কালীগঞ্জে মৃত তমন্না খাতুনের বাড়িতে গেলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। —নিজস্ব চিত্র।
নদিয়ার কালীগঞ্জে নাবালিকা তমন্না খাতুনের মৃত্যুর ঘটনায় তাঁর বাবা এবং মায়ের বয়ান রেকর্ড করল পুলিশ। একই সঙ্গে শুক্রবার ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে গোপন জবানবন্দি নেওয়ার প্রক্রিয়াও চলছে। তবে তার আগে আবার এক বার পুলিশি তদন্তের গতিপ্রকৃতি নিয়ে প্রশ্ন তুললেন তমন্নার মা এবং বাবা। তাঁদের প্রশ্ন, ‘‘অপরাধীরা এখনও প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। কেন তাদের গ্রেফতার করছে না পুলিশ?’’
শুক্রবার তমন্নার মায়ের বয়ান রেকর্ড করেছে পুলিশ। সূত্রের খবর, ঘটনার দিন ঠিক কী ঘটেছিল? হামলার সময় কত জন চেনা মুখ ছিলেন? এই দুই প্রশ্নের উপরই জোর দেন তদন্তকারীরা। শুধু চেনা মুখ নয়, অপরিচিত কারা ছিলেন, তাঁদের বর্ণনাও জানতে চাওয়া হয়েছে বলে খবর। তবে পুলিশের তদন্তে যে তিনি আশ্বস্ত হতে পারছেন না, তা সাফ জানালেন তমন্নার মা সাবিনা বিবি। আনন্দবাজার ডট কম-কে তিনি বলেন, ‘‘চার দিন পেরিয়ে গেলেও মাত্র পাঁচ জন গ্রেফতার হয়েছে। এখনও অপরাধীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে।’’
তমন্নার পরিবারের সঙ্গে শুক্রবার বিকেলে দেখা করতে যান বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তখন বাড়িতেই ছিলেন তমান্নার মা এবং পরিবারের অন্যরা। প্রায় আধঘণ্টা সেই বাড়িতে ছিলেন সুকান্ত। অন্যদের সঙ্গে মাটিতে বসে মন দিয়ে শোনেন মৃতার মায়ের সমস্ত অভিযোগ। সুকান্তকে তমন্নার মায়ের অভিযোগ, ‘‘আমাদের বাড়ি নিশানা করেই বোমা ছোড়া হয়েছিল। আমরা রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত নই।’’ সাবিনা জানান, যে তাঁদের বাড়ির লক্ষ্য করে বোমা ছুড়েছেন, তাঁর মেয়ের বন্ধু ছিল তমন্না। এক সঙ্গে খেলাধূলা করত।’’ সুকান্তকে সাবিনার অনুরোধ, ‘‘আপনারা বিষয়টি পারলে দেখবেন। ’’ সেই কথা শুনে সব রকম সাহায্যের আশ্বাসও দিয়েছেন সুকান্ত। কোনও রকম আইনি সহায়তার প্রয়োজন থাকলে তা জানানোর কথাও পরিবারকে বলেছেন সুকান্ত। যদিও সকালে তিনি অভিযোগ করেছিলেন, তিনি যাচ্ছেন শুনে মৃতার পরিবারকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছে পুলিশ। সুকান্তের দেখা করতে যাওয়ার প্রসঙ্গে তমন্নার মা বলেন, ‘‘আমি আগে চাই আমার মেয়ের খুনিদের শাস্তি হোক। তমন্নার জন্য দোয়া করতে যে কেউ আসতে পারেন।’’ তার পরেই আবার পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে তিনি দাবি করেন, ‘‘পুলিশকে আমরা সাহায্য করছি। কিন্তু তার পরেও তাদের সক্রিয়তা দেখতে পাচ্ছি না।’’
নিরাপত্তার অভাবের কথা জানান তমন্নার বাবা। কর্মসূত্রে ওড়িশায় থাকেন তিনি। মেয়ের মৃত্যুর খবর পেয়েই গ্রামে ফিরে আসেন। তিনি বলেন, ‘‘মুখ খোলার পর থেকে অনেক হুমকি পাচ্ছি। আমাদের খুন করার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এমনও শুনছি, আমার মেয়ের কায়দায় নাকি আমাদেরও উড়িয়ে দেওয়া হবে।’’ তমন্নার বাবার দাবি, সব অপরাধীকে গ্রেফতার না করলে তাঁদের জীবন বিপন্ন।