শক্তিনগরে আইসোলেশন ওয়ার্ড
Oxygen

সিলিন্ডার সঙ্কট, মরণাপন্ন রোগী

বেশির ভাগ ব্লক বা গ্রামীণ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আবার দাবি করেছেন, রোগীকে বাড়িতে ফেলে রেখে তার পর শেষ মুহুর্তে নিয়ে আসা হচ্ছে।

Advertisement

সুস্মিত হালদার 

শেষ আপডেট: ০৮ মে ২০২১ ০৬:৫৬
Share:

প্রাণদায়ী: লাগানো হচ্ছে অক্সিজেন সিলিন্ডার। শুক্রবার শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে। ছবি: প্রণব দেবনাথ।

আইসোলেশন ওয়ার্ডে ক্রমশ বেড়েই চলেছে অক্সিজেন সঙ্কট। কারণ, সিলিন্ডারের অভাব। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃত্যু। বিশেষ করে শক্তিনগর জেলা হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে পরিস্থিতি ক্রমশ ভয়াবহ আকার নিতে শুরু করেছে বলে অভিযোগ।

Advertisement

এক দিকে জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শ্বাসকষ্টে ধুঁকতে থাকা রোগীদের শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে রেফার করা হচ্ছে, অন্য দিকে সেখানে অক্সিজেন সিলিন্ডারের সরবরাহ বাড়ানো হচ্ছে না। এই রোগীদের অধিকাংশেরই করোনা রিপোর্ট থাকছে না। রিপোর্ট না-আসা পর্যন্ত তাঁদের কোভিড বা অন্য সাধারণ ওয়ার্ডে স্থানান্তরিত করা যাচ্ছে না। এ ভাবেই প্রতিদিন শক্তিনগর জেলা হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে উপচে পড়ছে রোগী। তাঁদের অনেকের ঠাঁই হচ্ছে ওয়ার্ডের মেঝেতে বা বারান্দায়। অক্সিজেন ছাড়াই তাঁদের অনেকে পড়ে থাকছেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, আইসোলেশন ওয়ার্ডে শয্যা সংখ্যা ৫৫টি। তার মধ্যে মহিলাদের জন্য আছে ১৫টি। বৃহস্পতিবার রাতে সেখানে ভর্তি ছিলেন ৪৮ জন। আর পুরুষ বিভাগে শয্যা সংখ্যা ৪০টি। সেখানে বৃহস্পতিবার রাতে ভর্তি ছিলেন ৭৫ জন। জেলা হাসপাতালের এক কর্তার কথায়, “এমন অনেক রোগী রেফার করা হচ্ছে যাঁদের ব্লক বা মহকুমা স্তরে চিকিৎসা করা সম্ভব। কিন্তু সেখানকার চিকিৎসকেরা ঝুঁকি না নিয়ে জেলা হাসপাতালে পাঠিয়ে দিচ্ছেন। ফলে আমাদের আইসোলেশন ওয়ার্ডে রোগীর সংখ্যা ক্রমশ বেড়েই চলেছে। সেই অনুপাতে অক্সিজেন বাড়ছে না।”

Advertisement

বেশির ভাগ ব্লক বা গ্রামীণ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আবার দাবি করেছেন, রোগীকে বাড়িতে ফেলে রেখে তার পর শেষ মুহুর্তে নিয়ে আসা হচ্ছে। তখন অবস্থা এমন খারাপ হচ্ছে যে ব্লক স্তরে সেই রোগীকে রেখে দেওয়া ঝুঁকির হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট করের মতো সময় বা পরিস্থিতি থাকছে না। বাধ্য হয়েই তাঁদেরকে জোলায় রেফার করতে হচ্ছে।

শক্তিনগরের কর্তারা জানিয়েছেন, আগে হাওড়ার ডোমজুর থেকে অক্সিজেন সিলিন্ডার রিফিল করে আনা হত। এখন কল্যাণীর একটি সংস্থা থেকে রিফিল করে আনা হচ্ছে। তাঁদের দাবি অক্সিজেনের নয়, সঙ্কট আসলে সিলিন্ডার ও ফ্লো মিটারের। হাসপাতালের দু’টি ক্যাম্পাস শক্তিনগর ও সদর মিলিয়ে ১৯৯টি সিলিন্ডার আছে। সিসিইউ, প্রসূতি, মেডিসিন বিভাগ সামলে আইসোলেশন ওয়ার্ডের জন্য ৭০টির মত বি-টাইপ সিলিন্ডারের ব্যবস্থা করে গিয়েছে। এর মধ্যে সকালে ৩৫টির মতো ভরা সিলিন্ডার দিয়ে ৩৫টি ফাঁকা সিলিন্ডার নিয়ে যায় সংশ্লিষ্ট সংস্থা। সন্ধ্যাতেও একই ভাবে চলে। ৩০-৩৫টি সিলিন্ডার ১২০ জন রোগীর জন্য পর্যাপ্ত নয় একেবারেই। ফ্লো মিটারও সিলিন্ডার-পিছু একটা করে থাকায় একটি সিলিন্ডার থেকে একসঙ্গে একাধিক ব্যক্তিকে অক্সিজেন দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।

এই বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে চাননি জেলা হাসপাতালের সুপার সোমনাথ ভট্টাচার্য। ফোন ধরেননি জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অপরেশ বন্দ্যোপাধ্যায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন