লকডাউনের হাসপাতাল
করোনাভাইরাসের মোকাবিলা করার জন্য জেলার বিভিন্ন হাসপাতাল যখন নতুন করে সেজে উঠছে, চিকিৎসক দেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে, সেখানে লালগোলার কৃষ্ণপুর গ্রামীণ হাসপাতাল নিয়ে মানুষের অভিযোগের অন্ত নেই। ভবানীপুরের বাসিন্দা তাজমল হকই হোন বা লালগোলার বাসিন্দা লস্করপুর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গির আলমই হোন, হাসপাতালের অভিজ্ঞতা নিয়ে বিরক্ত। জাহাঙ্গির শেষ পর্যন্ত বেসরকারি নার্সিংহোমে গিয়ে চিকিৎসা করিয়ে সুস্থ হয়েছেন।
এমনিতেই লালগোলা কৃষ্ণপুর গ্রামীণ হাসপাতাল নিয়ে লালগোলার সাধারণ মানুষের অভিযোগের শেষ নেই। হাসপাতালের অবস্থা ও পরিষেবা দেখে ইদানীং স্থানীয় বাসিন্দারা রীতিমতো বিচলিত। স্থানীয় বাসিন্দা মহম্মদ হায়দার আলি বলছেন, ‘‘আমরা লালগোলার বাসিন্দারা খুবই অবাক ও বিরক্ত। লকডাউনের জেরে গোটা জেলায় হাসপাতালগুলোর বদল ঘটলেও আমাদের কৃষ্ণপুর হাসপাতালের বরং চিকিৎসা পরিষেবা আরও খারাপ হচ্ছে।’’ বাসিন্দাদের অভিযোগ, সারা জেলাতেই পরিযায়ী শ্রমিকরা ফিরছেন। হাসপাতালগুলোতে রোগীদের ভিড় বাড়ছে। যেখানে আউটডোরে ভিড় কমাতে অন্য গ্রামীণ হাসপাতালগুলোতে বেশি ডাক্তার বসছেন, সেখানে কৃষ্ণপুর গ্রামীণ হাসপাতালে দু’জন চিকিৎসকই বসছেন আউটডোরে। তার ওপরে একজন ডাক্তার আউটডোর ও জরুরি পরিষেবা দু’টোই সামাল দিচ্ছেন। এ ছাড়াও রোগীদের অভিযোগ, ইঞ্জেকশন বা স্লাইনের দরকার হলে সেটা নার্সদের ওয়ার্ডে গিয়েই নিয়ে আসতে হয়। সাধারণত, রোগীদের ওয়ার্ডে সেটা দেওয়া হচ্ছে না। এদিন শিক্ষক জাহাঙ্গির আলম বললেন, ‘‘কী বলব, হাসপাতালের কোনও উন্নতি নেই। এখন তো হাসপাতাল তো আর কেউ বলছে না। খারাপ বিশেষণ দিচ্ছে। আমারও যা অভিজ্ঞতা হয়েছে তাতে আমিও ওই একই বলছি। আর পরিষেবা নিয়ে ডাক্তার নার্সদের কিছু বলতে গেলেই তারা তো রীতিমতো হুমকি দেন।’’ এ দিন কৃষ্ণপুর গ্রামীণ হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির কর্তা তথা লালগোলা ব্লক তৃণমূলের সভাপতি শুভরঞ্জন রায় বলেন, ‘‘হাসপাতালের অবস্থা নিয়ে মিটিংয়ে বলা হয়। কিন্তু সত্যি কথা শুনলেই তো কথা কাটাকাটি শুরু হয়ে যায়।’’
কী বলছেন লালগোলা ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক সৌম্য সাহা? তিনি বলছেন, ‘‘ব্লকে চিকিৎসক কম আছে। আর যেমন চলার তেমনই চলছে।’’ জেলার উপ স্বাস্থ্য অধিকর্তা বিশ্বজিৎ সরকার বলেন, ‘‘হাসপাতালের অবস্থা নিয়ে স্থানীয় লোকজন ও বিডিও-র সঙ্গে কথা বলে যা করার করা হবে।’’