লকডাউনের দিন পুলিশের তৎপরতা। সাইকেলের চাকার হাওয়া খুলে দেওয়া হচ্ছে।(বাঁ দিকে) নিয়ে যাওয়া হচ্ছে চায়ের দোকানের বেঞ্চ।(ডান দিকে)। নিজস্ব চিত্র
মধ্যরাত থেকে টানা একুশ দিন গোটা দেশ লকডাউন হয়ে যাচ্ছে শুনে প্রথমে চমকে উঠেছিলেন অনেকেই। সকালে রাজ্যের ঘোষণা মতো লকডাউন ছিল। তার মধ্যেই চায়ের দোকান থেকে পাড়ার মাচায় চলছে খোশ মেজাজে আড্ডা। এখানেই শেষ নয়, রীতিমতো ভিন্ রাজ্য থেকে ফিরে পান চিবোতে চিবোতে সেই আড্ডায় শরিক হচ্ছেন একাধিক শ্রমিক। ডোমকল, হরিহরপাড়া, সুতির গ্রামাঞ্চলের এই ছবিটা দেখা গিয়েছে মঙ্গলবারও। হরিহরপাড়ার বাজারেও এদিন সকালে অধিকাংশ দোকান খুলে বসেন দোকানদারেরা। আনাজের বাজার, মাছের বাজার থেকে অন্যান্য দোকানের ভিড় ছিল আর পাঁচটা দিনের মতোই। খানিক পরে অবশ্য পুলিশ খবর পেয়ে মাঠে নামে। বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে চায়ের দোকান। আটক করে নিয়ে যাওয়া হয় দোকানের মালিককেও। আড্ডা দেওয়ায় যুবকদেরও আটক করেছে পুলিশ। আর এর পর থেকেই কিছুটা হলেও লাগাম পরে চলাফেরায়।
প্রশাসনের নির্দেশিকা উপেক্ষা করেই এ দিন নওদার চোঁয়াবাজারে বসে সাপ্তাহিক হাট। আর হাটেও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতে ভিড় জমান ক্রেতারা। হরিহরপাড়া রুকুনপুর, স্বরূপপুরের মতো মফস্সলের বাজারগুলিতেও ছিল সাধারণ মানুষের জটলা। মঙ্গলবার সকাল থেকে লকডাউন সফল করতে বিভিন্ন জায়গায় লাঠি ছুটতে হয় পুলিশ কর্মী এবং প্রশাসনের কর্তাদের। সাধারণ মানুষকে সচেতন করার পাশাপাশি, মৃদু লাঠিচার্জও করতে হয় পুলিশকে।
সকাল থেকেই সুনসান ছিল বহরমপুরের রাস্তাঘাট। কিন্তু খাগড়া থেকে হাতিনগরের বিভিন্ন এলাকায় মোড়ে মোড়ে জমায়েতের অভিযোগ উঠেছিল। সেই খবর পেয়েই সকাল থেকে বহরমপুরের ইন্দ্রপ্রস্থ , রাধারঘাট, বানজেটিয়া, হাতিনগর, জীবননগর, মাদাপুর, বাবুলবোনা সহ বিভিন্ন এলাকায় পুলিশ অভিযান চালায়। পুলিশ সূত্রে খবর, এ দিন জমায়েত করার অভিযোগে প্রায় ৩০ জনকে আটক করা হয়। পরে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়। বহরমপুরের মাতৃসদনের সামনে চায়ের দোকানে মালিককে আটক করে পুলিশ। হাতিনগর এলাকায় একটি সয়াবিনের কারখানায় পুলিশ অভিযান চালায়। পরে কারখানাটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। মাদাপুর এলাকায় রাস্তার ধারে সেলুন খুলেছিলেন এক নাপিত। পুলিশ সেই নাপিতকেও আটক করে নিয়ে যায়। বহরমপুরের বাবুলবোনা ও পঞ্চাননতলা এলাকায় জমায়েত সরাতে পুলিশ মৃদু লাঠিচার্জ করলে জমায়েতকারীরা পালিয়ে যায়। জীবনগরের একটি মাঠে বসে কিছু যুবক তাস খেলছিলেন। পুলিশ সেখানে গিয়ে মৃদু লাঠিচার্জ করে। পালিয়ে যাওয়ার সময় দুজন যুবক হাইড্রান্টে পড়ে যান। পুলিশ সুপার অজিত সিংহ যাদব বলেন, ‘‘লাগাতার পুলিশি টহল চলেছে।’’