার, উত্তরপাড়া, কান্দি, ও নবগ্রাম এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, ‘‘খাগড়া শ্মশানের চুল্লি প্রায়ই খারাপ থাকে। ফলে বাধ্য হয়ে কাঠের চুল্লি বা অন্য শ্মশানে দাহ করতে হয়।’’ রবিবার সকাল থেকে এই শ্মশানে সৎকার করতে এসে ফিরে যায় বেশ কয়েকটি দল। সেই কারণে এ দিন গোরাবাজার শ্মশানেও ছিল দীর্ঘ লাইন।
এ দিন খাগড়া শ্মশানে সকাল থেকে দেহ নিয়ে অপেক্ষা করছিলেন বহরমপুর কান্তনগরের বাসিন্দারা। তাঁদের এক জন উত্তম মাঝি। তিনি বলছেন, ‘‘সেই সকাল থেকে বসে আছি। দুপুর গড়িয়ে গেল। এখনও চুল্লি ঠিক হল না।’’
শনিবার রাতে কান্দি থেকে এসেছিলেন সুমন দাস। তাঁর জেঠিমা মারা গিয়েছেন। প্রথমে তাঁরা খাগড়া এসেছিলেন। সেখান থেকে ফিরে যেতে হয় চার কিলোমিটার দূরে গোরাবাজারে। সুমন বলছেন, ‘‘৩৬ কিলোমিটার পথ উজিয়ে এসে এই হয়রানি কার ভাল লাগে, বলুন তো! প্রায়ই খাগড়া ঘাটের চুল্লি খারাপ থাকে।’’
খাগড়া শ্মশানঘাটের দায়িত্বে থাকা পুরকর্মী প্রবীরকুমার হালদার বলেন, ‘‘শুক্রবার রাত থেকে বিদ্যুতের চুল্লির পরিষেবা বন্ধ। চুল্লির গেট বিকল হয়ে পড়েছিল। পুরসভাকে জানানোর পরে কর্মী কাজ করছে। প্রথমে মেশিন ঠান্ডা করতে সময় লেগেছে। তার পরে কাজ শুরু হয়েছে। রবিবার সকালে টানা তিন ঘণ্টা বিদ্যুৎ ছিল না। আর সেই কারণেই চুল্লি ঠিক করতে সময় লেগে গেল!’’