মোবাইলের সূত্রেই উদ্ধার হল কিশোরী

রবিবার মধ্যরাতে বাঁকুড়া জেলার সোনামুখীর তিলুড়ি গ্রাম থেকে উদ্ধার করা হয় নবদ্বীপের সতেরো বছরের ওই ছাত্রীকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নবদ্বীপ শেষ আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০১৯ ০২:১৭
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

ফোনের সিম কার্ড বদলেও শেষ রক্ষা হল না। মোবাইল সেটের ‘আইএমইআই’ নম্বরের সূত্র ধরে নিখোঁজ হওয়ার এক মাস পরে দ্বাদশ শ্রেণির এক পড়ুয়াকে উদ্ধার করল নবদ্বীপ থানার পুলিশ।

Advertisement

রবিবার মধ্যরাতে বাঁকুড়া জেলার সোনামুখীর তিলুড়ি গ্রাম থেকে উদ্ধার করা হয় নবদ্বীপের সতেরো বছরের ওই ছাত্রীকে।

পুলিশ ও ছাত্রীর পরিবার সূত্রের খবর, গত ১৪ ডিসেম্বর নবদ্বীপ তমালতলার বাসিন্দা ওই কিশোরীর বাবা পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। তিনি জানান, তাঁর মেয়েকে কাটোয়ার পানুহাটের বাসিন্দা প্রশান্ত চট্টোপাধ্যায় নামে এক যুবক তুলে নিয়ে গিয়েছে। ওই যুবকের বিরুদ্ধে পুলিশ নাবালিকা অপহরণের মামলা রুজু করে। শুরু হয় তদন্ত।

Advertisement

কাটোয়ার পানুহাটে ওই কিশোরীর এক আত্মীয়ের বাড়ির পাশেই প্রশান্তদের বাড়ি। সেখানে যাতায়াতের সূত্রে কয়েক মাস আগে প্রশান্তর সঙ্গে ওই কিশোরীর আলাপ হয়। পরবর্তী সময়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁদের যোগাযোগ তৈরি হয় এবং পরিচয় ক্রমশ প্রেমে পরিণত হয়।

এর পর গত ১৩ ডিসেম্বর পড়তে যাওয়ার নাম করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আর ফেরেনি ওই কিশোরী।

পরদিন তাঁর বাবা নবদ্বীপ থানায় প্রশান্ত চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে অপহরণের মামলা রুজু করেন। নবদ্বীপ ছাড়ার পরই ওই কিশোরী তার মোবাইল নম্বর বদলে ফেলে। ফলে পুলিশের কাজ কঠিন হয়ে যায়।

কিন্তু হাল না ছেড়ে পুলিশ ওই কিশোরীর মোবাইল সেটের আইএমইআই নম্বরের হদিশ পায়। এর পর সেই নম্বরের সূত্র ধরে শুরু হয় খোঁজখবর। শেষমেশ ফোনের সূত্রেই পুলিশ জানতে পারে, ওই নাবালিকা আছে বাঁকুড়ার সোনামুখী অঞ্চলের প্রত্যন্ত গ্রাম তিলুরিতে, অভিযুক্ত যুবকের মামার বাড়িতে।

এর পর আর দেরি করেননি মামলার তদন্তকারী অফিসার পরেশচন্দ্র দাস। রবিবার দুপুরে পুলিশের একটি দল বাঁকুড়ার উদ্দেশ্যে রওনা হয়। রাতেই তাঁরা পৌঁছে যান সোনামুখীর তিলুড়ি গ্রামে।

প্রশান্তর মামা দিলীপ দেবনাথের বাড়িতেই সন্ধান মেলে কিশোরীর। যদিও খোঁজ মেলেনি বাড়ির মালিক দিলীপবাবু কিংবা অভিযুক্ত প্রশান্ত চট্টোপাধ্যায়ের। পুলিশ জানতে পেরেছে, তাঁরা দু’জনেই এখন কাজের জন্য কেরলে আছেন।

সোমবার সকালে ওই নাবালিকাকে নিয়ে নবদ্বীপে ফিরে আসেন পুলিশকর্মীরা। ওই দিনই গোপন জবানবন্দি দেওয়ার জন্য তাকে নবদ্বীপ আদালতে হাজির করানো হয়। পরে আদালতের কাছে আবেদন জানিয়ে ওই কিশোরীকে তার বাবা বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যান।

বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলতে চাননি প্রশান্তর বাড়ির লোক।

ছেলের খবর জানতে চাওয়া হলে প্রশান্তের মা মঞ্জু চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আমি এ সবের কিছুই জানি না। আমার ছেলে মাসখানেক আগে অন্য রাজ্যে কাজে গিয়েছে, আমি শুধু এইটুকুই জানি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন