শপিং মলেও সব্জি পাঠাবে চাষি কোম্পানি

দু’বছর আগেই এক হাজার চাষিকে নিয়ে তৈরি করা হয়েছিল উৎপাদক সংস্থা। উদ্দেশ্য, ছোট পুঁজি একত্রিত করে বড় আকারে চাষবাস ও বিপণনের ব্যবস্থা করা।

Advertisement

সামসুদ্দিন বিশ্বাস

কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ২৩ মে ২০১৭ ০১:৪৩
Share:

দু’বছর আগেই এক হাজার চাষিকে নিয়ে তৈরি করা হয়েছিল উৎপাদক সংস্থা। উদ্দেশ্য, ছোট পুঁজি একত্রিত করে বড় আকারে চাষবাস ও বিপণনের ব্যবস্থা করা।

Advertisement

নিয়মিত তাজা সব্জি সরবরাহের জন্য সোমবার নাকাশিপাড়ার সেই ফার্মার্স প্রোডিউসার কোম্পানির সঙ্গে ‘মউ’ চুক্তি করল কৃষ্ণনগরের একটি শপিং মল। মাঝখান থেকে ফড়ে বা আড়তদারদের কারবার বন্ধ হল। লাভ হল দুই পক্ষেরই।

এ দিন দুপুরে উদ্যানপালন বিভাগের জেলা আধিকারিক কৃষ্ণেন্দু ঘোড়াইয়ের দফতরে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। নদিয়ার জেলাশাসক সুমিত গুপ্ত বলেন, “শুধু কৃষ্ণনগর নয়, যাতে ওই শপিং মলের কলকাতার শাখাগুলিও নাকাশিপাড়ার চাষিদের সব্জি নেয়, সেটাও আমরা দেখব।”

Advertisement

উদ্যানপালন আধিকারিক বলেন, “ফার্মার্স কোম্পানির চাষিদের আমরা বিভিন্ন চাষে কারিগরি সহায়তা দিই। এ বার ওঁরা সরাসরি শপিং মলে সব্জি বিক্রি করতে পারবেন। তাতে চাষিরা লাভবান হবেন।” শপিং মলের স্টোর ম্যানেজার অসিত সেনাপতি বলেন, “আগে আমরা দু’টি সরবরাহকারী সংস্থার কাছে সব্জি নিতাম। এ বার সরাসরি চাষিদের কাছ থেকে কিনব। সব্জির গুণগত মান ভাল হবে। জুনের মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকেই চাষিদের কাছ থেকে সব্জি নেওয়া শুরু হবে।”

২০১৫ সালে নাকাশিপাড়া ব্লকে উদ্যানপালন বিভাগের সাহায্যে এক হাজার চাষি ‘নাকাশিপাড়া ফার্মার্স প্রোডিউসার কোম্পানি লিমিটেড’ গড়ে তোলেন। শুরুর মূলধন হিসেবে ওই এক হাজার ‘শেয়ারহোল্ডার’ প্রত্যেকে হাজার টাকা করে
অর্থাৎ মোট ১০ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করেন। এঁদের মধ্যে থেকে প্রতিনিধি স্থানীয় ১০ জনকে নিয়ে তৈরি করা
হয় বোর্ড অব ডিরেক্টরস। প্রায় পাঁচ হাজার বিঘা জমিতে মূলত সব্জি চাষ করেন তাঁরা। কোম্পানি মারফত তা বিক্রি হয়। কলকাতা, শিলিগুড়ির বাজারেও যায় তাঁদের উৎপাদন। সব্জি ছাড়াও বীজ, কীটনাশক, সার ও জারবেরা ফুল বিক্রি করে প্রথম দু’বছরে লাখ দুয়েক টাকা
লাভ হয়েছে।

কিন্তু এত দিন মূলত আড়তদার বা ফড়েদের মারফত তাঁরা সব্জি বা ফুল পাঠাচ্ছিলেন বাজারে। ফলে পুরো দাম পাচ্ছিলেন না। স্থানীয় দহকুল্লার চাষি প্রবীর বিশ্বাস বলছেন, “আমাদের সংস্থার মাধ্যমে শপিং মলে সরাসরি সব্জি বিক্রি করতে পারা বড় সুযোগ।” সংস্থার তরফে আনন্দ বিশ্বাস বলেন, “আড়তদারের মাধ্যমে সব্জি বিক্রি করলে একশো টাকা পিছু ১০ টাকা করে কমিশন দিতে হয়। তা ছাড়াও পরিবহণের জন্য খরচ লাগে। ফলে চাষিদের লাভ কম হয়।” শপিং মলে সব্জি পৌঁছে দিতেও অবশ্য গাড়ি ভাড়া লাগবে। তবে সংস্থাই চাষিদের কাছ থেকে সব্জি সংগ্রহ করে মলে পৌঁছে দেবে। লাভ বেশি হওয়ায় সেই খরচ পুষিয়েও যাবে।

শপিং মল সূত্রে জানানো হয়েছে, শুধু কৃষ্ণনগর নয়, ভবিষ্যতে আরও ২০টি শাখার জন্য এই ভাবেই সব্জি নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন