প্রকাশ্য স্থানে ধূমপান করলে শাস্তিহিসাবে জরিমানা নেওয়ার আইন রয়েছে। কিন্তু অভিযোগ, আইন রয়েছে আইনের মতো। যত্রতত্র সিগারেট খাওয়া চললেও তার জন্য জরিমানা হয়েছে বলে শোনা যায় না কোথাও। এ বারে সেই আইন কড়া ভাবে বলবৎ করার ব্যবস্থা নিচ্ছে মুর্শিদাবাদ জেলার স্বাস্থ্য বিভাগের কর্তারা।
জেলা পুলিশ ও প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়ে সোমবার থেকে জেলাজুড়ে অভিযান শুরু হচ্ছে। প্রকাশ্যে কাউকে ধূমপান করতে দেখলে তখনই জরিমানা করা হবে। নদিয়াতেও এ ব্যাপারে সচেতনতা অভিযান চলছে। সেখানেও কিছুদিনের মধ্যে জরিমানার ব্যাপারে কড়াকড়ি শুরু হবে।
ক্যানসারের অন্যতম প্রধান কারণ ধূমপান। দেশে প্রতি ঘন্টায় দু’ জনের মৃত্যু হয় ধূমপান ও তামাক সেবনের কারণে। প্রতি বছর ভারতে ৮ লক্ষ মানুষ প্রতিদিন ভারতে প্রায় ২২০০ মানুষ তামাকজাতীয় দ্রব্য সেবন করে মারা যান। ধোঁয়াযুক্ত তামাক জাতীয় দ্রব্য হল বিড়ি, সিগারেট, হুক্কা, চুরুট। বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমে বহু বিজ্ঞাপন সত্ত্বেও অনেকেই এখনও ধূমপান ছাড়ার ব্যাপারে আগ্রহী নন, এবং রাস্তাঘাটে তাঁদের সিগারেট থেকে আশপাশের মানুষ ‘প্যাসিভ স্মোকার’ বা পরোক্ষ ধূমপায়ী হন। এতে তাঁদের সমপরিমান শারীরিক ক্ষতি হয়।
মুর্শিদাবাদের মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক নিরুপম বিশ্বাস বলেন, “গত এক বছর ধরে জেলার মানুষকে নানা ভাবে সচেতন করা হয়েছে। এ বারে জরিমানার পথে নামা হচ্ছে। স্কুল-কলেজ, বিভিন্ন সরকারি অফিসে জরিমানার জন্য বিল, ভাউচার পাঠানো হচ্ছে। প্রকাশ্যে ধূমপান করতে দেখলেই জরিমানা করার জন্য নোটিশও পাঠানো হচ্ছে।’’
ভারতের তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের ৪ নম্বর ধারায় বলা আছে, প্রকাশ্য স্থানে ধূমপান নিষিদ্ধ। আইন না-মানলে ২০০ টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা হতে পারে। আইনের ৫ নম্বর ধারায় বলা আছে, সিগারেট ও অন্যান্য তামাক জাতীয় দ্রব্যের বিজ্ঞাপন নিষিদ্ধ। এর জন্য শাস্তি হল ২-৫ বছর পর্যন্ত জেল এবং ১০০০-৫০০০ পর্যন্ত জরিমানা। ৬ নম্বর ধারায় বলা আছে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ১০০ গজ ব্যাসার্ধের মধ্যে সিগারেট ও তামাক জাতীয় দ্রব্যের বেচাকেনা নিষিদ্ধ। এই নিয়ম ভাঙলে ২০০ টাকা পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে।
জেলা স্বাস্থ্যদফতর সূত্রের জানা গিয়েছে, মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজকে ধূমপান বর্জন সহায়ক কেন্দ্র খোলা হয়েছে। প্রতি সপ্তাহে মঙ্গলবার ও বৃহস্পতিবার এই কেন্দ্র খোলা নিখরচায়, পরিচয় গোপন রেখে এখানে ধূমপানে আসক্তদের নেশা বর্জনের সাহায্যের কাজ করা হয়।