প্রণব মুখোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র
যেখান থেকে দিল্লি গিয়েছিলেন তিনি, জঙ্গিপুরের সেই দেউলি গ্রামে ছড়ানো বাগানের কোণে শখ করে ঘর তুলেছেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়। বহু দিন পরে সে বাড়িতে দিন কয়েক কাটাবেন বলে সোমবার রাতে জঙ্গিপুর এসেছেন তিনি। ইচ্ছে ছিল, বাড়ির লাগোয়া সদর ঘাটে একটু পায়চারি করবেন। কিন্তু বড়দিনের পিকনিকের ভিড় সে গুড়ে বালি ঢালল।
জঙ্গিপুর এলাকায় সদ্য সেজে উঠেছে সবুজ দ্বীপ। পিকনিকের ভিড়ে এ দিন সেখানে যাওয়াই দুষ্কর। লোকজন তো বটেই সঙ্গে অগুন্তি গাড়ির ভিড়। সবুজ দ্বীপ লাগোয়া সদরঘাটে প্রণববাবুর সান্ধ্য ভ্রমণ তাই নিরাপত্তার কারণে বাতিল করে দিল নিরাপত্তাকর্মীরা।
তবে, ভিড় কম থাকলে, আজ সেখানে তাঁকে নিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সিকিউরিটি অফিসার। সোমবার সন্ধ্যেয় প্রণববাবু রঘুনাথগঞ্জে আসেন। চার দিনের সফর, থাকবেন দৈউলি গ্রামে তাঁর নিজের বাড়িতেই। মঙ্গলবার দুপুরে রবীন্দ্র ভবনে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে সেখান থেকেই শহরের প্রাণ কেন্দ্র সদরঘাটে ভাগীরথীর তীরে যাবেন বৈকালিক ভ্রমণে, এমনটাই ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন তিনি। সেই মতো ভাগীরথীরঘাট-সহ এলাকাটি পরিস্কারও করে জঙ্গিপুর পুরসভা। জঙ্গিপুরের পুরপ্রধান মোজাহারুল ইসলাম বলেন, ‘‘প্রণববাবু যাবেন বলে সদরঘাট সকাল থেকেই সাফ সুতরো করা হয়েছিল। যদি সবুজ দ্বীপে যেতে চান, তার ব্যবস্থাও করা হয়েছিল। কিন্তু বড়দিনে পিকনিকের যা বিড়, নিরাপত্তার কারণেই বাতিল করতে হল সব।’’
২০০৪ এবং ২০০৯ সালে দু’দুবার জঙ্গিপুর থেকে সাংসদ নির্বাচিত হওয়ার পর কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হয়েছিলেন প্রণববাবু। পরে রাষ্ট্রপতি হওয়ার পরে তাঁর পুত্র অভিজিৎ ওই কেন্দ্র থেকেই সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন। প্রণববাবু শহরে থাকলেও সদরঘাটে কখনও আসেননি। এ দিন প্রণববাবু বলেন, “আমি এখন রাজনীতির লোক নই। আমি সাংসদ হিসেবে শেষ রাজনৈতিক সফর করেছিলাম খড়গ্রামে। রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর সে রাজনৈতিক পরিচয় শেষ হয়ে গিয়েছে। কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আর আমার কোনও সম্পর্ক নেই। কিন্তু মানুষ যেমন অতীতকে ভুলতে পারে না, তেমনই আমি আমার জঙ্গিপুরের রাজনৈতিক শেকড়কে কখনও ভুলতে পারব না।”