দমকল: আগুন নেভাতে হাত লাগিয়েছেন কর্মীরা।— নিজস্ব চিত্র
আগুন লেগেছিল ভর দুপুরে। তবে, দমকলের ইঞ্জিন পৌঁছোনোর আগেই পুড়ে খাক হল বেথুয়াডহরির দু’টি পাটের গুদাম।
মঙ্গলবার দুপুরে কাঠালবেড়িয়া শিমুলতলা এলাকার ওই গুদাম দু’টিতে আগুন লাগার কারন অবশ্য স্পষ্ট নয় দমকলের কাছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, দমকলের ভরসায় বসে থাকলে আশপাশের বসতও পুড়ে ছাই হয়ে যেত। দমকল আসার আগেই তাই স্থানীয় বাসিন্দারা আগুন নেভাতে নেমে পড়ে ছিলেন। হাত লাগিয়ে ছিলেন নাকাশিপাড়া থানার পুলিশও।
ওই দু’টি গোডাউন মালিকের দাবি, এক ঘণ্টার আগুনে নিঃশেষ হয়ে গিয়েছে, তাঁদের সত্তর লক্ষ টাকার পাট।
এ দিন দুপুরে, ওই গোডাউনের টিনের চালায় ওয়েল্ডিংয়ের কাজ হচ্ছিল বলে জানাচ্ছেন আশপাশের বাসিন্দারা। তাঁরা মনে করছেন, আগুনের উৎস সেই ওয়েল্ডিং মেশিন থেকে ছিটকে আসা আগুনের ফুলকি। ফাল্গুনের হাওয়ায় শুকনো পাট দাউ দাউ করে জ্বলে উঠতে সময় লাগেনি।
তবে, গোডাউন মালিক অসীম নাগ তা মানতে নারাজ। তিনি বলছেন, “ওয়েলল্ডিংয়ের কোনও কাজই হয়নি গোডাউনে। আমাদের গোডাউনে বিদ্যুত সংযোগই নেই। ফলে সেখান থেকে আগুন লাগারও সম্ভাবনা নেই।’’
তাঁর দাবি, কর্মীদের বিড়ির আগুন থেকেই পুড়ে গিয়েছে গোডাউন দু’টি।
শিমুলতলায় বেথুয়াডহরি-পাটুলিঘাট রাস্তায় অসীম এবং উত্তম নাগ— দুই ভাইয়ের দু’টি পাটের গোডাউন। দু’টি গোডাউনে প্রায় পঁচিশ লরি পাট ছিল। এ দিন দুপুর দুপুরে টিনের ছাউনি দেওয়া একটি গোডাউন থেকে প্রথম ধোঁয়া বের হতে দেখেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তবে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার আগেই দ্বিতীয় গোডাউনেও আগুন ছড়িয়ে পড়ে।
আগুন লাগার পর এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। গোডাউন লাগোয়া বাড়িঘর থেকে বাসিন্দারা নিজেরাই রান্নার গ্যাস সিলিন্ডার বাইরে বের করে নিরাপদ দূরত্ব রেখে আসেন।
বেথুয়াডহরিতে অন্তত পঁচিশটি পাটের গোডাউন আছে। কিন্তু এই সব পাটের গোডাউনে আগুন লাগলে নেভানোর কোনও ব্যবস্থা নেই।
এই দু’টি গোডাউনে পাম্প ছিল। ছিল দু’টি টিউবওয়েল’ও। তবে আগুন ছড়িয়ে পড়ায় সেগুলি বিশেষ কাজে আসেনি।
বেথুয়াডহরি ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি হরিদাস দে’র নিজেরও পাটের ব্যবসা আছে। তিনি জানাচ্ছেন, “পাটের গোডাউন গুলিতে বড় ধরনের আগুন লাগলে নেভানোর ব্যবস্থা নেই। বেথুয়াডহরিতে দমকল কেন্দ্রের নির্মাণ কাজ চলছে। কবে হবে জানি না।’’