সুমন্ত দাস (প্রত্যক্ষদর্শী)
তখন ক’টা বাজবে, সাড়ে সাতটা হবে। মোহনের মোড় ও গোরাবাজার নিমতলার মোড়ের মাঝামাঝি এলাকায় শান্তি গার্লস হস্টেলের গলির মুখে বাইকে বসে আছি। আমার বন্ধু শুভজিৎ যাদব আমার বাইকের পিছনে সবে উঠেছে। আমরা জিয়াগঞ্জে আমাদের বাড়ি ফেরার জন্য বাইকে স্টার্ট দিয়েছি। ঠিক তখনই আমাদের পাশ দিয়ে হাওয়ার গতিতে গাড়িটা বেরিয়ে গেল। প্রথমে বুঝতে পারিনি, গাড়িটা একটু এগিয়ে যেতেই খেয়াল করলাম গাড়ির পিছনে একটি সাইকেল আর ওটা কী, একটা মানুষও তো হেঁচড়ে হেঁচড়ে চলেছে। মাটির সঙ্গে সাইকেলের ঘষা লাগায় রীতিমতো ফুলকি উঠছে আগুনের।
চিৎকার করলাম, গাড়িটা যেন হাওয়ায় উড়ছে। আর দেরি করিনি গাড়ি ছোটালাম ওর পেছনে। প্রায় হাফ কিলোমিটার দূরে ওল্ড কালেক্টরেট মোড়। সান্ধ্য ভ্রমণকারীরদের জন্য প্রতি দিন রাস্তাটা বন্ধ থাকে। বোলেরোটা ও সব মানল কোথায়, গাড়ি ছুটিয়ে দিল, জেলাশাসকের বাংলোর দিকে। তবে, এ বার দেখলাম ওই ছেলেটার দেহটা মোড়ের কাছে সাইকেল থেকে খসে পড়ল। সাইকেলটি কিন্তু গাড়ির সঙ্গে ছেঁচড়েই চলল। তীব্রগতিতে ছুটতে থাকা বোলেরের পিছনে আটকে থাকা সাইকেলের সঙ্গে পিচের রাস্তায় তখনও আগুন ছুটছে। কিন্তু বোলেরো তো ছুটছে হুহু করে। গোরাবাজার শ্মশানঘাটের কাছে ফের এক জন পথচারীকে ধাক্কা মারল, তার পর ফের ছুট। তখন মানকরা রেলগেট বন্ধ। আমরাও ওর পিছু ছাড়ছি না। রেলগেটের মুখে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে বেলডাঙার দিকে। শেষতক ওই রেলগেটের কাছে সাইকেলটি খসে পড়ল। হ্যাঁ পুরোটা চোখের সামনে দেখলাম। আমাদের সত্যি কিছু করার ছিল না।