Cyclone Amphan

ক্ষতিগ্রস্তের তালিকাই দেননি সদস্য, অভিযোগ

তেহট্ট ১ ব্লকের বেতাই ২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার পশ্চিম কলোনির তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য কার্তিক হীরা ক্ষতিগ্রস্তদের কোনও তালিকাই তৈরি করেননি বলে অভিযোগ উঠেছে।

Advertisement

সাগর হালদার

তেহট্ট শেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০২০ ০৫:৩২
Share:

প্রতীকী ছবি

আমপানের ত্রাণ নিয়ে অভিযোগ, কিন্তু তার ধরন একেবারে আলাদা।

Advertisement

এত দিন ঝড়বিধ্বস্থ বিভিন্ন জেলায় প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তের বদলে প্রভাবশালী এবং মূলত শাসকদল ঘনিষ্ঠদের অ্যাকাউন্টে ক্ষতিপূরণের টাকা ঢুকেছে বলে গুচ্ছ গুচ্ছ অভিযোগ উঠেছে। অনেক জায়গায় ভুল স্বীকার করে অর্থপ্রাপকেরা টাকা ফেরত দিতেও চেয়েছেন।

কিন্তু এ বারে তেহট্ট ১ ব্লকের বেতাই ২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার পশ্চিম কলোনির তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য কার্তিক হীরা ক্ষতিগ্রস্তদের কোনও তালিকাই তৈরি করেননি বলে অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা সেই কারণে ক্ষোভে ফুটছেন। ওই এলাকায় আমপানে অনেকের বাড়ির ক্ষতি হলেও কোনও ক্ষতিগ্রস্তের তালিকা আসেনি বলে স্বীকার করেছেন বেতাই-২ পঞ্চায়েত প্রধান সঞ্জীব পোদ্দার।

Advertisement

স্থানীয়দের অভিযোগ, ওই পঞ্চায়েত সদস্য ঝড়ের সময় বা তার পরে এলাকায় ছিলেন না, এখনও নেই। তিনি একবারের জন্যও এলাকায় ক্ষয়ক্ষতি ঘুরে দেখেননি, ক্ষতিপূরণ প্রাপকদের তালিকাও বানাননি। মৌখিকভাবে বারে বারে তাঁর কাছে আবেদন জানিয়েও ফল পাননি এলাকার গরিব, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলি।

কার্তিক কে ফোন করা হলে তিনি অবশ্য নির্বিকার ভাবেই বলেন, ‘‘ঝড়ের পর থেকে এলাকায় যাইনি। ক্ষতিপূরণের তালিকাও পঞ্চায়েতকে জমা দেওয়া হয়নি!’’

ওই পঞ্চায়েতের পশ্চিম কলোনি এলাকায় ছোট ঘরে থাকেন রায় দম্পতি। স্বামী শংকর রায় চোখে দেখতে পান না, স্ত্রী বাসন্তী রায় লোকের বাড়িতে কাজ করে সংসার চালান। লকডাউনে কাজ হারিয়েছেন। বাসন্তী রায়ের কথায়, ‘‘ঝড়ের সময় গোয়াল ঘর রান্নাঘর ভেঙে গিয়েছে। গরুর দুধ বেচে সংসার চলছে বর্তমানে। কিন্তু ভাঙা ঘরে কী করে গরু রাখব বা কোথায় রান্না করব জানি না। কেউ আমাদের খোঁজ নিচ্ছে না। কোনও ক্ষতিপূরণ পাচ্ছি না। কার্তিকবাবুকে বলে কোনও সুবিধা এখনও পর্যন্ত পাইনি।’’

ওই পাড়ার আরেক বাসিন্দা শংকরী রায় বলেন, ‘‘ঝড়়ের পর থেকে কোনওরকমে বাড়ি ঠেঁস দিয়ে দাঁড় করানো আছে। চালের ফ্রেম উড়ে গিয়েছে। প্রশাসনের কেউই খোঁজ নিতে আসেননি।’’

তেহট্ট ১ পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী দলনেত্রী তনুশ্রী বিশ্বাস বলেন, ‘‘যতদূর শুনেছি মেম্বার কার্তিক হীরা কর্মসূত্রে বাইরে থাকেন। কিন্তু এত বড় প্রাকৃতিক দুর্যোগের পরেও সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ান না।’’ তেহট্ট বিধানসভার বিধায়ক গৌরীশঙ্কর দত্তের কথায়, ‘‘ওই পঞ্চায়েত সদস্য কার্তিকের বিষয়টি বিস্তারিত জেনে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ বিডিও অচ্যুতানন্দ পাঠকও জানিয়েছেন, ব্লক অফিসে ওই অঞ্চল থেকে কোনও তালিকা আসেনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন