Coronavirus

অনলাইনে পড়া নেশা বাড়াচ্ছে মোবাইল ফোনের

পড়ার বাইরেও দিনের একটা বড় সময় তারা ফোন নিয়ে ব্যস্ত থাকছে। ঢুকে পড়ছে নানা সাইটে, এমনকি নিষিদ্ধ সাইটেও।”

Advertisement

সুস্মিত হালদার

কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ৩১ জুলাই ২০২০ ০৪:২৮
Share:

প্রতীকী ছবি।

করোনার কারণে স্কুলগুলিতে অনলাইন ক্লাস শুরু হওয়ায় যেমন মোবাইল ফোন বিক্রি বেড়েছে, সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে অভিভাবকদের উদ্বেগও বাড়ছে।

Advertisement

কারণ, অনলাইন ক্লাস করার জন্য দিনের অনেকটা সময় পড়ুয়াদের হাতে থাকছে অ্যান্ড্রয়েড ফোন। পড়াশোনার ফাঁকে সোশ্যাল মিডিয়া থেকে শুরু করে বিভিন্ন সাইটে তাদের অনেকেই ঢুকে পড়ছেন। যে মোবাইল ফোন থেকে তাদের দূরে থাকাটাই বাঞ্ছনীয় সেই ফোনই তাদের সারাদিনের সঙ্গী হয়ে উঠছে। পরিবারের লোকেদের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হচ্ছে।

মনোবিদেরাও বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন। তাঁদের ব্যাখ্যায়, এটা এক ধরনের আর্থ-সামাজিক সঙ্কট। যাঁরা সন্তানকে আর্থিক কারণে স্মার্ট ফোন কিনে দিতে পারছেন না তাঁদের সন্তানেরা শুধু যে পড়াশোনোয় পিছিয়ে পড়ছে তাই নয়, তাদের ভিতরে তৈরি হচ্ছে অবসাদ।

Advertisement

কৃষ্ণনগর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক উৎপল ভট্টাচার্য যেমন বলছেন, “অদ্ভুত সঙ্কট। ফোনে পড়াশোনা করতে করতে ছাত্ররা একটা সময় আর ফোন ছাড়া থাকতে পারছে না। ফোনের নেশায় ডুবে যাচ্ছে। পড়ার বাইরেও দিনের একটা বড় সময় তারা ফোন নিয়ে ব্যস্ত থাকছে। ঢুকে পড়ছে নানা সাইটে, এমনকি নিষিদ্ধ সাইটেও।”

পড়ুয়াদের মানসিক বিকাশেও এটি প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে বলে মনে করছেন অনেকেই। এক অভিভাবকের কথায়, “আমার মেয়ে সেভেনে পড়ে। ভেবেছিলাম, নাইনে না ওঠা পর্যন্ত ওকে স্মার্ট ফোন দেব না। কিন্তু সেটা হল না। স্কুলের পাশাপাশি গৃহশিক্ষকেরাও এখন অনলাইন ক্লাস করতে শুরু করেছে। পড়ার পাশাপাশি সহপাঠীদের কাছ সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে নানান তথ্য আদানপ্রদান করতে হচ্ছে।কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, পড়াশোনার পরেও বেশির ভাগ সময় ফোনেই মুখ গুঁজে থাকছে। বারণ করলেই রেগে যাচ্ছে।”

মনবিদ শুদ্ধেন্দু চক্রবর্তী বলছেন, “দেখা যাচ্ছে, ফোনই ছোটদের কাছে মনের জানালা হয়ে উঠছে। কারণ এখন তারা বাইরে খেলতে যেতে পারছে না, স্কুলে যেতে পারছে না, বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছে না। তাদের হতাশ কাটানোর প্রধান উপায় হয়ে উঠছে এই ফোন।” তিনি বলেন, “এর থেকে সন্তানকে বের করে আনতে প্রথমে ভাল করে বোঝাতে হবে। তাদের বন্ধু হতে হবে। পাশাপাশি, সন্তানের ফোনে নেট ভরে দেওয়া যাবে না। প্রয়োজনের সময় নিজের ফোন থেকে নেট শেয়ার করুন। যাতে সে অন্য সময় নিজের খুশিমতো সাইটে ঢুকতে না পারে। প্রয়োজনে কিছু সাইট বিশেষ করে প্রাপ্তবয়স্কদের সাইট ব্লক করে দিন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন