যাত্রী ‘তাড়ান’ স্টেশন মাস্টার

সেজেগুজে পড়ে আছে ফুটব্রিজ, কিন্তু সে পথ মাড়ায় কে, লাইন পেরিয়ে প্ল্যাটর্ফম টপকেই তাই নিরন্তর চলাচল, খোঁজ নিল আনন্দবাজার জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রেললাইন টপকানোর বদলে ফুটব্রিজ দিয়ে পারাপারের জন্য এত বার করে মাইকে ঘোষণা করা হলেও যাত্রীদের অভ্যাস বদলানো যাচ্ছে না। তাই থ্রু ট্রেন যাবে শুনলেই আগে লাইন থেকে লোক সরাই

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বহরমপুর শেষ আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০১৮ ০৬:০৪
Share:

পারাপার এ ভাবেই। কৃষ্ণপুরে। নিজস্ব চিত্র

দিন তিনেক আগের কথা। লালগোলার কৃষ্ণপুর স্টেশনে হাজারদুয়ারি এক্সপ্রেস ঢুকছে। ঢুকছে মানে, রেলের সূচি অনুসারে কৃষ্ণপুরে স্টেশনে না থেমে এক্সপ্রেস ট্রেনটি সোজা বেরিয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু স্টেশেনে ঢোকার মুখে এক্সপ্রেসের চালকে ট্রেনের গতি কমিয়ে দিতে হয়েছিল। কারণ, স্টেশন ম্যানেজার নন্দকিশোর সরকার সহকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে রেললাইনের উপর থেকে ছাগল তাডানোর মতো করে তখন যাত্রীদের তাড়িয়ে দিচ্ছেলেন। না করলে সে দিনই দশেরার রাতে অমৃতসরের পুনরাবৃত্তি ঘটত।

Advertisement

নন্দকিশোরের আক্ষেপ, ‘‘এটা তো নিত্যদিনের ঘটনা। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রেললাইন টপকানোর বদলে ফুটব্রিজ দিয়ে পারাপারের জন্য এত বার করে মাইকে ঘোষণা করা হলেও যাত্রীদের অভ্যাস বদলানো যাচ্ছে না। তাই থ্রু ট্রেন যাবে শুনলেই আগে লাইন থেকে লোক সরাই।’’

এই স্টেশনে প্রতিটি ট্রেন থেকে ওঠানামা করা ৭-৮শো যাত্রীর মধ্যে মাত্র ২০ শতাংশ যাত্রী ফুটব্রিজ ব্যবহার করে। বাকি ৮০ ভাগই বেআইনি ভাবে রেললইন টপকে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করে। রেলের এমনই দাবি। তার ফলে প্রতিদিন নন্দকিশোরদের মতো রেলকর্মীদের টেনশন বেড়েই চলেছে।

Advertisement

‘বহরমপুর প্রগ্রেসিভ রেলওয়ে প্যাসেঞ্জার অ্যাসোসিয়েশন’-এর সভানেত্রী সোনালি গুপ্ত পেশায় হাইস্কুল শিক্ষক। তাঁকে প্রতি দিনই কৃষ্ণপুর স্টেশন পারাপার করতে হয়। তিনি কিন্তু বেআইনি ভাবে যাত্রীদের রেললাইন টপকানোর জন্য রেলকেই দায়ি করেন। বছর দেড়েক আগে ওই শাখায় বৈদ্যুতিক লাইন চালু হওয়ার আগে কৃষ্ণপুর স্টেশনের এক নম্বর প্ল্যাটফর্মে আপ-ডাউন ট্রেন থামত। তার ফলে স্টেশনের একে বারে উত্তরপ্রান্তের সীমানা বরাবর নির্মাণ করা ফুটব্রিজ ব্যাবহারের বিশেষ প্রয়োজন পড়ত না। সোনালির মতে, ‘‘বাস্তবসম্মত ভাবে প্ল্যাটফর্ম আর ফুটব্রিজ গড়ে তোলা হয়নি। সে জন্যই যাত্রীরা ফুটব্রিজের বদলে লাইন টপকে পারাপার করেন।’’

স্টেশন ম্যানেজারের বক্তব্য, ‘‘তিনটি প্ল্যাটফর্ম তবে, একটিই ফুটব্রিজ। ফুটব্রিজের তিন নম্বর তার জন্য কিছু সমস্য়।া হয়ত আছে। তবে যাত্রীরা যদি সচেতন না হয় তা হলে রেল কি করবে!’’ পূর্বরেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক রবি মহাপাত্র বলেন, ‘‘যাত্রী সংখ্যার বিচার করে কোথায় কতটা ফুটব্রিজের প্রয়োজন তার সমীক্ষা শুরু হয়েছে। সেই সমীক্ষা রিপোর্ট পাওয়ার ফুটব্রিজের বিষয়ে পদক্ষেপ করা হবে। তা ছাড়াও আরপিএফকে স্টেশনে নজরদারি বাড়াতে বলা হয়েছে।’’ কৃষ্ণপুর স্টেশনে আরপিএফ কি ভাবে নজরদারি বাড়াবে? স্টেশন ম্যানেজার বলেন, ‘‘এখানে আরপিএফ রয়েছে মাত্র একজন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন