ধৃতকে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র
পাওনা টাকা চাওয়ায় এক ধাবা মালিককে শ্বাসরোধ করে খুনের অভিযোগ উঠল এক যুবকের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার রাতে খড়গ্রামের কাপাসডাঙা এলাকায় হলদিয়া-ফরাক্কা বাদশাহি সড়কের পাশে একটি জায়গায় ঘটনা ঘটেছে। নিহত ব্যবসায়ীর নাম বাবু শেখ (৩৭)। তাঁকে খুনের অভিযোগে শুকুরুদ্দিন শেখ নামে একজনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। ধৃত যুবকখড়গ্রামেরই বাসিন্দা।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, নিহত বাবুর খড়গ্রামে একটি ধাবা রয়েছে। অভিযুক্ত যুবক মহারাষ্ট্রের পুণেতে কাজ করে। মাঝেমধ্যে সে গ্রামে ফিরলে বাবুর ধাবায় খাওয়াদাওয়া করত। একই গ্রামের বাসিন্দা হওয়ায় শুকুরুদ্দিন মাঝেমধ্যেই ধারে খাওয়াদাওয়া করত। এভাবেই ধার বাড়তে বাড়তে প্রায় তিন হাজার টাকা ছাড়িয়ে গিয়েছিল। সম্প্রতি সেই টাকা মেটানোর জন্য শুকুরকে চাপ দিচ্ছিলেন বাবু। এ নিয়ে মাস দুয়েক আগে বাবুর সঙ্গে অভিযুক্ত যুবকের বচসা বেধেছিল। সেই সময় স্থানীয়দের হস্তক্ষেপে ঝামেলা মেটে। সামান্য কিছু টাকা মিটিয়েও দিয়েছিল শুকুরুদ্দিন। পরের বার বাড়়িতে ফিরে পুরো টাকা মিটিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিল সে। দিনকয়েক আগে সে পুণে থেকে বাড়ি ফিরেছিল। বৃহস্পতিবার রাতে বাবুর ধাবায় সে খেতে যায়। তাকে দেখে পাওনা টাকা দেওয়ার জন্য বলেন বাবু।
জানা গিয়েছে, সেই সময় অভিযুক্ত যুবক বলে, ‘‘আগে খাবার দাও, পরে টাকা দিচ্ছি।” কিন্তু তার কথায় ভরসা পাননি বাবু। ধাবা কর্মীরা খাবার দিতে দেরি করে শুকুরুদ্দিনকে। তারপরই বাবুর সঙ্গে তার বচসা শুরু হয়। কিল, চড়, থাপ্পড়, ঘুষি চলার মধ্যেই বাবুর গলায় সে গামছা পেঁচিয়ে ধরে বলে অভিযোগ। তাতেই দমবন্ধ হয়ে মৃত্যু হয় বাবুর। ধাবার অন্য ক্রেতারা শুকুরকে আটকানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। মত্ত অবস্থায় থাকা ওই অভিযুক্ত যুবককে ধাবা কর্মীরা আটকে রেখে খড়গ্রাম থানায় খবর দেন। পুলিশ গিয়ে পরে তাকে গ্রেফতার করে। দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য কান্দি মহকুমা হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
নিহতের ভাইপো নইমুদ্দিন শেখ বলেন, “কাকিমা পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন। শুকুরুদ্দিন গ্রামে সারাদিন মত্ত অবস্থায় থাকত। কাকা বকেয়া টাকা চাইতেই কাকাকে শ্বাসরোধ করে খুন করে।” পুলিশ ধৃতকে শুক্রবার কান্দি আদালতে তোলে। বিচারক তাকে ১৪ দিন জেল হাজতে রাখার নির্দেশ দেন।