মারধরে ভিটেছাড়া বৃদ্ধা মা, অভিযোগ

 বৃদ্ধা মাকে ছেলে ও বৌমা মারধর করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছিল। নিজের নামে বারো কাঠা জমি আর বাড়ি থাকা সত্ত্বেও বৃদ্ধার ঠাঁই হয়েছিল ভাড়া বাড়িতে। সেখানে একাকী কোনওমতে দিন কাটাচ্ছিলেন। তাঁর বাড়ির দখল নেন ছেলে-বৌমা!

Advertisement

মনিরুল শেখ

কল্যাণী শেষ আপডেট: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০১:৪০
Share:

বৃদ্ধা মাকে ছেলে ও বৌমা মারধর করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছিল। নিজের নামে বারো কাঠা জমি আর বাড়ি থাকা সত্ত্বেও বৃদ্ধার ঠাঁই হয়েছিল ভাড়া বাড়িতে। সেখানে একাকী কোনওমতে দিন কাটাচ্ছিলেন। তাঁর বাড়ির দখল নেন ছেলে-বৌমা!

Advertisement

বছর আটেক এই ভাবে ভিটেছাড়া হয়ে অনটনে, মানসিক যন্ত্রণায় কাটানোর পর শেষ পর্যন্ত আর না-পেরে কল্যাণীর মহকুমাশাসক স্বপনকুমার কুন্ডুর দ্বারস্থ হন হরিণঘাটার দিঘলগ্রামের বাসিন্দা সাবিত্রী বালা দাস। সব শুনে মহকুমাশাসক নিজে ‘পিতা-মাতা ও বয়স্কদের ভরনপোষণ ও কল্যাণ আইন, ২০০৭’ (মেনটেন্যান্স অ্যান্ড ওয়েলফেয়ার অফ পেরেন্টস অ্যান্ড সিনিয়ার সিটিজেন অ্যাক্ট ২০০৭)-এ অভিযোগের বিচারের দায়িত্ব নেন। রাজস্ব আধিকারিক আশিস মজুমদারকে তিনি বৃদ্ধার বাড়ি ও জমি নিয়ে তদন্ত চালিয়ে একটি রিপোর্ট দিতে বলেন। আশিসবাবুর রিপোর্টের ভিত্তিতে গত বছরের ২৪ নভেম্বর দুই পক্ষকে ডেকে পাঠান মহকুমাশাসক। কয়েকটি শুনানির পর গত বছরের ২১ ডিসেম্বর নির্দেশ দেন, এক মাসের মধ্যে অভিযুক্ত সন্তোষ দাসকে মায়ের বাড়ি ছেড়ে পরিবার নিয়ে অন্যত্র চলে যেতে হবে। সাবিত্রীদেবী ভাড়া বাড়ি ছেড়ে চলে যাবেন নিজের বাড়িতে।

পাশাপাশি, পেশায় রং মিস্ত্রি সন্তোষকে বলা হয়েছে, মায়ের সঙ্গে আর কোনও খারাপ ব্যবহার বা মানসিক অথবা শারীরিক ভাবে মাকে নির্যাতন করা যাবে না। নির্দেশের প্রতিলিপি ডাকযোগে সন্তোষকে পাঠানো হয়েছিল। তিনি তা নেননি। মহকুমাশাসক জানিয়েছেন, এ বার নির্দেশের প্রতিলিপি পুলিশের মাধ্যমে পাঠানো হচ্ছে। তার পরেও নির্দেশ অগ্রাহ্য করা হলে প্রশাসন উদ্যোগী হয়ে সন্তোষকে বাড়ি থেকে বার করে দেবে।সাবিত্রীদেবী তাঁর বাড়ির একাংশ দিয়েছিলেন ছোট মেয়েকে। বাকি অংশে তিনি মেজো ছেলে সন্তোষের সঙ্গে থাকতেন। বৃদ্ধার দাবি, অসুস্থ অবস্থাতেও সন্তোষ ও তাঁর স্ত্রী তাঁকে মারধর করতেন। অভিযুক্ত সন্তোষের অবশ্য দাবি, তিনি তাঁর মায়ের উপর কখনও অত্যাচার করেননি। তিনি মায়ের সঙ্গেই থাকতে চান।

Advertisement

এ ছাড়া মহকুমাশাসকের নির্দেশ না-নেওয়া প্রসঙ্গে তার বক্তব্য, ‘‘আমি তখন বাড়িতে উপস্থিত ছিলাম না। তাই আমার স্ত্রী চিঠি নেননি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন