গাছতলা খুঁড়তেই বেরিয়ে এল বোমা-গুলি! আর বাড়ির গোয়ালঘরের পাকা দেওয়ালের গা ঘেঁষে গর্ত খুঁড়তেই সার দিয়ে সাজিয়ে রাখা মাস্কেট ও আগ্নেয়াস্ত্র। সুতি থানার সাদিকপুর গ্রামের নামো পাড়ায় তিনটি বাড়িতে হানা দিয়ে রবিবার সন্ধেয় সুতির আহিরণ আউটপোস্টের পুলিশ উদ্ধার করল ৯টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ২২টি গুলি। গ্রেফতার করা হয়েছে যিশু দাস, বীরচাঁদ দাস ও নিবিড় দাস নামে তিন যুবককে। এদের মধ্যে বীরচাঁদ একটি খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত। পুলিশের চোখ এড়িয়ে সে পালিয়ে বেড়াচ্ছিল।
পুলিশ জানায়, উদ্ধার হওয়া আগ্নেয়াস্ত্রের মধ্যে রয়েছে ৪টি ওয়ান শটার, এক একটি রিভলবার, ২টি করে মাস্কেট ও ৭.৬৫ এমএম পিস্তল। গুলি ও আগ্নেয়াস্ত্রগুলিই পলিথিনে কাগজ দিয়ে সযত্নে মুড়ে বেঁধে মাটির প্রায় এক ফুট নীচে পুঁতে রাখা হয়েছিল। গুলি রাখা ছিল একটি আম গাছের গোড়ায় মাটির নীচে। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে সুতির আহিরণ আউট পোস্টের পুলিশ রবিবার তাদের আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। তার পর তিন জনকে সঙ্গে নিয়েই বিকেল ৫টা নাগাদ সুতি থানার পুলিশ যায় সাদিকপুর নামোপাড়ায় তাদের বাড়িতে। তল্লাশি চালানো হয় তাদের বাড়ির সমস্ত ঘরে। ৪টি ওয়ান শটার ও ২টি গুলি মিললেও পুলিশের কাছে খবর ছিল আরও গুলি ও আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে বাড়িতে। জিজ্ঞাসাবাদ করতেই তারা নির্দিষ্ট জায়গায় সে সব পুঁতে রাখা হয়েছে বলে পুলিশকে জানায়। পুলিশের সামনেই যীশু, বীরচাঁদ ও নিবিড় মাটি খুঁড়ে বের করে দেয় সমস্ত আগ্নেয়াস্ত্রসহ গুলি। সাদিকপুর গ্রামে দীর্ঘদিন ধরেই দুটি গোষ্ঠীর মধ্যে ফসল কাটা নিয়ে বিবাদ রয়েছে। বেশ কিছুদিন আগে খুন হন সমর ঘোষ নামে এক যুবক। আদালতে অভিযুক্ত অন্য গোষ্ঠীর লোকেরা বেকসুর খালাস পান। ফলে দুই গোষ্ঠীর মধ্যেই ফের চাপা মাথা চাড়া দিতে শুরু করে উত্তেজনা । সেই গোষ্ঠী বিবাদের সংঘর্ষে ব্যবহারের জন্যই ঝাড়খন্ডের সাহেবগঞ্জ থেকে কয়েক বছর আগে আগ্নেয়াস্ত্রগুলি কিনে এনে মজুত করে রাখা হয়েছিল সযত্নে মাটির তলায়।