চলছে জেলা লিগের খেলা। —ফাইল চিত্র।
দেরিতে হলেও নিজেদের প্রতিভা বিকাশের সুযোগ পাচ্ছেন মুর্শিদাবাদের খেলোয়াড়রা।
জেলা লিগে বহিরাগতদের দাপাদাপি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে মুর্শিদাবাদ জেলা ক্রীড়া সংস্থা। এ বিষয়ে আইএফএ আগে তাদের নির্দেশ দিয়েছিল। লিগের মান ও ক্লাবগুলির কর্তাদের সঙ্গে আলোচনা গত বছর পর্যন্ত বহিরাগতদের খেলতে দেওয়া হয়। এ বছর তা পুরোপুরি বন্ধ বলে ক্রীড়া সংস্থা সূত্রে জানানো হয়েছে। তার বদলে জেলার খেলোয়াড়রাই খেলবে।
এত দিন মহকুমা লিগে ভাল খেললেও জেলা লিগে ঠাঁই পেতেন না উঠতি খেলোয়াড়রা। সম্ভবনা থাকলেও প্রতিভা বিকাশের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হতেন। কারণ, কলকাতা, দুই ২৪ পরগনা, নদিয়া, বর্ধমান, হুগলি ছাড়াও বিভিন্ন জেলার খেলোয়াড়েরা পয়সার বিনিময়ে খেলে যেতেন। বড় দলগুলি জেলার খেলোয়াড়দের দিকে ফিরেও তাকাত না। এ বার বহিরাগতদের আসা বন্ধ হওয়ায় ক্লাবগুলি প্রায় ঝাঁপিয়ে পড়েছে ঘরের খেলোয়াড়দের উপরে।
জেলা ক্রীড়া সংস্থার ফুটবল সম্পাদক অমিয় ঘোষ বলেন, ‘‘এই সিদ্ধান্তটা আরও আগে নিলে জেলার ছেলেদের জন্য ভাল হত। এ বছরই অনেক নতুন প্রতিভার খোঁজ মিলেছে। তা না হলে হয়তো ওরা কোনও দিনও সুযোগ পেত না জেলা লিগে। আর আমরাও দেখতে পেতাম না ওদের।’’
জেলা ক্রীড়া সংস্থার সম্পাদক তরুণ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সকলে মিলে এ বছর থেকে জেলার বাইরের খেলোয়াড়দের না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কারণ, এতে জেলার খেলোয়াড়েরা বঞ্চিত হচ্ছিলেন। ক্লাবগুলির খরচের বহরও বাড়ছিল দিন দিন। তা ছাড়া বহিরাগত হওয়ায় খেলোয়াড়দের অপরাধ করেও পার পেয়ে যাচ্ছিলেন। তাঁদের শাস্তি দেওয়া নিয়েও সমস্যা হচ্ছিল।’’
একই সুর ক্লাবকর্তাদেরও। শহরের অভ্যুদয় সঙ্ঘের কর্তা প্রভাতকুমার সাহা বলেন, ‘‘লিগে এক একটি ভাড়াটে খেলোয়াড়ের পিছনে দুই থেকে আড়াই লক্ষ টাকা ব্যয় করতাম। কেউ কেউ এক একটি খেলায় ২০০০ থেকে ৩০০০ টাকা নিয়ে যেতেন। এখন থেকে ঘরের খেলোয়াড়রা যেমন খেলার সুযোগ পাবে, তেমনি অর্থও পাবে।’’
শহরের আরও এক ক্লাবকর্তা শেখর রায় বলেন, ‘‘আগেও জেলা লিগে জেলার ছেলেরা খেলত। বছর চারেক ধরে বহিরাগত খেলোয়াড়দের নেওয়ার সিদ্ধান্ত সকলে মিলেই নিয়েছিলাম। কিন্তু টাকাটা ওদের দেওয়ার সময় মনে হত এটা যদি জেলার খেলোয়াড়রা পেত ভাল হত। সেই সুযোগ পেয়ে ভাল লাগছে।’’
এ দিকে, নিজেদের মেলে ধরার সুযোগ পেয়ে উচ্ছ্বসিত ডোমকলের খেলোয়াড় হাসিবুল ইসলাম বাবু। তিনি বলেন, ‘‘মহকুমা লিগে ভাল খেলেও জেলা লিগে জায়গা পেতাম না। এখন থেকে সেই সুযোগটা পাব। নিজেদের মেলে ধরার এই সুযোগ কাজে লাগানোর চেষ্টা করব।’’
একই রকম উচ্ছ্বসিত গিয়াসুদ্দিন, বিশ্বজিত গনাই, অর্ক দত্ত, সুরজ মুর্মু, আকাশের মত নতুন প্রজন্মের খেলোয়াড়েরা। ইতিমধ্যেই তাঁরা কর্তাদের নজর কেড়েছে।