Crops

নিচু জমিতে জল জমে ক্ষতি আনাজে

জেলা কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, মুর্শিদাবাদে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ১৩০০-১৪০০ মিলিমিটার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বহরমপুর শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০২০ ০৪:১৪
Share:

জলে ডুবে আনাজ। নিজস্ব চিত্র

গত বছর এ সময় বৃষ্টির জন্য চাতকের মতো চেয়েছিলেন মুর্শিদাবাদের চাষিরা। বৃষ্টির অভাবে সে বার যেমন পাট পচাতে গিয়ে সমস্যায় পড়তে হয়েছিল, তেমনই অন্য চাষেও সমস্যা হচ্ছিল। কিন্তু এবারে তার উল্টো চিত্র দেখা দিল মুর্শিদাবাদে। স্বাভাবিকের তুলনায় এ বারে এখনও পর্যন্ত ৩১ শতাংশ বৃষ্টিপাত বেশি হওয়ায় জেলার অনেক এলাকায় নিচু জমিতে জল জমে গিয়েছে। এছাড়া লাগাতার ভারী বৃষ্টির কারণে আনাজ চাষেও ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

Advertisement

মুর্শিদাবাদের উপকৃষি অধিকর্তা (প্রশাসন) তাপসকুমার কুণ্ডু বলেন, ‘‘এ বারে স্বাভাবিকের তুলনায় বৃষ্টিপাত বেশি হওয়ার ফলে পাট পচানোর ক্ষেত্রে যেমন উপকার হবে, তেমনই আনাজ চাষের ক্ষতি হতে পারে। ছত্রাক ঘটিত রোগের দেখা দিতে পারে। নিচু জমিতে জল জমে থাকলে সে সব জায়গায় ধান লাগানোর সময় পিছিয়ে যেতে পারে।’’

জেলা কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, মুর্শিদাবাদে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ১৩০০-১৪০০ মিলিমিটার। গত বছর এই সময় পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের ঘাটতি ছিল ২৫ শতাংশ। এ বছর জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের পরিমাণ যেখানে ৬৫০ মিলিমিটার, সেখানে এবছর এ পর্যন্ত বৃষ্টিপাত হয়েছে ৮৫০ মিলিমিটার। স্বাভাবিকের তুলনায় প্রায় ৩১ শতাংশ বৃষ্টিপাত বেশি হয়েছে।

Advertisement

সূত্রের খবর, গত তিন দিনে জেলায় ১২৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। ফলে রাস্তার ধারের নয়ানজুলি থেকে শুরু করে ডোবায় জল ভর্তি হয়েছে। নিচু জমিগুলিতেও হাঁটু সমান জল জমে গিয়েছে।

জেলা কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় এখনও মাঠে পাট রয়েছে। এ ছাড়া বেগুন, পটল, শসা, টোম্যাটো, কুমড়ো, ঝিঙে, শাক, লঙ্কার মতো আনাজ মাঠে রয়েছে। ভারী বৃষ্টির কারণে মাটি স্যাঁতসেতে হওয়ায় ছত্রাক ঘটিত রোগ লাগার সম্ভাবনা রয়েছে। এ ছাড়া রোদ উঠলেই লঙ্কার গাছ মরে যেতে পারে।

ডোমকলের হজরত মালিথ্যা আগাম জাতের ফুল কফি চাষের জন্য বীজতলা ফেলেছেন। বীজতলা বড় হয়ে গিয়েছে। কিন্তু লাগাতার বৃষ্টির কারণে তিনি এখনও চারা রোপণ করতে পারেননি। হজরত বলেন, ‘‘ঘূর্ণিঝড় আমপানে অনেক ক্ষতি হয়েছে। তার পরে লাগাতার বৃষ্টিতে মাঠের আনাজ চাষ যেমন নষ্ট হচ্ছে, তেমনই নতুন করে আনাজ লাগানো যাচ্ছে না।’’

রানিনগরের মৃদাদপুরের কৃষক মনিরুল ইসলামের জমিতে বেগুন, লঙ্কা, পটল চাষ রয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, ‘‘প্রায় প্রতিদিন ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। ফলে জমি স্যাঁতসেতে হয়েছে। যার জেরে গাছ মরে যাচ্ছে। রোদ উঠলে আরও গাছ মরবে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘বর্ষাকালীন পেঁয়াজ চাষের জন্য বীজতলা তৈরি করেছি। কিন্তু লাগাতার বৃষ্টির কারণে বীজতলা রোপন করতে পারিনি। ফলে দেরি হয়ে গেলে বর্ষাকালীন পেঁয়াজ চাষও ভাল হবে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন