উজ্বল বিশ্বাস।
বলটা যে গড়িয়ে সটান তাঁর কোর্টে এসে পড়বে এবং কালীঘাটে কোর কমিটির বৈঠকে চায়ের খুড়ি হাতে তাঁকে এমন সলজ্জ উজ্জ্বল হয়ে উঠতে হবে— ভাবতেই পারেননি।
বিকেলে কৃষ্ণনগর ফেরার পথে ঘনিষ্ঠদের অকপটে তা কবুলও করেছেন উজ্জ্বল বিশ্বাস, ‘‘আরে দিদি যখন...।’’
পালাবদলের পরে নদিয়া দখল নিতেই, গত ছ’বছর ধরে গৌরীশঙ্কর দত্ত দলের নদিয়া জেলা সভাপতি। তবে, গত বছরখানেক ধরেই তিনি অসুস্থ। কখনও দক্ষিণ ভারত কখনও বা কলকাতার হাসপাতালে পক্ষকাল ধরে ভর্তি।
শনিবার নিজের বাড়িতে দলীয় সভায় দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকে দলনেত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় তাই জানিয়েই দিলেন, এ বার নদিয়া জেলা সভাপতি উজ্বল বিশ্বাস।
সঙ্গে কার্যকরি সভাপতি হিসাবে অবশ্য জুড়ে দিয়েছেন, অজয় দে, নাকাশিপাড়ার বিধায়ক কল্লোল খাঁ এবং নবদ্বীপের বিধায়ক পুন্ডরীকাক্ষ সাহার নাম।
বরাবরই গৌরীর বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর লোক হিসেবেই উজ্জ্বলের পরিচয়। তাই জেলার ভার উজ্জ্বলের হাতে দেওয়ায় দলের অন্দরে শুরু হয়েছে জল্পনা— এ বার কী গৌরী যুগের অবসানে কি দলীয় সিলমোহর পরে গেল! দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও বৈঠক শেষে দলনেত্রীর সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে দিয়েছেন।
কালীঘাটের বৈঠক চলাকালীন নেত্রী জানতে চান যে ‘গৌরীদা’ কোথায়? তাঁকে জানিয়ে দেওয়া হয় যে গৌরাশঙ্কর অসুস্থ। হাসপাতালে ভর্তি। এ বার আর দেরি করেননি, মমতা ঘোষণা করেন, জেলার দায়িত্ব আপাতত সামাল দেবেন প্রাক্তন জেলা সভাপতি ও প্রাক্তন মন্ত্রী উজ্বল বিশ্বাস। সেই সঙ্গে তিনি কার্যকরি সভাপতি হিসাবে তিন জনের নাম ঘোষণা করেন।
বৈঠক শেষে উচ্ছ্বসিত উজ্জ্বল বলেন, “আমাকে দিদি যখন যে দায়িত্ব দিয়েছেন আমি তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছি। এ বারও তার ব্যতিক্রম হবে না।” এর আগেও দুবার জেলা সভাপতি ছিলেন উজ্জ্বল। কিন্তু গৌরীশঙ্কর সভাপতি হওয়ার পরে জেলা রাজনীতিতে কিছুটা ব্রাত্যই হয়ে গিয়েছিলেন তিনি। কোনঠাসা হয়ে পড়েছিলেন তাঁর অনুগামীরাও। এ বার তারা আবার ঘুরে দাঁড়াতে চাইবে বলেই মনে করছেন দলেরই কর্মীরা। আর তাতে বিভিন্ন পদে ও ক্ষমতায় থাকা গৌরীবাবুর অনুগামীদের সঙ্গে তাদের সংঘাত অনিবার্য হয়ে উঠবে বলেই দলের অন্দরের খবর।