মাঝে ভৈরব, নদীর এ পারে বাড়ি আমার বাড়ি। আর ওদের (মৃত আত্মীয়ের) ও পারে। ফলে দেহ ঘরে ফেরার খবরটা পেয়ে আড়াই বছরের ছেলে নাসিফকে কোলে নিয়ে বিকেলে আমাদের ঘাটে নৌকা পেরিয়ে গিয়েছিলাম সেই আত্মীয়ের বাড়ি। সন্ধ্যা নামতে দেহ দেখে ফিরে আসছিলাম বাড়ির পথে। কিছুক্ষণ ঘাটে অপেক্ষা করার পরেই নৌকাটা পেলাম। কিন্তু তখন তাতে পা ফেলার উপায় নেই। হুড়মুড়িয়ে লোকেরা উঠছে। বাচ্চা কোলে দেখে কয়েক জন সাহায্য করল বলে নৌকাটায় উঠতে পেরেছিলাম। ভিড়ে ঠাসা নৌকায় ছেলেকে জাপটে ধরে দাড়িয়ে আছি। কেউ কেউ বলছে এত লোক নিলে নৌকা ডুবে যাবে। ফলে ভয় করছিল। কিন্তু মাঝিরা কোনও চিন্তা নেই বলেই খুলে দিল দড়িটা, ‘চুপ করে বসে পড়, ছাড়লেই পৌছে যাব ও পারে’, বলেই ছাড়ল নৌকা। নৌকার তলায় বাঁশ দিয়ে জলের দিকে ঠেলে দিল জনা তিনেক। সেই ধাক্কা আর বার কয়েক জলে লগি মারার ফলে পাড় থেকে হাত কয়েক গিয়েছি। হঠাৎ একটা গুড়গুড় করে শব্দ, সঙ্গে মানুষের কান্না। কিছু বুঝে ওঠার আগেই জল ছুয়েছে পা। একটু একটু করে তলিয়ে যাচ্ছি। একটা সময় মনে হল আর মনে হয় ঘরে ফেরা হবে না। ছেলের মুখের দিকে তাকিয়ে উপরে এক বার তাকালাম !আল্লা’ বলে।