Water Contamination

পুরসভার পানীয় জল খেয়ে বিষক্রিয়া, সাত জনের মৃত্যু ইনদওরে! গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি শতাধিক

পেট খারাপ, ঘন ঘন বমি। শরীর ক্রমশ ভাঙতে ভাঙতে শেষে মৃত্যু। ইনদওরে পর পর এই ঘটনাগুলিকে কেন্দ্র করে জনস্বাস্থ্য নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৪:০৩
Share:

পুরসভার পানীয় জলের কল। মধ্যপ্রদেশের ইনদওরে এমন পানীয় জল থেকেই বিষক্রিয়া ছড়িয়েছে বলে অভিযোগ। — প্রতীকী চিত্র।

পুরসভার সরবরাহ করা পানীয় জলের মধ্যেও ‘বিষ’! মধ্যপ্রদেশের ইনদওরে গত কয়েক দিনে একের পর এক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। অভিযোগ, দূষিত পানীয় জল খেয়েই মৃত্যু হয়েছে তাঁদের। হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ওই শহরের শতাধিক বাসিন্দা। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, গত কয়েক দিনে অন্তত আট জনের মৃত্যু হয়েছে। যদিও প্রশাসন তিন জনের মৃত্যুর কথাই স্বীকার করেছে। তবে শহরের মেয়রের কথায় স্পষ্ট, অন্তত সাত জন প্রাণ হারিয়েছেন ‘বিষাক্ত’ জলপানে।

Advertisement

কী ভাবে এই দূষণ ছড়িয়েছে, তা এখনও সরকারি ভাবে প্রকাশ করা হয়নি। তবে ইনদওরের পুরকমিশনার দিলীপ কুমার যাদব ইতিমধ্যে একটি প্রাথমিক রিপোর্ট জমা দিয়েছেন। জানা যাচ্ছে, ওই রিপোর্টে তিনি জানিয়েছেন, ভগীরথপুরায় পুরসভার দেওয়া পানীয় জলের মূল পাইপলাইনে ছিদ্র ধরা পড়েছে। সেটির উপরে একটি শৌচাগার তৈরি করা হয়েছিল। অনুমান করা হচ্ছে, সেখান থেকেই পানীয় জলে দূষণ ছড়িয়েছে।

ইনদওরের ভগীরথপুরা এলাকার কাউন্সিলর কমল বঘেলা জানাচ্ছেন, গত ২৫ ডিসেম্বর থেকে এলাকাবাসীরা অভিযোগ জানাচ্ছিলেন। পুরসভার সরবরাহ করা পানীয় জলে তাঁরা এক ধরনের গন্ধ পাচ্ছিলেন বলে জানান তিনি। বঘেলা বলেন, “ওই জল পান করার পরেই সম্ভবত অসুস্থ হয়ে পড়েছেন অনেকে। জল কী ভাবে দূষিত হল তা ল্যাবরেটরিতে নমুনা পরীক্ষার পরেই বোঝা যাবে। অন্য দিকে এলাকাবাসীদের দাবি, জলের মধ্যে অদ্ভুত গন্ধ আসছে— তা বার বার বলার পরেও পুর কর্তৃপক্ষ কোনও পদক্ষেপই করেননি।

Advertisement

পেট খারাপ, ঘন ঘন বমি। শরীর ক্রমশ ভাঙতে ভাঙতে শেষে মৃত্যু। ইনদওরে পর পর এই ঘটনাগুলিকে কেন্দ্র করে জনস্বাস্থ্য নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। উদ্বেগ দানা বাঁধছে সাধারণ মানুষের মনে। অস্বস্তির মধ্যে পড়েছে মধ্যপ্রদেশের বিজেপি সরকারও। অভিযোগ খতিয়ে দেখতে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে তারা। অস্বস্তির মাঝেই নিলম্বিত করা হয়েছে কয়েক জন সরকারি আধিকারিককে। এক জনকে বরখাস্তও করা হয়েছে।

বুধবার মেয়র পুষ্যমিত্র ভার্গব বলেন, “সরকারি ভাবে তিন জনের মৃত্যু নিশ্চিত হয়েছে। তবে আমরা আরও চার জনের মৃত্যুর খবর পেয়েছি।” উদ্ভূত পরিস্থিতির দায় স্বীকারও করেছেন তিনি। যাঁদের গাফিলতিতে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তাঁদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে পদক্ষেপের কথা বলেছেন মেয়র। জানিয়েছেন, কোনও শীর্ষ আধিকারিকের নাম উঠে এলে, তাঁকেও রেয়াত করা হবে না।

বিতর্ক দানা বাঁধার পরে ওই এলাকার বাড়ি বাড়ি গিয়ে বাসিন্দাদের স্বাস্থ্যের খোঁজখবর নিয়েছেন স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকেরা। ওই এলাকায় ২,৭০৩টি বাড়ি রয়েছে। সেখানে প্রায় ১২ হাজার মানুষের বাস। সূত্রের খবর, তাঁদের মধ্যে ১,১৪৬ জনের শরীরে মৃদু উপসর্গ দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যে তাঁদের প্রাথমিক চিকিৎসা করানো হয়েছে। ১১১ জন বেশি অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাঁরা বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। এ ছাড়া ১৪ জনকে হাসপাতালে চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ইতিমধ্যে মৃতদের পরিবারদের জন্য ২ লক্ষ টাকা করে আর্থিক সাহায্য ঘোষণা করেছেন। অসুস্থদের চিকিৎসার যাবতীয় খরচও সরকার বহন করবে বলে জানিয়েছেন তিনি। অস্বস্তির মাঝে কয়েক জন আধিকারিকের বিরুদ্ধে পদক্ষেপও করেছে পুরপ্রশাসন। ইনদওর পুরসভার এক জ়োনাল অফিসার এবং এক সহকারী ইঞ্জিনিয়ারকে নিলম্বিত করা হয়েছে। চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে এক সাব ইঞ্জিনিয়রকেও।


আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement