যত গন্ডগোল মেডিক্যালে

কখনও নার্স কখনও চিকিৎসক— সরকারি হাসপাতালে নিগ্রহের তালিকা লম্বা হচ্ছিল ক্রমেই। সেই তালিকায় এ বার নয়া সংযোজন রোগীর পরিবারের মধ্যে হাতাহাতি। এবং ঘটনাস্থল সেই মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বহরমপুর শেষ আপডেট: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৩:৫০
Share:

যুযুধান: মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। —নিজস্ব চিত্র।

কখনও নার্স কখনও চিকিৎসক— সরকারি হাসপাতালে নিগ্রহের তালিকা লম্বা হচ্ছিল ক্রমেই। সেই তালিকায় এ বার নয়া সংযোজন রোগীর পরিবারের মধ্যে হাতাহাতি। এবং ঘটনাস্থল সেই মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল।

Advertisement

এর ফলে, সরকারি হাসপাতালের নিরাপত্তা নিয়েই প্রশ্ন উঠে গেল ফের। বৃহস্পতিবার এক শিক্ষক মৃত্যুর জেরে নার্স নিগ্রহের রেশ কাটতে না কাটতেই শনিবার সকালে শ্বশুরবাড়িতে জামাই এর অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘিরে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে দু’পক্ষের হাতাহাতি বেধে যায়।

এ দিন হাসপাতালে মারা যান তাপস ব্যাদ (২৭)। গন্ডগোলের সূত্রপাত তার পরেই। তার বাপের বাড়ি ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের মধ্যে মারপিট শুরু হয়। পুলিশ এসে দু’পক্ষকে হটিয়ে দিলেও তার উত্তেজনার রেশ চলতেই থাকে বেশ কিছুক্ষণ। বহরমপুর আখের মিল এলাকায় শ্বশুরবাড়িতে থাকতেন পেশায় টোটো চালক তাপস। কিন্তু শনিবার সকালে তাঁকে ঘুম থেকে ডাকতে গেলে শাশুড়ি মিনতি হালদার দেখেন না ওই যুবক। পাড়ার লোকজনকে ডাকাডাকি করে তাঁরই টোটোতে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকেরা জানান মারা গিয়েছেন ওই যুবক। ইতিমধ্যে তাপসের বাপের বাড়ির লোকজন বানজেটিয়া থেকে ছুটে আসেন। মৃতের দিদি সুখি ব্যাদ অভিযোগ করেন, ভাইকে শ্বশুরবাড়ির লোকজন শ্বাসরোধ করে খুন করেছে।

Advertisement

অন্য দিকে মৃতের শাশুড়ি মিনতি হালদার বলেন, ‘‘জামাই শুক্রবার রাতে ঘরে একাই ছিলেন। মেয়ে টুসি তার পিসির বাড়ি পলাশির প্রতাপনগরে গিয়েছিলেন, সে স্বামীর মৃত্যুর খবর পেয়ে সটান সেখান থেকে হাসপাতালে চলে আসে। এর মধ্য়ে খুনের প্রশ্ন আসছে কোথা থেকে।’’ তবে তাপসের সহকর্মী মনতোষ ঘোষ দাবি করেন তার বন্ধুকে বালিশ চাপা দিয়ে মেরে ফেলে এখন ওরা আত্মহত্যার নাটক করছে।

হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে দু’পক্ষের বচসা তুমুল মারপিটে গড়ায়। এরই মধ্যে মৃতের স্ত্রী ও শাশুড়িকে চুলের মুঠি ধরে পেটাতে থাকে তারা। পুলিশ ও হাসপাতালের রক্ষীরা দুপক্ষকেই হটিয়ে দেয়। শ্বশুরবাড়ির লোকজন হাসপাতালের বাথরুমে ছুটে গিয়ে আশ্রয় নেয়।

তাপস ও টুসি, ভাড়া বাড়িতে থাকত। তাদের একটি চার বছরের ছেলেও আছে। কিন্তু ধারদেনা হওয়ায় তাপস স্ত্রী ও ছেলেকে নিয়ে শ্বশুর বাড়িতে থাকতে শুরু করেছিল কিছু দিন ধরে। তাপসের বন্ধু ও দিদির দাবি, ওই যুবকের কানের কাছে রক্তের দাগ দেখা গিয়েছে। তবে চিকিৎসকেরা তেমন কিছু জানাননি। হাসপাতালের সুপার দেবদাস সাহা বলেন, ‘‘হাসপাতালে ওই যুবক মারা যায়নি, মৃত অবস্থায় আনা হয়েছিল। এর বেশি কিছু বলব না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন