সভা-মিছিলে গরহাজির অজয়
TMC

অরিন্দম গেলেও কোন্দল অব্যাহত

বছর চারেক ধরেই শান্তিপুরে তৃণমূলের সংগঠন আড়াআড়ি দুই ভাগে বিভক্ত। এক দিকে অরিন্দম, অন্য দিকে অজয়।

Advertisement

সম্রাট চন্দ

শান্তিপুর শেষ আপডেট: ২৫ জানুয়ারি ২০২১ ০৬:৩৬
Share:

তৃণমূলের যুব যাত্রা। শনিবার শান্তিপুের। নিজস্ব চিত্র।

বিধায়কের দলত্যাগের পর তৃণমূলের প্রথম কর্মসূচিতেও বিভাজনের ছায়া এড়াতে পারল না তৃণমূল। শক্তি প্রদশর্নের মিছিলে দেখা গেল না বিধায়ক-বিরোধী শিবিরের প্রধান নেতা অজয় দে বা বিধায়ক-ঘনিষ্ঠ যুব সভাপতি প্রেমাংশু নন্দীকে। গোষ্ঠী কোন্দলের চোরাস্রোত যে এখনও বহমান সেটাই কার্যত
স্পষ্ট হল।

Advertisement

বাম-কংগ্রেস জোটের প্রার্থী হিসাবে জেতা অরিন্দম ভট্টাচার্য মেয়াদ শেষের আগেই তৃণমূল ছুঁয়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। এর পরে নিজেদের সাংগঠনিক শক্তির পরীক্ষা দেওয়া একটা চ্যালেঞ্জ ছিল শান্তিপুরের তৃণমূলের কাছে। জেলার দুই মন্ত্রী ও একাধিক প্রথম সারির নেতাকে সামনে রেখে সেই পরীক্ষায় উতরোতে চেয়েছিল তৃণমূল। রবিবার শান্তিপুরের দলীয় দফতর থেকে পদযাত্রা হয়। পরে স্টেশনের কাছে একটি সভাও হয়। সভায় দলত্যাগীদের উদ্দেশ্যে কড়া বার্তা দেন মন্ত্রী রত্না ঘোষ,উজ্জ্বল বিশ্বাসেরা।

কিন্তু সেই সভায় দেখা গেল না খোদ পুর প্রশাসক অজয় দে-কেই। যুব সংগঠনের ব্যানারে এই কর্মসূচি, ছিলেন রানাঘাট এবং কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলার যুব সভাপতিরা। কিন্তু শহর তৃণমূল যুব সভাপতি প্রেমাংশু নন্দী গরহাজির। বছর চারেক ধরেই শান্তিপুরে তৃণমূলের সংগঠন আড়াআড়ি দুই ভাগে বিভক্ত। এক দিকে অরিন্দম, অন্য দিকে অজয়। সম্প্রতি দলের সাংগঠনিক রদবদলে শান্তিপুর শহরের কর্তৃত্ব অরিন্দম শিবিরের হাতেই এসেছে। দলের সভাপতি অরবিন্দ মৈত্র এবং যুবর সভাপতি প্রেমাংশু নন্দী দু’জনেই অরিন্দম ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত।

Advertisement

এ দিনের সভায় সক্রিয় ভূমিকায় ছিলেন অরবিন্দ। ছিলেন বিধায়ক ঘনিষ্ঠ এবং অজয় বিরোধী বলে পরিচিত কুমারেশ চক্রবর্তীও। তবে প্রেমাংশুর না থাকা নিয়ে সঙ্গত ভাবেই প্রশ্ন উঠছে। শান্তিপুর শহর তৃণমূলের সভাপতি অরবিন্দ মৈত্রের বক্তব্য, “প্রেমাংশু বিধায়কের সঙ্গে রয়েছে। সেই কারণে ওকে দলের কর্মসূচিতে আসতে বারণ করা হয়েছে।” তবে প্রেমাংশুর দাবি, “পারিবারিক কারণে শান্তিপুরের বাইরে আছি। আর আমি দলের সঙ্গেই আছি। সেটা দলকেও জানিয়েছি।” ও দিকে, অজয় এলেন না কেন, সেই প্রশ্নও এড়ানো যাচ্ছে না।

এ দিন সভায় এসে অরিন্দমকে নিশানা করে রত্না ঘোষ বলেন, “ও রকম দু’চার জন চলে গেলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের কোনও ক্ষতি হয়না। ... আপনাদের মত ধান্দাবাজ দু’চারটে মানুষ চলে গেলেও কর্মীরা কিন্তু তৃণমূলের সঙ্গেই আছেন।” আর এক মন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস আবার অরিন্দমের পাশাপাশি অজয় দে-কেও কটাক্ষ করতে ছাড়েননি। অরিন্দম প্রসঙ্গে তাঁর কটাক্ষ, “সুন্দর লাল টুকটুকে চেহারা। আকৃষ্ট করে ভোটটা নিয়েছিল। ভোটের পরে তাঁর চেহারা বোঝা গিয়েছে। ... এখন শান্তিপুরে ক্ষমতা নেই ঢোকার।” তার পরেই নিজের ছাত্র পরিষদ পর্বের কথা তুলে তিনি দাবি করেন, “শান্তিপুর কলেজে একদিন ছাত্র পরিষের কর্মীরা মার খাচ্ছিল এসএফআইয়ের হাতে। সে দিন কুমারেশ, অরবিন্দকে সঙ্গে নিয়ে লড়াই করেছি। সে দিন অজয় আসেনি, কেউই আসেনি। সবাই বাড়িতে
বসে ঘুমোচ্ছিল।”

পরে অজয় দে বলেন, “শান্তিপুরের বাইরে থেকে লোক এনে দলবাজি করতে এসেছিলেন মন্ত্রী। সেখানে যাওয়া প্রয়োজন বলেমনে করিনি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন