কেটলিতে ফুটছে চা, নদী ঢেকেছে দোকান

পুরনো শহর, আনাচ কানাচে তার লুকিয়ে আছে অজস্র অসুবিধা। তারই খোঁজ নিল আনন্দবাজার নদী পাড়ের ফুটপাথ বরাবর সকাল-সন্ধ্যা স্থানীয় বাসিন্দাদের ভিড়। একটু খোলা হাওয়ার খোঁজে ঘিঞ্জি শহরের দূরের পাড়া থেকেও আসেন অনেকে। অনেকের সাত সকালের স্বাস্থ্য-পায়চারির পথ। সে সব এখন অতীত।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বহরমপুর শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০১৯ ০০:২৬
Share:

বিজ্ঞাপনে নয়, ভাগীরথীর মুখ ঢেকেছে দোকান ঘরে। নদীর পাড় জবরদখল করে গড়ে উঠেছে দোকানঘর। অজস্র-অগুন্তি। গাছের ছায়ায় পুরসভার পক্ষ থেকে গড়ে দেওয়া হয়েছিল কংক্রিটের ঢালাই করা বেঞ্চ। সে সব এখন দোকানের দখলে। ফুটপাথ চুরি গিয়েছে তারও আগে। দোকানের বাড়তি সামগ্রী রাখার জায়গা এখন নদী পাড়ের প্রশস্থ ফুটপাথ। শুধু তাই নয়, দখলদারির তালিকায় রয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয় থেকে শুরু করে ছোট-মেজ ক্লাব ঘর।

Advertisement

নদী পাড়ের ফুটপাথ বরাবর সকাল-সন্ধ্যা স্থানীয় বাসিন্দাদের ভিড়। একটু খোলা হাওয়ার খোঁজে ঘিঞ্জি শহরের দূরের পাড়া থেকেও আসেন অনেকে। অনেকের সাত সকালের স্বাস্থ্য-পায়চারির পথ। সে সব এখন অতীত। শহরের প্রবীণ মানুষদের অনেকের অভিযোগ, ‘‘নদী-পাড়ে হাঁটা চলা কবেই উঠে গেছে। ঢালাই করা কিছু বেঞ্চ ছিল। সে সবও দখল হয়ে গেছে।’’

২০০০ সালের নজিরবিহীন বন্যার সময় ভাগীরথীর পাড় উপচে নদীর জল ঢুকেছিল বহরমপুর শহরে। তারই পুনরাবৃত্তি আটকাতে নদীপাড় বরাবর শহরের কুমার হস্টেল থেকে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের নিচে ওভার ব্রিজ পর্যন্ত প্রায় আড়াই কিলোমিটার দীর্ঘ পাড় জুড়ে ইট-সিমেন্টের বাঁধ দেওয়া হয়েছিল। ফুট তিনেক উঁচু ও পাঁচ-সাত ফুট চওড়া বাঁধের উপর কংক্রিট ঢালাই ফুটপাথ তৈরি করা হয়েছে। প্রাক্তন পুরপ্রধান নীলরতন আঢ্য বলেন, ‘‘কংক্রিট ঢালাই বেঞ্চ করে দেওয়ার জন্য সাধারণ মানুষ, বিশেষত বয়স্ক মানুষেরা অনেক দিন ধরে দাবি করেছিলেন। বছর দেডেকের মধ্যে নদীপাড়ে আরও বেশ কিছু ওই রকম বেঞ্চ তৈরি করা হয়েছিল। সব দখল হয়ে গেছে।’’ কিন্তু তা গেছে তো নীলরতনবাবুর আমলেই? সে ব্যাপারে কোনও স্পষ্ট উত্তর অবশ্য তাঁর কাছে মেলেনি। তবে একটা গয়ংগচ্ছ আশ্বাস অবশ্য দিয়ে রাখছেন— ‘‘এ বার আমরা দলগত ভাবে বেঞ্চ তৈরির কথা ভাবছি।’’

Advertisement

দখলদারির প্রশ্নে নির্বিকার তাকার পরে বিপন্ন বহরমপুরে তা কি এখন নিছক প্রায়শ্চিত্ত!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন