Satyajit Biswas Murder Case

সত্যজিৎ বিশ্বাস হত্যা মামলা,  ‘প্রত্যক্ষদর্শী’ সাক্ষ্যে বললেন এক নেতার নাম

পেশায় গৃহশিক্ষক প্রভাস জেরায় জানান, গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর সত্যজিৎকে গাড়িতে তুলতে গিয়ে তাঁর জামা-প্যান্ট এমনকি জুতো পর্যন্ত রক্তে ভিজে গিয়েছিল।

Advertisement

দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় 

শেষ আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০২২ ০৭:০৮
Share:

সত্যজিৎ বিশ্বাস।

গুলিবিদ্ধ বিধায়ককে গাড়িতে তুলতে গিয়ে তাঁর জামা-জুতো রক্তে ভিজে গিয়েছিল, কিন্তু সেগুলি তিনি পুলিশকে দেননি বলে শুনানিতে জানালেন সাক্ষী।

Advertisement

বৃহস্পতিবার বিধাননগরে ময়ূখ ভবনে বিশেষ আদালতে নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাস খুনের মামলার শুনানি ছিল। এ দিন দুপুরে বিচারক মনোজজ্যোতি ভট্টাচার্যের এজলাসে প্রত্যক্ষদর্শী প্রভাস কর্মকারকে জেরা করেন অভিযুক্তদের আইনজীবীরা।

পেশায় গৃহশিক্ষক প্রভাস জেরায় জানান, গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর সত্যজিৎকে গাড়িতে তুলতে গিয়ে তাঁর জামা-প্যান্ট এমনকি জুতো পর্যন্ত রক্তে ভিজে গিয়েছিল। অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবী সুবীর দেবনাথ প্রশ্ন করেন, “আপনি কি সেই সব পোশাক বা জুতো পুলিশকে দিয়ে ছিলেন?” জবাবে সাক্ষী ‘না’ বলেন। অন্য এক প্রশ্নের জবাবে প্রভাস জানান, খুনের ঠিক আগে তদানীন্তন নদিয়া জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি সত্যজিৎকে কথা বলতে দেখা গিয়েছিল বাদকুল্লার নেতা জনৈক ‘কানুদা’র সঙ্গে। অভিযুক্তের আইনজীবী জানতে চান, ঘটনার পর তিনি কি কানুদাকে আর মাঠে দেখেছিলেন? প্রভাস জানান, তিনি কানুদাকে আর মাঠে দেখেন নি। আইনজীবীর প্রশ্ন, “আপনি কী ভাবে কানুদাকে চিনতেন?” সাক্ষী জানান, তিনি ব্যক্তিগত ভাবে চিনতেন না। ঘটনার তিন-চার দিন আগে কানুদাকে তাঁদের এলাকার রাস্তায় ঘুরতে দেখেছিলেন। সাক্ষী বলেন, “আমাদের এলাকার সুমন দত্ত আমাকে বলেছিল, ইনি কানুদা।” আইনজীবীর পরের প্রশ্ন ছিল, তাঁদের এলাকা থেকে বাদকুল্লা কত দূর? প্রভাস বলেন, “১০ থেকে ১২ কিলোমিটার।”

Advertisement

২০১৯-এর ৯ ফেব্রুয়ারি, সরস্বতী পুজোর আগের রাতে হাঁসখালিতে নিজের বাড়ির কাছেই গুলিতে খুন হন সত্যজিৎ। মাজিদপুর দক্ষিণপাড়ার ফুলবাড়ি ফুটবল মাঠে ‘আমরা সবাই’ ক্লাবের সরস্বতী পুজো উদ্বোধনের পর মঞ্চের সামনে চেয়ারে বসে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দেখছিলেন তিনি। সেই সময়ে খুব কাছ থেকে মাথায় গুলি করে তাঁকে খুন করা হয়। পুলিশ তদন্ত শুরু করলেও পরে মামলার তদন্তভার নেয় সিআইডি। ওই বছরই ৮ মে আদালতে চার্জশিট জমা হয়। তাতে অভিজিৎ পুন্ডারি, সুজিত মণ্ডল এবং নির্মল ঘোষের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়। তিন জনেই ধরা পড়ে জেল হেফাজতে রয়েছে। পরে অতিরিক্ত চার্জশিট দিয়ে সিআইডি কৃষ্ণনগরের বিধায়ক মুকুল রায় এবং রানাঘাটের সাংসদ জগন্নাথ সরকারের নাম যুক্ত করেছে।

এ দিন সাক্ষ্যদানের শেষ পর্বে এক প্রশ্নের উত্তরে প্রভাস জানান, খুনের মামলা শুরু হওয়ার পর পুলিশের সঙ্গে তাঁর কোনও যোগাযোগ হয়নি। ওই ঘটনা নিয়ে আদালতের আগে তিনি কাউকে কিছু জানাননি, ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী হওয়া সত্ত্বেও পুলিশের কাছে কোনও অভিযোগ করেননি। ঘটনার পর তিনি রাত ১০টা পর্যন্ত ওই মাঠেই ছিলেন। এরপর তিনি শক্তিনগর হাসপাতালে যান। সেখানে প্রচুর পুলিশ এবং দলের লোকজন ছিল। কিন্তু কাউকেই তিনি ঘটনা সম্পর্কে কিছু বলেননি।

আগামী ২২ ডিসেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানি হওয়ার কথা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন