প্রতীকী ছবি
জেলা থেকে নতুন করে যে দু’জনের লালারসের নমুনা পরীক্ষার জন্য কলকাতায় পাঠানো হয়েছিল, তাঁদের রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। তবে বুধবার কল্যাণী জওহরলাল নেহরু হাসপাতালে ভর্তি এক সদ্য প্রসূতির লালারস করনো পরীক্ষার জন্য কলকাতায় পাঠানো হয়েছে।
কৃষ্ণনগরের উপকণ্ঠে পালপাড়া মোড়ের কাছে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে বেশ কয়েক বছর আগে তৈরি হয়েছিল বেসরকারি গ্লোকাল হাসপাতাল। তিন তলা ভবনে প্রায় তিনশো রোগীর চিকিৎসা পরিকাঠামো ছিল। কিন্তু বিভিন্ন জটিলতায় হাসপাতালটি দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় সেটাই কোভিড হাসপাতাল হিসাবে ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেয় জেলা প্রশাসন।
এমনিতে পরিকাঠামো সেখানে তৈরিই ছিল। সামান্য কিছু সংস্কার করতে হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে প্রথম দু’টি ফ্লোর ব্যবহার করা হচ্ছে। শক্তিনগর হাসপাতাল থেকে দিনে চার জন চিকিৎসক, দু’জন নার্স, চার জন চতুর্থ শ্রেণির কর্মী ও ছ’জন করে সাফাই কর্মী এই হাসপাতালার দায়িত্বে থাকবেন। চিকিৎসকদের টিমে থাকবেন এক জন মেডিসিন, এক জন শিশু বিশেষজ্ঞ, এক জন অ্যানাস্থেসিস্ট ও এক জন সিসিইউ বিশেষজ্ঞ। চিকিৎসকদের একটি দল গোটা সপ্তাহ হাসপাতাল সামলাবে। সেই সপ্তাহে দলের সদস্যেরা বাড়ি যাবেন না। থাকবেন গ্লোকাল হাসপাতালের পাশে একটি তিনতারা হোটেলে। পরের সপ্তাহে অন্য একটি দল দায়িত্ব নেবে। জেলায় চিকিৎসকদের একটি টিম তৈরি করে তাঁদের করোনা-আক্রান্তদের চিকিৎসার বিশেষ প্রশিক্ষণও দেওয়া হচ্ছে।
ওই হাসপাতালে নিজস্ব সিসিইউ ইউনিট আছে। সেখানে সাতটি ভেন্টিলেটর আছে। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, সাধারণত যাঁরা করোনা-আক্রান্ত হন তাঁদের তিন-চার শতাংশের অবস্থার অবনতি হয় এবং ভেন্টিলেটর প্রয়োজন হয়। ওই হাসপাতালে জরুরি প্রয়োজনে ব্যবহারের জন্য দু’টি আলাদা অপারেশন থিয়েটার তৈরি রাখা হয়েছে। স্বাস্থ্যকর্তাদের কথায়, এমনও হতে পারে যে, কোনও প্রসূতি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। জরুরি ভিত্তিতে সিজার করা প্রয়োজন। সে ক্ষেত্রে কোভিড হাসপাতালেই তাঁর অস্ত্রোপচার হবে। আবার করোনা আক্রান্ত কোনও ব্যক্তি গুরুতর চোট বা আঘাত পেলে তাঁর অস্ত্রোপচার করার দরকার হতে পারে। তখন শক্তিনগর জেলা হাসপাতালের সার্জেনরা গ্লোকালেই অস্ত্রোপচার করবেন।
কল্যাণী-ব্যারাকপুর এক্সপ্রেসওয়ের পাশে এন এস আর কার্নিভাল হাসপাতালে পরিকাঠামো তৈরির কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। সেখানেও তিনটি তলা আছে। তার মধ্যে প্রাথমিক ভাবে দু’টি তলা ব্যবহার করা হবে। ১০টি ভেন্টিলেটর চাওয়া হয়েছে স্বাস্থ্য দফতরের কাছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত একটাও পাওয়া যায়নি। জেএনএম হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দু’টি ও জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের তরফে দু’টি ভেন্টিলেটরের ব্যবস্থা করা সম্ভব হয়েছে। কর্তারা জানিয়েছেন, কোভিড হাসপাতালে এসি মেশিন ব্যবহার করা যাবে না। ফলে সমস্ত এসি খুলে ফেলা হয়েছে। বসানো হচ্ছে প্রায় ৯৫টির মতো একজস্ট ফ্যান। এই হাসপাতালের জন্য বুধবার পর্যন্ত চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্য চিকিৎসা কর্মীদের কোনও দল তৈরি হয়নি। তবে স্বাস্থ্যকর্তারা জানিয়েছেন, গ্লোকালের মতো মেডিক্যাল টিম তৈরি করে পরিষেবা দেওয়া হবে।