স্ত্রীকে গুলি করে খুন করে নাটক ফাঁদেন স্বামী। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
বছর তিনেক আগে দ্বিতীয় বিয়ে করেছিলেন। কিন্তু সম্প্রতি তাঁর সঙ্গে বনিবনা হচ্ছিল না। দাম্পত্য কলহের জেরে শ্বশুরবাড়ি গিয়ে স্ত্রীকে গুলি করে খুনের অভিযোগ উঠল নদিয়ার যুবকের বিরুদ্ধে। ইতিমধ্যে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, মৃতার নাম মইলা দফাদার। বয়স ৩৮ বছর। বছর তিনেক আগে তিন বছরের ছোট হায়দর দফাদারের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। হায়দরের এটি দ্বিতীয় বিয়ে। সম্প্রতি দম্পতির প্রায়শই ঝগড়াঝাঁটি হত বলে জানা যাচ্ছে।
শুক্রবার রাতে নাকাশিপাড়ার কালীবাস এলাকায় মইলার বাপের বাড়িতে গুলি চলার শব্দ পাওয়া যায়। কিছু ক্ষণ বাদে জামাই হায়দরের কান্না শুনে ঘরে ছুটে যান বাড়ির সদস্যেরা। হায়দর জানান, শ্যালকের ঘরে স্ত্রীর সঙ্গে গল্প করছিলেন। হঠাৎ জানলা দিয়ে কেউ গুলি করে পালিয়েছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। কিন্তু হায়দরের কথাবার্তায় সন্দেহ হয় পুলিশের। অবশেষে তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
শ্বশুরবাড়ির লোকজন বলছেন, যে ঘরে মইলা এবং হায়দর থাকতেন রাতে সেই ঘরে না-থেকে পাশের ঘরে ছিলেন দু’জন। ওই ঘরটিতে থাকেন হায়দরের শ্যালক। রাতে ওই ঘর থেকে গুলির শব্দ আসে। তার পর শোনা যায় হায়দরের কান্নার শব্দ। শ্বশুরবাড়ির লোকজনকে কাঁদতে কাঁদতে যুবক বলেন, ‘‘কেউ গুলি করে দিয়ে চলে গেল।’’ রক্তাক্ত অবস্থায় মইলাকে উদ্ধার করে বেথুয়াডহরি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
প্রাথমিক তদন্তে নেমে অভিযুক্ত হায়দরের ‘নাটক’ ধরে ফেলে পুলিশ। তাঁর কাছ থেকে আগ্নেয়াস্ত্রও পাওয়া যায়। জানা যাচ্ছে, প্রাক্তন স্ত্রীর সঙ্গে আবার যোগাযোগ তৈরি হয়েছে হায়দরের। এ নিয়ে বর্তমান স্ত্রীর সঙ্গে তাঁর ঝগড়া শুরু হয়। প্রথমে বাইরে থেকে গুলি ছোড়ার গল্প শোনালেও শেষমেশ পুলিশের কাছে হায়দর খুনের কথা কবুল করেন। পুলিশ সূত্রে খবর, কয়েক মাস আগে হায়দর জেল থেকে ছাড়া পেয়েছিলেন। তাঁর নামে কম করে ছ’টি মামলা রয়েছে। তার মধ্যে খুন এবং ধর্ষণের মতো গুরুতর অভিযোগও রয়েছে। হায়দরের শ্বশুরবাড়ির দাবি, স্বামীর এই কার্যকলাপের কথা জানতেন মইলা। এই সমস্ত ঘটনা জানার পর থেকে হায়দরের সঙ্গে তাঁর দূরত্ব তৈরি হয়েছিল। সেই রোষেও মইলাকে খুন করে থাকতে পারেন হায়দর।
কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) উত্তম ঘোষ বলেন, ‘‘আমাদের কাছে খবর আসে, ওই সময় (গুলি চলার সময়) হায়দরের হাতেই বন্দুক ছিল। উনি গল্প ফেঁদে নাটক করেছিলেন। পরে পুলিশের কাছে খুনের বিষয়টি কবুল করেছেন।’’