সমশেরগঞ্জ

মহিলা খুনে গ্রেফতার স্বামী

সমশেরগঞ্জে মহিলা খুনের ঘটনায় শেষ পর্যন্ত গ্রেফতার করা হল তাঁর স্বামীকেই। রবিবার রাতে সমশেরগঞ্জ থানার বাবুপুর গ্রামে নিজের বাড়িতে খুন হন সাবিনা ইয়াসমিন (৪৩) নামে এক মহিলা। গলার নলি কাটা অবস্থায় তাঁর দেহ উদ্ধার হয়েছিল। প্রথম থেকেই পুলিশের সন্দেহ ছিল, এই ঘটনায় মহিলার অতি পরিচিত কেউ জড়িত।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০১৬ ০৩:৩০
Share:

সমশেরগঞ্জে মহিলা খুনের ঘটনায় শেষ পর্যন্ত গ্রেফতার করা হল তাঁর স্বামীকেই।

Advertisement

রবিবার রাতে সমশেরগঞ্জ থানার বাবুপুর গ্রামে নিজের বাড়িতে খুন হন সাবিনা ইয়াসমিন (৪৩) নামে এক মহিলা। গলার নলি কাটা অবস্থায় তাঁর দেহ উদ্ধার হয়েছিল। প্রথম থেকেই পুলিশের সন্দেহ ছিল, এই ঘটনায় মহিলার অতি পরিচিত কেউ জড়িত।

গত দু’দিন থেকে স্বামীকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের পর স্ত্রীকে খুনের পিছনে স্বামী হারুণ রসিদের হাত রয়েছে বলে নিশ্চিত হয় সমশেরগঞ্জ থানার পুলিশ। তার পরেই বৃহস্পতিবার রাতে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

Advertisement

শুক্রবার ধৃত স্বামী হারুণ রসিদকে জঙ্গিপুর মহকুমা আদালতে হাজির করা হলে বিচারক তাকে ১০ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন। এই খুনের ঘটনায় আরও অনেকেই যুক্ত ছিল। তারা কারা, কী উদ্দেশ্যেই বা তাঁকে খুন করা হল? তা জানার জন্য ধৃতকে আরও জেরার প্রয়োজন বলে পুলিশ আদালতে জানিয়েছিল। এমনকী, যে অস্ত্র দিয়ে সাবিনাকে খুন করা হয়েছিল, সেই অস্ত্র উদ্ধারের জন্যও হারুণকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা দরকার।

পুলিশ জানিয়েছে, বড় রাস্তার পাশে ওই বাড়ির গ্রিলের দরজা সব সময় তালাবন্ধ থাকে। তালা না খুলে বাড়ির ভিতরে ঢোকা যায় না। আশেপাশেও অনেকেগুলি বাড়ি রয়েছে। অথচ প্রতিবেশীরা কিচ্ছুটি টের পাননি। সন্ধ্যায় বাড়িতে ঢুকে মহিলাকে কী ভাবে খুন করা হল, তা ভেবে প্রথমে তাজ্জব হয়ে গিয়েছিল পুলিশও।

পুলিশ জানিয়েছে, বাড়িতে কোনও লুঠপাটের ঘটনা ঘটেনি। অথচ, মৃতার স্বামী হারুণ রসিদ ঘরের আলমারি থেকে তার ৫০ হাজার টাকা খোয়া গিয়েছে বলে ডাকাতির ঘটনা বলে চালাতে চেয়েছিল। কিন্তু, প্রতিবেশীরাই তা মানতে রাজি হন নি। গত কয়েকদিন ধরে পুলিশের টানা জেরাতেও স্ত্রীর খুন নিয়ে লেশমাত্র অনুশোচনাও প্রকাশ করতে দেখা যায় নি তাকে।

পুলিশি তদন্তে উঠে এসেছে, শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ছ’টা নাগাদ বাড়ি থেকে বছর ১২ বছরের মেয়েকে নিয়ে মোটর বাইকে করে বের হয় হারুণ। পাড়াতেই বোনের বাড়িতে পৌঁছে দেয় মেয়েকে। তার পরে বারকয়েক বাইক নিয়ে বাড়ির পাশের পিচ সড়ক ধরে যাতায়াত করে সে। আড়াই ঘণ্টা পরে ফের মেয়েকে নিয়ে বাড়ি ফেরে রাত ৯টা নাগাদ। মেয়েই প্রথম দেখে, গ্রিলের দরজা খোলা, রান্নাঘরে পড়ে রয়েছে মায়ের রক্তাত্ত দেহ।

পুলিশের সন্দেহ, এই যাতায়াতের পথেই লোকজন নিয়ে ফের বাড়িতে ঢুকেছিল হারুন। স্বামীকে দেখেই দরজার তালা খুলে দিয়েছেন স্ত্রী। খুনের আগে দুষ্কৃতীদের সঙ্গে সাবিনার রীতিমত ধস্তাধস্তি হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। তাঁর এক হাতে এক গোছা চুল পাওয়া গিয়েছে। যা আততায়ীদেরই বলে অনুমান পুলিশের।

সাবিনার ভাই রফিকুল বলেন, “আমরা বিভ্রান্ত। পুলিশ তদন্ত করে যদি জামাইবাবুকে গ্রেফতার করে থাকে, তাহলে আমার কি বলার থাকতে পারে। আমি চাই দোষীদের কঠোর সাজা হোক।” হারুণ রসিদের দাবি, পুলিশ তাকে ফাঁসাচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement