সাপের ছোবলে মৃত্যু বাবা-মেয়ের

প্রতিদিনের মতোই বাবার সঙ্গে ঘুমোতে গিয়ে ছিল তিন বছরের বর্ষা। ঘুমের মধ্যেই সর্প দংশনে মৃত্যু হল বাবা হিরণ্ময় বৈরাগ্য (৩০) এবং মেয়ে বর্ষা বৈরাগ্য (৩), দু’জনেরই। শনিবার বিশ্বকর্মা পুজোর রাতে নবদ্বীপের ফকিরডাঙ্গা ঘোলাপাড়া পঞ্চায়েতের ঘটনা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নবদ্বীপ শেষ আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০০:১৭
Share:

প্রতিদিনের মতোই বাবার সঙ্গে ঘুমোতে গিয়ে ছিল তিন বছরের বর্ষা। ঘুমের মধ্যেই সর্প দংশনে মৃত্যু হল বাবা হিরণ্ময় বৈরাগ্য (৩০) এবং মেয়ে বর্ষা বৈরাগ্য (৩), দু’জনেরই। শনিবার বিশ্বকর্মা পুজোর রাতে নবদ্বীপের ফকিরডাঙ্গা ঘোলাপাড়া পঞ্চায়েতের ঘটনা।

Advertisement

ফকিরডাঙ্গা পঞ্চায়েতের খেয়াঘাট পাড়ার বাসিন্দা হিরণ্ময় বৈরাগ্য পেশায় তাঁতবস্ত্র ব্যবসায়ী। শনিবার রাতে অন্যান্য দিনের মতোই তিনি ঘুমোতে গিয়েছিলেন। গ্রামের এক দিকে মাঠের ধারে টিনের বাড়ি ছিল তার। জানা গিয়েছে শনিবার রাত বারোটা নাগাদ স্ত্রীকে ঘুম থেকে ডেকে তুলে তিনি জানান, তাঁর শরীর খুব খারাপ লাগছে। খুব জ্বালা করছে। স্ত্রীর ডাকে আশপাশের বাড়ি থেকে ছুটে আসেন গ্রামের মানুষ। প্রথমে তাঁরা ভেবেছিলেন, হাইপ্রেসারের রোগী হিরন্ময়বাবুর হয়তো রক্তচাপ বেড়েছে। কিন্তু পরে ব্যাপারটা টের পেয়ে রাতেই তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

বর্ধমান ঘেঁষা ফকিরডাঙ্গা থেকে অত রাতে তাঁকে কালনা হাসপাতাল নিয়ে যেতে সময় ঘণ্টা চারেক সময় লেগে যায়। কারণ বাড়ি থেকে এক কিমি দূরের খেয়াঘাটে রাতে কোনও নৌকা থাকে না। ভাই কিরণ বৈরাগ্য বলেন, ‘‘নৌকা থাকে উল্টো পাড়ে সমুদ্রগড় ঘাটে। সেখান থেকে মাঝিদের ডেকে নৌকার ব্যবস্থা করে সমুদ্রগড় গিয়ে, তার পর অ্যাম্বুল্যান্সে করে দাদাকে নিয়ে যখন কালনা হাসপাতালে পৌঁছাই, ততক্ষণে তিনি নেতিয়ে পড়েছেন। চিকিৎসা শুরুর কিছুক্ষণের মারা যান দাদা।’’

Advertisement

এ দিকে বাবাকে নিয়ে সকলে ব্যস্ত থাকায় একই বিছানায় ঘুমিয়ে থাকা ছোট্ট বর্ষার দিকে কেউ নজরই দেয়নি। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন মাঝরাতে সবাই যখন হিরণ্ময়বাবুকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার বন্দোবস্ত করতে ব্যস্ত, সে সময় বর্ষা তার ঠাকুমাকে বলেছিল বিছানায় সাপ। এর পর সে ফের ঘুমিয়ে পড়ে। ভোর পাঁচটা নাগাদ কালনা থেকে হিরণ্ময়বাবুর মৃত্যুর খবর আসার পরে বাড়িতে যখন প্রবল কান্নাকাটি চলছে, তখন খেয়াল হয় এত হইচই স্বত্তেও বর্ষা ঘুমোচ্ছে। ডাকাডাকি করতে গিয়ে দেখা যায় তিন বছরের একরত্তি মেয়ে নীল হয়ে গেছে, কোনও জ্ঞান নেই। ফের ঘাট পার হয়ে সমুদ্রগড় থেকে তাকে নবদ্বীপ হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন