অভিযোগ: মির্জাপুরে। নিজস্ব চিত্র
প্রশাসনই বলছে অনিয়ম হয়েছে। কিন্তু কীভাবে তা হল, তা নাকি বোঝাই যাচ্ছে না। ফলে এক জনের নামে বরাদ্দ হওয়া সরকারি বাড়ি অন্য জন পেলেও ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না।
এক-দু’জন নয়, বেলডাঙার মোট ৫২ জনের সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারের ইন্দিরা আবাস যোজনায় এমন প্রতারণা হয়েছে বলে অভিযোগ। আট মাস আগে প্রশাসনের সর্বস্তরে অভিযোগ হলেও এখনও পর্যন্ত সুরাহা পাননি ওই ৫২ জন। শেষ পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হয়েছেন তাঁরা। তাঁদের বদলে যে ৫২ জন প্রকল্পের টাকা পেয়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে থানাতেও এফআইআর করেছেন বঞ্চিতরা।
গ্রামবাসীদের অভিযোগ, পঞ্চায়েত প্রধান ও ব্লক অফিসের কিছু কর্মী এই প্রতারণার সঙ্গে জড়িত।
ইন্দিরা আবাস যোজনার বাড়ির জন্য আবেদন করেছিলেন মির্জাপুরের ৫২ জন বাসিন্দা। জমির দলিল থেকে শুরু করে, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের তথ্য পঞ্চায়েতে জমা দিয়েছিলেন তাঁরা। পরে তাঁরা জানতে পারেন, ৫২ জনের নামেই বাড়ির অনুমোদন মিলেছে, কিন্তু আবেদনকারীদের পরিবর্তে প্রকল্পের টাকা দেওয়া হয়েছে অন্য ৫২ জনকে।
অভিযোগ, আবেদনকারীদের ছবি বদলে দিয়ে আবেদনপত্রে জালিয়াতি করা হয়েছে। এই প্রকল্পে দু’ দফায় ৩৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়। প্রশাসনের কর্মী ও জন প্রতিনিধিদের যোগসাজশ ছাড়া এমন জালিয়াতি সম্ভব নয়। গ্রামের বাসিন্দা এসইউসি-র বেলডাঙা লোকাল কমিটির সম্পাদক বাবর আলির অভিযোগ, শাসক দলের নির্দেশেই এমন জালিয়াতি হয়েছে।
মিজার্পুর-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান, সম্প্রতি তৃণমূলে যোগ দেওয়া লাইলা ইয়াসমিন বলেন, ‘‘ঘটনাটি ঘটেছে। তবে কেন ঘটল, তা আমাদের জানা নেই।’’ আর কোনও প্রশ্নের উত্তর দেননি তিনি। পঞ্চায়েত সচিব অভিজিৎ দাস এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চান নি।
তৃণমূলে যোগ দেওয়া বিধায়ক স্থানীয় বাসিন্দা রবিউল আলম চৌধুরী বলেন, ‘‘গরীব মানুষের সঙ্গে যারা প্রতারণা করল। তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’’ বেলডাঙা-১ ব্লকের বিডিও শুভ্রাংশু মণ্ডল বলেন, ‘‘এটা নিশ্চয় ত্রুটি। তবে কী ভাবে ঘটল, তার ব্যাখ্যা পঞ্চায়েতের কাছে চাওয়া হয়েছে। যাঁরা বঞ্চিত হয়েছেন, তাঁদের অন্য কোনও প্রকল্পে ঘর দেওয়া নিশ্চিত করা হবে।’’ বহরমপুর সদর মহকুমা শাসক দিব্য নারায়ণ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পুরো ঘটনার তদন্ত হচ্ছে। বিডিও বিষয় টি দেখছেন।’’
গ্রামবাসীদের প্রশ্ন, বঞ্চিতদের অন্য প্রকল্পে ঘর দেওয়া কি সমস্যার সমাধান? অথচ প্রশাসন এভাবেই বিতর্ক ধামাচাপা দিয়ে দোষীদের বাঁচাতে চাইছে।