দোল যেন পুষ্যি আতঙ্কের না হয়, আবেদন

 শুধু সোশ্যাল মিডিয়া নয়। এ নিয়ে সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে পথে নেমেছে বিভিন্ন পশুপ্রেমী সংস্থা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বহরমপুর শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০১৯ ০২:০৬
Share:

প্রতীকী চিত্র।

একটা ছোট্ট কুকুর ছানা মায়ালু চোখে তাতিয়ে বসে আছে। তার নিচে ক্যাপশন—‘প্লিজ, রং দেবেন না।’ দোলের আগে এমন একটা ছবি সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে ছেয়ে গিয়েছে। বিভিন্ন গ্রুপে ঘুরে বেড়াছে কুকুর-ছানার সেই আবেদন।

Advertisement

শুধু সোশ্যাল মিডিয়া নয়। এ নিয়ে সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে পথে নেমেছে বিভিন্ন পশুপ্রেমী সংস্থা। দোলের দিন নিজেরা আনন্দ করুন, কিন্তু নিরীহ রাস্তার কুকুরদের গায়ে রং দিয়ে অত্যাচার করবেন না—বার্তা নিয়ে মুর্শিদাবাদ জেলার বাসিন্দাদের সচেতন করছে ‘অ্যানিমালস অ্যান্ড রেসকিউ ট্রাস্ট’ নামে এক সংস্থা।

গত রবিবার থেকে বহরমপুর, বেলডাঙা, ও লালবাগের বিভিন্ন এলাকায় তারা যেমন পোস্টার-হোর্ডিং দিয়েছে, তেমনি পথচারি থেকে এলাকার সাধারণ মানুষকে এ ব্যাপারে সচেতন করেছেন সংস্থার সদস্যরা। সংস্থার কর্ণধার মেঘা মেহরার বলছেন, ‘‘দোলে কুকুর-সহ বিভিন্ন পশুর গায়ে রং ছুড়ে উল্লাসে মেতে ওঠেন একশ্রেণির মানুশ। কিন্তু রঙে রাসায়নিক পদার্থ থাকায় তাদের খুব কষ্ট হয়।’’ তাঁর দাবি, এ বিষয়ে আমরা মুর্শিদাবাদ ও কোচবিহারের বাসিন্দাদের সচেতন করেছি। বিভিন্ন বাজারে গিয়ে রং বিক্রেতা থেকে পথচারিদের সচেতন করতে লিফলেট, চকোলেট, মিষ্টি বিলি করা হয়েছে। আশা করছি সাধারণ মানুষ পথ-কুকুরদের গায়ে রং দেওয়া থেকে বিরত থাকবেন।

Advertisement

সম্প্রতি কলকাতায় নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নার্সিং-হস্টেল চত্বরে ১৬টি কুকুর-ছানাকে পিটিয়ে মারার ঘটনায় সরব হন পশুপ্রেমীরা। সেই তারা এখন দোলের দিন পথ-কুকুর থেকে বিভিন্ন পশুর গায়ে রং ছুড়ে দিয়ে সোল্লাসে মাতবেন কি না, তা নিজেদের কাছে প্রমাণ করারও। দোল আসছে, ফের কুকুর অত্যাচারিত হতে পারে। তাই পশুপ্রেমীরা এখন থেকে বাসিন্দাদের সচেতন করতে পথে নেমেছেন।

জেলা প্রাণী সম্পদ বিকাশ দফতরের দাবি, তাঁরা বিভিন্ন সময়ে সচেতনতামূলক কর্মসূচি নেন। সেই কর্মসূচিতে তাঁরা পশুদের উপর অত্যাচার বন্ধ করার আবেদন করেন। হোলির সময় রং না দেওয়ার কথাও বলা হয়। মুর্শিদাবাদের প্রাণী সম্পদ বিকাশ দফতরের উপ অধিকর্তা তারাশঙ্কর পান বলেন, ‘‘হোলির রঙে নানা রকম রাসায়নিক পদার্থ থাকে। কুকুরসহ অন্য পশুর গায়ে রং দিলে তারা সেই রং তুলতে পারে না। তা থেকে শরীরে চুলকানি হতে পারে। তাই পশুদের শরীরের রং না দেওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।’’

মুর্শিদাবাদ-জিয়াগঞ্জ ব্লক প্রাণী স্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রাণী চিকিৎসক সমীর মজুমদার বলেন, ‘‘কুকুর তো মানুষের মতো স্নান করে হোলির রঙ তুলতে পারে না। রং শরীরে পড়ার পর চুলকানি শুরু হয়। তখন কুকুর চেটে সেই রং তুলতে যায়। যার ফলে রঙের সাথে থাকা রাসায়নিক পদার্থও কুকুর পেটে চলে যায়। তাই পশুদের রং দিয়ে নির্যাতন করবেন না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন