‘ঠিক আছে, আমিও দেখব’

বৃহস্পতিবারের ভিড়ের কথা মাথায় রেখে পুলিশ অবশ্য কোনও ঝুঁকি নিল না। কর্ডন করে প্রায় চিলের মতো ছোঁ মেরে নিত্যানন্দকে নিয়ে হারিয়ে গেল হাজতের অন্ধকারে।

Advertisement

প্রাণময় ব্রহ্মচারী

বহরমপুর শেষ আপডেট: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০১:০৩
Share:

আমৃত্যু কারাদণ্ডের সাজা নিত্যানন্দের। প্রতীকী ছবি।

ঘড়ির কাঁটা ১১টা ছাড়িয়েছে সবে। জেলা জজ আদালতে হাজতের গা ঘেঁষে পুলিশ ভ্যান থামতেই জানলা থেকে মুখ বাড়িয়ে হাত নাড়ল সে। ভাবখানা— এই তো এসে গিয়েছি আমি!

Advertisement

বৃহস্পতিবারের ভিড়ের কথা মাথায় রেখে পুলিশ অবশ্য কোনও ঝুঁকি নিল না। কর্ডন করে প্রায় চিলের মতো ছোঁ মেরে নিত্যানন্দকে নিয়ে হারিয়ে গেল হাজতের অন্ধকারে।

গত কালের ফ্যাকাসে জিনস এ দিনও, ফুলহাতা নীল চেক শার্ট। পায়ে স্নিকার্স, রোদ চশমার নীচে নিখুঁত কামানো গাল। কপালে দুশ্চিন্তার ফোঁটাও নেই। হাঁ মুখ করে ভিড় থেকে কেউ বলে উঠলেন, ‘‘দেমাক দেখেছ!’’ কথাটা কানে গেল না হয়ত, কিন্তু হাবেভাবে রোদ্দুরের মতো চড়া ঔদ্ধত্য ছড়িয়ে নিত্যানন্দ এ বার বোতল থেকে মাপা এক ঢোঁক জল খেল। তার পরে ফের হাত নেড়ে ঢুকে গেল হাজতে।

Advertisement

তার পর অপেক্ষা। বেলা সোয়া ২টো নাগাদ নিত্যানন্দকে আদালতের কাঠগড়ায় ঢোকাল পুলিশ। ততক্ষণে আইনজীবী ও সাধারণ মানুষের ভিড়ে ছয়লাপ আদালত। তখনও বিচারক আসেননি, নিত্যানন্দ বেশ খোলামেলা গলায় আলাপ জমালো আইনজীবী ও আশপাশের মানুষজনের সঙ্গে।

বিচারক ৪টে ১৬ মিনিটে বিভিন্ন ধারায় আমৃত্যু কারাদণ্ডের সাজা ঘোষণা করলেন। সাজা শুনে কিছুক্ষণ চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকল নীল জিনস। পরে আদালত থেকে বেরিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়া মা-ছেলেকে অভয় দিয়ে ফের পুরনো চেহারা ধরল সে।

বিচারকের রায়ের কপি নিতে অস্বীকার করে আদালতের বাইরে এসে তুমুল চিৎকার শুরু করল সে। সংবাদমাধ্যমকে বলতে লাগল, ‘‘আমি নির্দোষ, আমাকে বিচারের নামে ফাঁসানো হল, ঠিক আছে আমিও দেখব, আমি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন করব, আমার আইনজীবীরা হাইকোর্টে আবেদন করবে।’’ ততক্ষণে পুলিশ তাকে গাড়িতে জোর করে তুলে নিয়ে হাজতের দিকে রওনা দিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন